... আর মিনিট পনের পড়েই, বাস ছেড়ে দিবে । আশেপাশের সবার মাঝেই একটা তাড়াহুড়ো দেখা দিল । একটা পুরানো লুঙ্গি ছেড়া দিয়ে, হেলপার ছেলেটা সামনের বড় গ্লাসটা মুছে দিল । পাশের দোকানে বসে চা খেতে খেতে ড্রাইভার হাক দিল -
- " ওই সোরহাব ! সবাই কি আইছে ? টাইম হয়ে গেল তো...। একটু দেখতো ? "
- " না ওস্তাদ, এখনো দুই সিট খালি ? "
ড্রাইভার বিড়বিড় করে কি যেন বলল । বোঝা গেল না । মানুষের সময় জ্ঞান নিয়ে কিছু একটা হবে হয়ত...। চার / পাঁচটা ফায়ার এস্টিংগুইসার গুছিয়ে নেয়া হয়েছে সবার আগে । এক ফাকে, বাসের সুপারভাইজার বাসে উঠেই বালুর বস্তা গুলো প্রত্যেকের সিটের নিচে রাখা আছে কিনা দেখে নিল । সব দেখে তার চোখে একটা প্রশান্তির দেখা দিল । ড্রাইভারের থেকে দুই সিট পিছনে, বাহারী ডিজাইন করা একটা ছোট বক্স থেকে একটা পান বের করে মুখে দিতে দিতে সাদা পাঞ্জাবী পরা এক বৃদ্ধ পাশের জনকে জিজ্ঞেস করল
- " মারা গেছে, আপনি কখন সংবাদ পেলেন ? "
- " এইতো চাউলের মোকাম বন্ধ করে ফিরছিলাম । পরে ছামাদের চায়ের দোকান এ বসে সংবাদটা প্রথম শুনি " বলল পাশের লোকটি ।
- " হ্যা, সেটাই গত এক বছর বেশ ভাল ছিল । হঠাত কি যে হল, কেউ কিছু বোঝার আগেই মারা গেল । বড় ভালো ছিল রে । আহা ! দুনিয়া ! কখন যে কি হয়ে যায়, কে জানে ? "
... তাদের কথা চলার ফাঁকেই, পিছনের সিট থেকে এক যুবক উঠে গিয়ে জানালার কাচ গুলো আটকে দিল । দুই একজন ব্যস্ত হয়ে গেল ফার্স্ট এইড বক্স গুলো ঠিকঠাক আছে কিনা দেখতে ।
: কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরেই ড্রাইভার বাস ছেড়ে দিল । বিবেকের মৃত্যু হয়েছে, গাড়ী যাচ্ছে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে । সেখানে বিবেকের জানাজা শেষে ; সবাই যার যার কাজে চলে যাবে । কেউই আর ভয় পাচ্ছে না , তারা নিজেরাই নিরাপত্তা নিয়ে নিয়েছে ।
পথে আন্দোলনের নামে কেউ গণতন্ত্র ছুড়ে মারতে পারে !!