ভার্সিটির ক্লাস থাকায় সকালে উঠতে হয় নিয়মিত। গত সেমিস্টারের প্যারা এই সেমিস্টারেও কোনটিনিও , অল ক্রেডিট গোস টু অওয়ার অ্যাডভাইজিং সিস্টেম।
যাইহোক প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে মায়ের কাছে পরবর্তী দিনের শিডিউল পেশ করি। এই কাজ শেষে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এমন বৃষ্টির দিনে সাতসকালে আমার ঘুম ভাঙে না সহজে। তবুও মায়ের ডাকে সকালে ঘুম ভাঙে। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সকাল সাতটা বাজে। ক্লাস শুরু দশটায় আর উঠলাম তিন ঘন্টা আগে। পুরাই স্পীকার হয়ে গেলাম বারান্দায় । এত সুন্দর বৃষ্টি ভেজা সকালের শীতল বাতাস দীর্ঘদিন পর গায়ে মাখলাম।প্রকৃতির এই সৌন্দর্যের সাথে আলিঙ্গন মায়ের একটু ভুলের জন্যই হল। তাই অহেতুক বিরক্তি প্রকাশ না করে খেতে বসলাম ফ্রেশ হয়ে। খাওয়া শেষে রেডি হয়ে ভাড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে ।
তখন বাজে সকাল আটটা বিভিষীকাময় এক অবস্থা। না পাচ্ছি বাস না পাচ্ছি রিকশা । এদিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির তখন তীব্র মাত্রা। এই দুরাবস্থায় মাথার উপর খুলে দিলাম ছাতা। বাসা থেকে ভার্সিটির দূরত্ব বাসের হিসেবে পাচঁ টাকা। অফিস টাইমে বাসের জন্য অপেক্ষা করে দিনটা কাদায় ভরাতে চাই না। তাই রিকশাতে করেই ভার্সিটির উদ্দেশে শুরু করলাম যাত্রা। বৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা তখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে খ্যাত খ্যাতে কাদায়।
ভার্সিটিতে প্রবেশ করে ওয়াই-ফাই জোনে গিয়ে চেক করলাম গো ওয়েদার। একটু আশ্বস্ত হলাম যাক দুপুর বারোটার পর আকাশে দেখা যাবে সূর্যের আলো। টানা তিন ঘন্টা ব্যাক টু ব্যাক ক্লাস শেষে আমি তখন জ্যান্ত মূর্দা। সঙ্গহীন সেই সময় পাশে পেলাম ফ্যাশন সচেতন এক সুন্দরী বন্ধু । ঘন্টার পর ঘন্টার আড্ডা শেষে হাটছিলাম ফুটপাতে। আমাদের নানা ক্রাশের ক্যাচাল নিয়ে প্যাচাল পেরে পাড় হচ্ছিলাম পিচ্ছিল রাস্তা। কর্দমাক্ত রাস্তায় পাশের সুন্দরীর উচু হীল তখন আটকে গেছে । নানা চেষ্টায় বিব্রতকর অবস্থা থেকে রক্ষা করলাম।
দিনশেষে একটা কথাই সত্যি " বাসার ভিতর বৃষ্টিস্নাত দিনে প্রকৃতি বড়ই সুন্দর আর বাসার বাইরে বড়ই নিষ্ঠুর।" প্যারাময় ক্যাদায় ফেসবুকের কিউটি পাই এর এই এখন উপলব্ধি।