১. কাল রাতে কিছু ইশ্বর ঘুরে বেড়াচ্ছিলো নগরীতে । ক্ষুধার্ত ইশ্বর, কামার্ত ইশ্বর, ঘরছাড়া ইশ্বর, তৃণমূল ইশ্বর, মাতাল ইশ্বর । ....... ক্রসফায়ারে নরকপ্রাপ্তির আগে, তারা আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে গেছে ।
২. সময় যায়, রূপ বদলায় । রূপকথা বদলায়। বাস্তবতা নিয়মিত মুখোশ সরবরাহ করে যায় আমার কুতসিত মুখ টা গ্রহণযোগ্য করে উপস্থাপনের জন্য। নতুন ধাচে, নতুন মুডে। সবাই একমত হলে আমি মনে মনে তৃপ্ত হই। মানুষগুলো কতো নেশাগ্রস্থ ।কাল আবার তোদের জন্য নতুন আফিম নিয়ে আসবো। টেরটিও পাবি না, তোদের আমি কিসে মোহগ্রস্থ করে রেখেছি ।
সব কিছু কেড়ে নেবার পর, তোরাই আমাকে তোদের নেতা বানাবি । তোরা চিরশোষিত, তাই আমি চির মহান। উদ্ধার কার্যে সিদ্ধহস্ত। তোদের দূর্দশা দেখে আমি মায়া মায়া পুলক অনুভব করি । জানি আমাকেই ডাকতে হবে । এই পশুটাকে ডাকতে হবে।পশু দিয়ে হবে পশুদের শ্রাদ্ধ ।
৩.জুনিয়র সিন্দাবাদের সাথে দেখা হয় মাঝে মাঝে । জাহাজ দূর্নিতীতে বাবা তো হাত পাকিয়েইছিলো , এখন পুত্র হয়েছে ডাঙার ডন । কোমড়ের ফাকে সেকেলে সুলেমানি তলোয়ার শোভা পায় না। ওটা রাস্ট্রীয় যাদুঘরে দান করা হয়ে গেছে নগরীতে পা রাখার প্রথম দিনেই । পরবর্তী প্রজন্মকে চিনিয়ে দেয়ার জন্য কিছু বিবেক, ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের স্যাম্পল জমা দেয়া আছে । পাঁচ টাকা করে টিকিট কেটে সেসব দেখাতে নিয়ে যায়, এ প্রজন্মের বাবা-মা রা। সমস্ত আর্কাইভস, প্রতিরক্ষা আর নিরাপত্তা বিভাগ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বেইমানির নথিপত্র। ব্যাকগ্রাউনড কৃস্টাল ক্লিয়ার ।
সবে তো শুরু । তোরা মোহগ্রস্থ হয়ে পড়ছিস দিন দিন । সব ই পবিত্র মনে হয় তোদের কাছে । জানিস, হলি সোর্ড এর জায়গাতে এখন নাইন এম এম উকি দেয়। ল্যাপটপের ব্যাগের ফাকে ফাকে থাকে কিছু হাতিয়ারের খন্ড খন্ড অংশ। সেগুলো জোড়া দিলে তৈরি হয় নির্ভেজাল যমদূত ।একটা মাত্র দ্রুতগামী গরম সীসার টুকরা.. এরপর বেহেশতে যাবি না নরকে পচবি, সেটা নিয়ে তর্ক করার জন্য, স্রষ্ঠার সাথে তোর আর কোনোদিন দেখা হবে না ।
.. নাগরিক, তোর সাহস টাকে মনোপলির মার্কেটে বেচে দিস না। সাহস হারালে আর হারানোর কিছু থাকে না - সর্বশক্তিমান দোপেয়ে জানোয়ারদের ।
৪. আজ রাতে আমার একটি মানবী প্রেমিকার দেহ চাই । সুন্দর, নরম, পেলব দেহ। সু্স্ফীত, সুডৌল স্তন, সুস্পষ্ট নিতম্ব । সুকেশি সুকন্যা ... চুড়ান্ত অশ্লীলতায় অথবা গভীর মনোযোগে আমি তার দেহে ধ্যান করবো ।
৫. বিকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত রাজপথে চলা কিছু বিশেষ শ্রেণীর ত্রিচক্রযানের গল্প বলছি তিন বাক্যে । এই ত্রিচক্রযানের সামনের দিকে একটা লুংগি আর ছেড়া ময়লা শার্ট পড়া একটা অস্তিত্ব বিদ্যমান। হুড নামক একটা স্বর্গীয় ছাতার আড়ালের নিচে; একপাশে থাকে একটা টি-শার্ট আর জিন্স, আর একপাশে থাকে থ্রি পিচ বা শাড়িময় অবয়ব। সন্ধা গভীর হতে থাকলে টিশার্ট আর জিন্স সক্রিয় হতে থাকে, প্রাণ ফিড়ে আসে শাড়িতে বা সালোয়ারে ; আজ কিছু একটা হয়েই যাবে, যেমনটা প্রতিদিন ই হয় ।
রাজপথে চলন্ত স্বর্গ রচিত হয়। কেউ কেউ নাক সিটকায়। কেউ হিংসায় জ্বলে ।
..... আমি তখন ডালপুড়িতে কামড় বসাই ।
৬. পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। বাপ তার ছেলেকেও ছাড়ে না । ছেলে তার দাদাকেও ছাড়ে না । .... দাড়া দাড়া, কথা শেষ হয় নি, ছেলে তার প্রেমিকাকেও ছাড়ে না। প্রেমিকা তার পুরাতন প্রেমিক কেও ছাড়ে না। পুরাতন প্রেমিক, আমার ভবিষ্যত প্রেমিকাকেও ছাড়ছে না । কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেনা।
... তাহলে এতো ডিভোর্স কোথ্থেকে হচ্ছে ? কেউ কাউকে ছেড়ে যাচ্ছে না। শুধু সাবস্টিটিউশন আর রিঅ্যারেন্জমেন্ট হচ্ছে । প্রকৃতি আজ শূন্যস্থান পূরণ করে চলেছে অবিরাম।
৭. সরলতা আজ তোমার সাথে আড়ি, হৃদয়দস্যু যাচ্ছে তোমার বাড়ি ।। গুজবে মাথা তোমার বুকে, খসবে যখন শাড়ি ।
৮. টেলিস্কোপে দেখা "আকাশগঙ্গা" অনেক সুন্দর লাগে । আকাশে যখন চাঁদ ওঠে, জোসনা ভেঙে আমার জানালা দিয়ে চারপায়ার উপর অবস্থিত আমার কালো অবয়বকে ভাসিয়ে দিয়ে যায়; আমার ভালো লাগে। আমি কিছুক্ষণের জন্য ভুলে যাবার চেষ্টা করি, ওটা একটা স্যাটেলাইট মাত্র। স্যাটেলাইট কে নিয়ে কি কাব্য চলে ??
......... তারপরেও শুধু শুধু , কেনো যেনো, আঙুলগুলো আতিপাতি করে কিছু আঙুলের ফাকে মিলিয়ে যেতে চায়।
৯. একজন দস্যু হেটে যাচ্ছে । তাদের গায়ের ঘ্রাণে আজ পরিবেশ মুখরিত। কালো চশমার নিচে, তার স্থিরপাষাণরূপী মনোযোগী, সতর্ক আর আত্নবিশ্বাসী চোখটা বোঝা যাচ্ছে না। আজকে তার অপারেশন। কাজটা শেষ করতেই হবে । এমন কাজ সে হরহামেশাই করে থাকে । সন্ধার পর একটা বিশেষ অ্যাকাউন্টে দশ বান্ডিল কাগজ জমা পড়বে, প্রতিটা বান্ডলে ৫০ টা করে আয়তাকার কাগজ। তার প্রতিটাতেই ১ এর পিঠে ৩ টা শূন্য। জীবিকার সহজ উপায়, খাদ্য শৃংখলের উপরের দিকে থাকা ।
.... কাল সকালে আমরা আরেকটা বেওয়ারিশ লাশ দেখবো ড্রেনের পাশে ।
১০.অস্থির আমার চিত্ত, দেখি আকাশ পানে ঝড়
আজ সব ছেড়ে, মানুষের ভিড়ে, খিল লাগিয়ে মর
নিষ্ফল যত, ইচ্ছে-চেষ্টা, মানবিক অবরোধে
মনে ক্রোধে জোটে, ভাষাহীন ঠোটে, অভিমান হয়ে ছোটে ।
মাথা কুটে মরে, নিশ্চুপ ঝড়ে, প্রবল যত ইচ্ছা
একদিন তরে, চোখে-ঠোটে-বুকে,আমার মৃত্যু স্বেচ্ছ্বা ।