অধিকার ফিরিয়ে নেবার পর কি দরকার আর এক দিনের জন্য অধিকার দেবার । শনি থেকে বৃহস্পতি পাচদিন কর্মহীন ব্যস্ত দিন শেষে এই শুক্রবারই স্বস্তি মেলে অবসরে ঘড়ির কাটা গুণে। সে যাইহোক অন্তত এই দিন কাকডাকা ভোরে আমার চোখ খুলবে না এতটুকু তুমি জানো । বেলা করে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই ভীরূ মনে ধীরু পায়ে যাই রান্না ঘরে। মায়ের হাতের রান্না করা খিচুরীর ঘ্রাণে চটজলদি মুখ ধুয়ে বসে পড়ি খাবার টেবিলে। পেট ভরে খাওয়া শেষে মায়ের বকা শুনে অবশেষে খাবার থালাটি ধুতেই হয়।
তারপর বারান্দায় আধ-শুকনা কাপড় গুলো ছড়িয়ে এক কোণে বসে পড়ি গ্যাস লাইট হাতে নিয়ে। ধূম্রশলাকা শেষ হওয়ার আগেই মায়ের হুট করে এসে যাওয়া আর যথারীতি অপ্রস্তুত হয়ে যাওয়া এতো প্রতি সপ্তাহের নিয়মিত ঘটনা। যাইহোক, বয়সের সাথে সাথে মায়ের ঘ্রাণ শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবুও এই পচা গন্ধের কাছে মা আমার অসহায়। বারান্দার দরজাটি ঠাস করে লাগিয়ে দিয়েই হয়তো মা জানাবে তার নীরব প্রতিবাদ।
ল্যাপটপে পুরনো মাউস লাগিয়ে অহেতুক ঘোরাঘুরি করতেই জুম্মার আযান দিয়ে দিল। তারপর বাবার আদেশ সুসন্তানের মতন পালন করতে দশ মিনিটের জন্য প্রকৃতির উদ্দেশ্যে যাত্রা দেই। তারপর মসজিদে যাই জুম্মার নামাজ পড়তে। ১ম তলার শেষ কাতারে বসে নিবিড় মনে শুনি ইমাম সাহেবের বয়ান। সারা সপ্তাহে এটাই ভালো কাজের একমাত্র সাক্ষী । নামাজ শেষে পুরনো বাড়ির সামনে দাড়িয়ে থাকি নীরবে কিছুক্ষণ। তারপর বাসার উদ্দেশ্যে হাটতে থাকি আর রোদের মাঝে ভেজা আবেগ বাতাসে উড়িয়ে দিই। তারপর বাসায় এসেই মায়ের হাকডাকে ব্যস্ত হয়ে পড়ব। দুপুরে খাব গরম ভাত আর মাংস ভুনা।
খাওয়া শেষে গতকালের খবর পড়ার জন্যে একদিন অপেক্ষা করে পড়ি পত্রিকার জন্যে। পত্রিকা পড়া শেষে বিকেলের আগমনে ঘুমিয়ে পড়ি। রাতের নিকোষ আলোয় বাইরে যাই বাল্য বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। ভালোবাসা দিবসে আজকের ভালোবাসা এদের জন্যই বরাদ্দ থাকে আজকাল।