শিশু যৌন নির্যাতন শুনে অধিকাংশ বাংলাদেশী অবাক হয়ে যায়!!
সিরিয়াল কিলার পেডোফাইল -
গ্রামান্চলের ঘটনা। একটি বিশেষ গ্রাম ও তার আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে এক অদ্ভুত নৃশংস ঘটনা ঘটছে। ঘুমন্ত শিশুদের রাতের আঁধারে ঘর থেকে কেউ কিডন্যাপ করছে, কোন কোন ক্ষেত্রে মা বাবা দুজনের মাঝে ঘুমিয়ে থাকা শিশুকে ভোরে আর খুঁজে পাওয়া যায়না, অনেক খোঁজাখুঁজির কিছুদিন পর নির্যাতিত, নিপীড়িত শিশুর রক্তাক্ত মৃত দেহ মিলছে গ্রামের কোন ঝোপ ঝাড় বা ডোবা নালায়।
নিয়মিত ভাবে এমন নৃশংস ঘটনা একের পর এক ঘটছে, হত্যাকারী ধর্ষক কে কেউ জানছে না!
প্রায় ২-৩ ডজন এধরনের বিকৃত যৌননির্যাতন ও হত্যার পর অনেকে লক্ষ্য করে সকল ঘটনার কমন ফ্যাক্টর একজন অতি জনপ্রিয় অমায়িক মিশুক যুবক। অধিকাংশ হত্যাকান্ডের দুতিন দিন আগে সে ভিকটিমের বাসায় গিয়েছে, তাদের বাবা মায়েদের সাথে বসে সুখ দুঃখের গল্প করেছে এমনকি শিশু নিখোঁজ হবার পর খুঁজতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে সে। শুধু তাই নয়, প্রায় সব গুলো মৃত দেহ সেই (?)খুঁজে বের করেছে!!
বিকৃত মানসিকতার অধিকারি সেই নরপশু ৩-৪ মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৪/৫ বছরের শিশুদের যৌন নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দেহটি ডোবা নালা ঝোপঝাড়ে ফেলে আসতো। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার ছিলো হত্যাকারী বন্ধু ও সহানুভূতিশীল সেজে ভিকটিমের মা বাবার সাথে শিশুকে খোঁজার নাম করে একসময় তাদের যথাস্থান পৌঁছে দিতো।
ঘটনা পড়ে অনেকের হয়তো বিশ্বাস হবেনা, এটা আমাদের দেশেরই ঘটনা। এই ব্লগে জেনেছিলাম ৬/৭ বছর আগে, দেশের দক্ষিন পূর্বান্চল... খুলনা যশোর এলাকায় এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে অথচ তেমন আলোড়ন সৃষ্টি হয়নি।
অধিকাংশ নিহত শিশু ছিলো হত দরিদ্র ঘরের সন্তান, অনেকের তেমন সুরক্ষিত বাড়ি দূরের কথা থাকার ঘর ছিলোনা, অন্য কারো বাড়ির দাওয়া বা উঠোনে মা বাবার সাথে ঘুমাতো। সেকারনে তার অপরাধ যেমন সহজ হয়ে যেতো তেমনই অপরাধের পর শাস্তি এড়িয়ে যাওয়া। সবচেয়ে দুঃখজনক ও আশংকার বিষয়, এই বিকৃত মানসিকতার নরপশু এলাকার ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার ভাতিজা, পরবর্তীতে তাই হয়তো এই মামলার কোন আপডেট জানা সম্ভব হয়নি।
শিশু যৌন নির্যাতনের সংক্ষিপ্ত চিত্র -
দুঃখজনক ভাবে আমাদের দেশের গণমাধ্যমে শিশু নির্যাতনের সংবাদ সহজে পৌঁছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় নির্যাতিত শিশু বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে জীবনের কোন একসময় হয়তো তা প্রকাশ করছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে করছেনা।
আমাদের সমাজ আর আইন প্রয়োগের ব্যর্থতা এই হতাশাজনক অবস্থার জন্য প্রধানত দায়ী। আর সেই সাথে আমাদের সমাজের "পাছে লোকে কিছু বলে"র ভয়ে পরিবার পরিজন ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে অপরাধীকে আরো বেশি বেপরোয়া হতে সাহায্য করে।
অনেক বাবা মা সন্তানের চেয়ে নির্যাতকের প্রতি অধিক আস্থা দেখিয়ে থাকে, ফলে নির্যাতিত শিশু কখনও সাহস করে বাবা মা কে জানালেও তা নিতান্তই শিশুমনের কল্পণা বা মিথ্যা হিসেবে অভিহিত হয়। সেক্ষেত্রে নির্যাতকের হিংস্রতা আর নির্যাতনের মাত্রা বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়ে যায়।
আবার অনেক সময় শিশু ভয়ে মা বাবাকে ঘটনাটি কখনও জানায়না। আর যদি বাবা মা জানতে পারেন, প্রায় সকল ক্ষেত্রে সামাজিক মর্যাদাহানীর ভয়ে তাঁরা ঘটনা গোপন করে যান ফলে অপরাধী আইনের দন্ডের ধরছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
শিশু নির্যাতনের ঘটনা শুধু আলোচনা নয়, বরং তা কিভাবে প্রতিহত করা যায় তা নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরী।
মনে রাখতে হবে শিশুদের সারল্য আর মা বাবার ঔদাসীন্য এসকল নরপশু পেডোফাইলদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।
শিশু যৌন নির্যাতক বা পেডোফাইল কে?-
যৌন নির্যাতক যে কেউ হতে পারে। দুঃখজনক হলেও সত্য সম্পূর্ণ অপরিচত ব্যক্তি থেকে পরম প্রিয় জন্মদাতা পিতা হতে পারে, আবার অনেক ক্ষেত্রে বিকৃত মনা নারীরা এধরনের নির্যাতনের সহায়ক হয়।- যদিও পিতা এবং নারীর দ্বারা শিশু যৌননির্যাতনের ঘটনা আমাদের দেশে তুলনামূলক ভাবে কম।
অত্যন্ত অপ্রিয় সত্য যে যেকোন বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষ যারা শিশুদের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে সময় কাটানোর সুযোগ পায় তারা নির্যাতক হয়ে উঠতে পারে। আবার তেমন ভাবে এক স্থানে থাকছেনা অথচ কিছু সময়ের জন্য একান্ত ভাবে শিশুর সঙ্গ পাচ্ছে এমন অনেকে নরপশু হিসেবে আবির্ভূত হয়। যেমন, এক মা প্রতিদিনের দুপুরের ঘুম আর একটু বিশ্রাম নিতে সন্তানকে নীচের কম্পিউটার ট্রেনিং অফিসে ট্রেনিং নিতে পাঠাতো, সেই নরপশু নিয়মিত ভাবে শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করে যেতো আমাদের বাংলাদেশেই। গ্রামের এক পশুসম লজিং মাস্টার গৃহকর্তার আস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তাদের ৮/৯ বছরের পুত্রকে নিয়মিত ভাবে ধর্ষন করতো... উভয়ক্ষেত্রে তারা ভিকটিমদের বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছিলো যে তাদের মা বাবা পুত্রের চেয়ে ধর্ষককে বেশী বিশ্বাস করবে।
শুধু মাস্টার বা ট্রেইনার নয়, ড্রাইভার বা গৃহ ভৃত্যের দ্বারা নির্যাতিত হবার ঘটনা খুব আন কমন নয়। এক ভারতীয় যুবকের জবানবন্দী শুনেছিলাম, অত্যন্ত ধনাঢ্য আধুনিক পরিবারের বিলাসবহুল জীবন তাদের। ছেলেটি দেশের অত্যন্ত সন্মানিত ও কাঙ্খিত বোর্ডিং স্কুলে পড়ার সময় ছুটিতে বাসায় এলে ব্যস্ত মা বাবা অধিকাংশ সময় তাকে গৃহভৃত্যের কাছে রেখে বাইরে যেতো। নরপশু গৃহভৃত্য সেই সুযোগে নিয়মিত ভাবে এই অবোধ কিশোরকে ধর্ষন করেছে। বোর্ডিং স্কুল ছুটির সময় আর সব ছেলেরা যখন আনন্দে মেতে উঠতো, কিশোরটি মনে প্রাণে চাইতো ছুটি যেনো না হয়, তাকে যেনো বাড়িতে যেতে না হয়।
বাংলাদেশের এক কিশোরকে গ্রামের মা বাবা উচ্চ শিক্ষার জন্য শহরে ভাইয়ের কাছে পাঠিয়েছে। বেঁচে থাকার সংগ্রামে ব্যস্ত ভাই মেসে থাকে, সেখানে এক বিনয়ী রুমমেট কিশোরটিকে আপন করে নেয়, এমনকি রাতে নিজের বিছানায় নিজের পাশে ঘুমাতে দেয়। তারপরের ঘটনা সহজে অণুমেয়। বড়ভাই কৃতজ্ঞ হয় রুমমেটের সহযোগিতায় অথচ জানতে পারেনা তার পশুত্ব।
এরা শিয়ালের চেয়েও বেশি ধূর্ত হয়ে থাকে। মনে রাখা জরুরী অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুকাম বিকারগ্রস্থরা বাহ্যিক ভাবে অত্যন্ত অমায়িক, মিশুক ও বন্ধুত্বসুলভ হয়ে থাকে। তাদের চার্মিং পারসোনালিটি সহজেই শুধু শিশুকে নয় বরং মা বাবাকেও তাদের প্রতি আস্থা রাখতে সাহায্য করে। তবে চার্মিং পারসোনালিটির সকল পুরুষ পেডোফাইল বা শিশু ধর্ষক এমন মনে করার লারন নেই।
প্রতিহত করা যায় যেভাবে----
১. প্রতিটি মা বাবার উচিত নিয়মিত ভাবে সন্তানের কাছে তাদের প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা মনোযোগ দিয়ে শোনা।
২. শিশুদের কখনও কোন আত্মীয় বা অনাত্মীয় পুরুষের কাছে একা রেখে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে যাওয়া অনুচিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন বাবা মায়ের পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভব নয় যে তার নিজের ভাই, বাবা বা চাচা মামা এমন কাজ করতে পারে; অথচ নির্মম সত্য হলো শিশু নির্যাতনের বড় একটি অংশ ঘটে শিশুর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিজনের লালসায়।
৩. শিশুদের মাঝে এই আস্থা গড়ে উঠা জরুরী যে তারা তাদের সকল কথা মা বাবা, বিশেষ করে মা বা নানি, খালা ফুপুর সাথে শেয়ার করতে পারবে। একজন আস্থাভাজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু শিশু নির্যাতন রুখে দিতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে।
৪. মনে রাখা জরুরী, শিশুদের মনে হাজার কল্পণা খেলা করলেও যৌন বিকৃতি শিশুতোষ কল্পণা নয়, তাই কখনও এধরনের কোন ঘটনা এমনকি ইংগিত দিয়ে সন্তান কিছু জানালে তা সিরিয়াসলি নিয়ে প্রতিকার করা উচিৎ!
৫. দেশ জাতি নির্বিশেষে শুধু পেডোফাইল বা শিশু যৌন নির্যাতক নয়, যেকোন যৌন বিকারগ্রস্থ অপরাধীর বসচেয়ে বড় ক্ষমতা থাকে তারা ভিকটিম দের বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়, নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে কেউ বিশ্বাস করবেনা অথবা ভিকটিমের মা বাবা পরিবারকে সে হত্যা করবে। আর তাই মা বাবা, বিশেষ করে মায়ের উচিৎ সন্তানকে জানানো পৃথিবীর সকল কিছুর চেয়ে সে মায়ের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেকেই আছে। এটা জানলে, শিশুরা মা বাবাকে খোলাখুলি অনেক কিছু নির্দ্বিধায় জানাতে পারে।
৬. গোপনীয়তা রক্ষা অত্যন্ত জরুরী। কখনও কোন শিশু বিশ্বাস করে কোন ঘটনা, তা শুধু যৌন নির্যাতন নয় এমনকি মজার কোন ঘটনা জানালে তা নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা বা হাস্যরস করলে অনেক ক্ষেত্রে তা শিশুদের আস্থা নষ্ট করে। কোন মজার ঘটনা শেয়ার করতে চাইলে তা অনুমতি নিয়ে অথবা শিশুর আড়ালে আলোচনা করা যায়।
৭. প্রতিটি মায়ের উচিৎ সন্তান বয়ঃপ্রাপ্ত হবার আগে পর্যন্ত মাঝে মাঝে তার পোশাক পড়িয়ে দেয়া বা গোসল করানো, এতে সন্তানদের শরীরে কোন অস্বাভাবিক ক্ষত চিহ্ন বা ব্যথার স্থান সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়।
৮. বয়ঃপ্রাপ্ত বা পিউবারিটি মানেই সন্তান পেডোফাইল শকুনের থেকে নিরাপদ এমন নয়, আর তাই তাদের সাথে নিয়মিত ভাবে আলোচনা, প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা আন্তরিক ভাবে আলোচনা জরুরী। এধরনের আলোচনা শুধু শিশু যৌন নির্যাতন নয়, মাদকাসক্তি, অসৎ সঙ্গ আর বখে যাওয়া থেকেও সন্তানদের রক্ষা করতে পারে।
৯. শিশু নির্যাতন রুখে দিতে শিশুদের প্রস্তুত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তাদের ৪/৫ বছর বয়স থেকে কিছু বিশেষ ব্যাপারে অবগত ও সতর্ক করা জরুরী---
ক) আগন্তুকদের সাথে কথা না বলা বা তাদের সাথে কোথাও না যাওয়া। যেনো সর্বক্ষণ ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে না থাকে সেকারনে কোমলমতি শিশুদের জানানো জরুরী পৃথিবী অত্যন্ত সুন্দর স্থান, এখানে অধিকাংশ মানুষ ভালো। তবে এসব ভালো মানুষদের মাঝে গুটিকয়েক দুষ্ট লোক মিশে আছে বিধায় সাবধান হওয়া জরুরী।
খ) শিশুদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থান সম্পর্কে তাদের অবগত করা উচিৎ। শরীরের প্রাইভেট পার্ট বা স্পর্শকাতর স্থান( বুক, গোপনাঙ্গ, উরু, নিতম্ব) কেউ ছোঁয়ার অধিকার রাখেনা। কেউ কখনও এসব স্থানে তাদের স্পর্শ করলে তা অত্যন্ত আপত্তিকর এবং তা সাথে সাথে মাকে জানানো জরুরী।
গ) কোন ব্যক্তি তাদের জোড় করে কোলে নিলে বা প্রাইভেট পার্টে স্পর্শ করলে সাথে সাথে চিৎকার করে সাহায্য চাইতে হবে। জোড় করে কোলে নিতে চাইলে চিৎকার করার সাথে সাথে খামচি, কামড় দিয়ে হাত পা ছুঁড়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
ঘ) শিশুদের নিজের স্পর্শকাতর স্থানের সাথে সাথে নির্যাতকের স্পর্শকাতর স্থানটি সম্পর্কেও অবগত করা জরুরী। এমন অগুনিত উদাহরন আছে যেখানে পেডোফাইল শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করা বা জোড় করে তুলে নিতে চাইলে, শিশু তার সর্ব শক্তিদিয়ে পেডোফাইলের গোপনাঙ্গে সজোড়ে আঘাত করে আত্মরক্ষা করেছে।
ঙ) প্রতিটি শিশুকে জানিয়ে দেয়া জরুরী তাদের যেকোন সমস্যার কথা তারা তাদের বাবা মা, বিশেষ করে মাকে নির্দ্বিধায় জানাতে পারে এবং তাদের কথা তাঁরা বিশ্বাস করে।
১০. একজন যৌন নির্যাতকের আদর্শ ভিকটিম সেই শিশু যাদের মা বাবা সন্তানের ব্যাপারে উদাসীন। শিশু যৌন নির্যাতক সাধারনত সময় নিয়ে ভিকটিম নির্ধারন করে, সেসব ক্ষেত্রে তারা দেখে যেসব বাবা মায়েরা সন্তানদের তেমন সময় দেয়না, বাইরে বের হলে সন্তানের দিকে তেমন লক্ষ্য রাখেনা বা দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো সন্তানকে যার তার কাছে রেখে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে যায়, অথবা ঘরে থেকেও নিজেকে নিয়ে বা টিভি, আড্ডা নিয়ে ব্যস্ত থাকে তাদের সন্তানরা আদর্শ ভিকটিম। তাই সন্তানদের সময় দেয়া জরুরী, সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের মনোযোগ ভীষণ ভীযণ গুরুত্বপূর্ণ।
জীবন যুদ্ধের সংগ্রামে সন্তানের কাছ থেকে দূরে এমনকি প্রবাসে অবস্থান করেও সন্তানের সাথে নিয়মিত আন্তরিক আলাপের মাধ্যমে তাদের আস্থাভাজন হয়ে উঠা যায়।
শিশুরা অবোধ, তাই তারা প্রতিবাদ করতে জানেনা। ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে মিছিল মিটিং করে টকশোতে আলোচনার ঝড় তুলতে অক্ষম তাই তাদের অব্যক্ত কষ্টরা চার দেয়ালের মাঝে গুমড়ে কাঁদে। একজন শিশু যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠে তার জীবনে তখন হাজারও নতুন সমস্যা ভীড় করে, সেই ভীড়ের মাঝে শৈশবের অপমান আর নির্যাতন অসহায় ভাবে মুখ লুকিয়ে আড়াল হয়ে যায়, তাই আমরা নারী নির্যাতন, ইভ টিজিং নিয়ে হাজারও আন্দোলন দেখলেও শিশু নির্যাতনের বিরুরদ্ধে যেনো পিন পতন নিস্তব্ধতা!
শিশু যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে প্রতিটি মানুষের সচেতন হওয়া জরুরী। শুধু নিজের সন্তান নয়, আশেপাশে পরিচিত অপরিচিত যেকোন শিশুকে যৌন হয়রানির শিকার হতে দেখলে বা আশংকা করলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করুন। শিশু যৌন নির্যাতন সম্পর্কে যতো আলোচনা ও প্রচার ঘটবে নির্যাতক নপুংসকের পাল ততোটাই পিছু হটবে।
কখনও কারো মনে শিশুদের প্রতি কামবাসনা জাতীয় আকর্ষন সৃষ্টি হয়েছে জানলে তাকে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে নিয়ে যাওয়া ও তার ঘনিষ্ঠজনদের সচেতন করা জরুরী।
আমাদের দেশের গণ মাধ্যমগুলো এই বিষয়ে নিরব মানে এই নয় যে আমাদের দেশে এই নির্যাতন অস্তিত্বহীন। বিশ্বের আর সকল দেশের মতো আমাদের দেশেও মনোবিকৃতির এই নির্মম অন্ধকার রূপের ঘৃন্য চর্চা বিরাজমান।
আমাদের সকলের একটু সচেতনতা আর প্রচেষ্টা রুখে দিতে পারে এধরনের বিকৃত লালসার অধিকারী হায়নাদের।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৪