somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাগনভূঞায় আর্সেনিক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেই

২৩ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবদুল্লাহ আল-মামুন,
দাগনভূঞার ৮ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার ৪ লাখ মানুষ আর্সেনিকের ভয়াল থাবায় ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছে। নিরাপদ পানির ব্যবস্থা না থাকায় আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করছে উপজেলাবাসী। ফলে আর্সেনিক আক্রন্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস সূত্র জানায়, ১৪১.৭১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দাগনভূঞা উপজেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। এখানে মোট অগভীর নলকূপের সংখ্যা ২৪ হাজার ১শত৭৩টি। সরকারীভাবে স্থাপনকৃত অগভীর নলকূপের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫২টি ও গভীর নলকূপের সংখ্যা ৪শ৩৫টি। গভীর নলকূপের মধ্যে সহনীয় মাত্রায় আর্সেনিক থাকলেও অগভীর নলকূপের মধ্যে ৮০ভাগ নলকূপ মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক নিয়েই দৈনন্দিন জীবন যাপন করছে উপজেলাবাসি। পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০১১ সাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৩শ লোক আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়। ওয়াটার সাপ−াই প্রকল্পের আওতায় সহযোগী সংস্থা এমইউএস ও এনডিএসের জরিপে এখানে যে আর্সেনিকের যে মাত্রা পাওয়া গিয়েছে তা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বহুগুন বেশী। অসহনীয় আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের মাথায় লাল রং লাগিয়ে পানি পান নিষিদ্ধ করলেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তেমন লাভ হচ্ছেনা। এই উপজেলায় আর্সেনিকের ভয়াবহতা থাকার পরও সংশি−ষ্ট বিভাগের আর্সেনিক বিস্তার রোধে আজও কোন প্রশংসিত উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে জানা যায়।

বাধ্য হয়েই আর্সেনিক প্রভাবযুক্ত এলাকায়ও লাল রংয়ের নুলকূপের বিষাক্ত পানি পান করছে। ফলে দাগনভূঞায় আর্সেনিকের প্রভাব দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে উপজেলার আর্সেনিকের মাত্রা ০.১০ মি. গ্রা। উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের বাদামতলী সরকারি আবাসন প্রকল্পে ৮শ২৫ ফুট গভীর নলকূপ ৩টিতে এই মাত্রা ধরা পড়েছে। গভীর নলকূপ ছাড়াও আবাসন প্রকল্পে অগভীর নলকূপ রয়েছে ৬টি। তার মধ্যে ৩টিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক থাকায় লাল রং দেয়া হয়েছে। পানির প্রয়োজনীয়তায় বাধ্য হয়ে এখানকার ৬০টি পরিবারের বিভিন্ন বয়সের মানুষ বিপজ্জনক নলকূপের পানি পান করছে। একই ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামের ওলি উল্যাহর বাড়ীতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক শনাক্ত করা হয়েছিল। আর্সেনিকমুক্ত পানি না থাকায় এপানি পান করে একই পরিবারের ৪ জন আর্সেনিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। গৃহিনী সাফিয়া খাতুন ও তার মেয়েসহ ৪জন এরোগে আক্রান্ত হয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে খসখসে কালো দাগ দেখা দিলেও চিকিৎসা হচ্ছেনা। দূরের গ্রাম থেকে পানি এনে পান করার পরও রোগ সারছেনা বলে তারা জানান। মাতুভূঞা ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রামের একই বাড়ীতেই আর্সেনিক রোগী ধরা পড়েছে ১০ জন। ওই বাড়ীর আবুল হোসেনের স্ত্রী মাফিয়া আক্তার, তার মেয়ে বিবি মরিয়ম আর্সেনিকোসিস রোগে আক্রান্ত। একই বাড়ীর আবুল কাশেমের মেয়ে রিনা আক্তার, পেয়ার আহমদের স্ত্রী আলেয়া বেগমও এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস জানায়, ২০০৩ সালে আর্সেনিক রোগী শনাক্ত করা হয় ১শ জন। নতুন কোন পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। উপজেলার ১২৩টি গ্রামেই আর্সেনিক রোগীর সন্ধান মিলছে বলে একটি সূত্র জানায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডাঃ ছাইফ উদ্দিন জানান, আর্সেনিকোসিস রোগ প্রতিরোধে প্রতিরোধমূলক ও প্রতিষেধক ঔষধ আবিস্কৃত হয়নি। এডিবির আর্থিক সহায়তায় উপজেলা সংশি−ষ্ট বিভাগ হতে কিছু ঔষধের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে জনসচেতনতাই পারে এরোগ থেকে পরিত্রান দিতে। আর্সেনিকের ভয়াবহতা সম্পর্কে স্কুল, কলেজ, ইউনিয়ন পরিষদ, বাজার ও জনবহুল এলাকায় সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, পোষ্টার, লিফলেট ও মাইকিং করলে জনসচেতনা বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঢাকায় শান্তিতে বসবাসের জায়গাগুলো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৪৪






ঢাকায় শান্তিতে বসবাস করা যায় যেসব এলাকা: একটি বাস্তবভিত্তিক পর্যালোচনা

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী শহর, জনসংখ্যা ও যানজটের দিক থেকে অন্যতম ব্যস্ততম নগরী হলেও এখানকার কিছু কিছু এলাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হেজেমনি, কাউন্টার-হেজেমনি ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৪


একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে নিঃশব্দ অথচ গভীর যুদ্ধ চলে তার ইন্টেলেকচুয়াল সেক্টরে। গোলা-বারুদের বদলে এখানে অস্ত্র হয় কলম, টকশো, নাটক, পাঠ্যবই, এবং ইউটিউব। বাংলাদেশে এই হেজেমনি বহুদিন ছিল প্রথম আলো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে দলীয় সরকার কখনই জনগণের সরকার হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৫



সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করলেও আওয়ামী লীগ সেটা স্বীকার করলো না। সেজন্য তারা বাকশাল নামে একদলীয় শাসন শুরু করে ছিল। কিন্তু সেনা বিদ্রোহে তাদের বাকশালী শাসনের অবসান ঘটে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রস্থান-পথ কঠিন হয়ে গেছে মুহাম্মদ ইউনূসের

লিখেছেন কবির য়াহমদ্্, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ২:২৪



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের (৮ই আগস্ট ২০২৪ থেকে চলমান...) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা ছাড়ার পথ কঠিন হয়ে গেছে।

এমনিতেই তার পদ ছাড়ার প্রবল অনাগ্রহ, তার ওপর আছে ক্ষমতা গ্রহণের পরের মাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃষ্টি ঝরছে সারাদিন

লিখেছেন সামিয়া, ৩১ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৪



ইচ্ছা ছিল প্রথম আষাঢ়ে ছাদে যাবো
বৃষ্টি দেখতে,
যাওয়া হয় নাই।
বৃষ্টি তো আর ক্যালেন্ডার দেখে আসে না।
সে কখনো মাসের আগেভাগেই দরজায় কড়া নাড়ে,
আবার কখনো হুট করে হাওয়ায়
হালকা জলছবি আঁকে।

বৃষ্টি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×