
পাপকথা-১
ঘরের ছাদ পর্যন্ত ঠেকে গেছে শ্বাপদ চোখের দৃষ্টি
বুনো হিংস্রতায় ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে, সিলিং ফ্যান কিমবা জ্যান্ত মানুষ
শয়তানকে খাচায় পুড়ে ফেলবি??
বলি দেবো তোকে, আমার লালসার নামে ।।
সমসাময়িক সাংঘর্ষিক অন্ধকারটাই চিরসত্য।।
নিষিদ্ধ বাজারে বিকোয় বোঝা বোঝা পাপ।
পাপ ব্যবসায়ী আমি, সুদে বেচি তোর দূর্ভাগ্য।।
আমার পচা মাংসে তোর হৃদপিন্ডের দুর্গন্ধ ।। - সরা এটা ।। নয়তো হৃদয়টাও গুম করে দেবো ।।
অনুশোচনা নেই, অহং নেই, আমি যা করেছি , ঠিক করেছি ।।
একশোবার দুমড়ে মুচড়ে ছিড়ে ফেলেছি তোকে।
আরো একহাজারবারেও শান্ত হবো না ।।
ছিড়ে ফেলবো, আপন ক্রোধে, তোর হাড়গোড়, রক্ত , মাংস, আর থুথু জমা হৃদয় ।।
তোর ভেঙে পড়া দেখে মুখ থুবড়ে পড়িনি, সংখ্যাগরিষ্ঠের দলে ঠেলে দিয়েছি। প্রচন্ড হিংস্রতায় ।।
পিশাচের হাসির সাথে, নিজের হাসিটা আজ মিলিয়ে দেখি।
তোর ভালোতেও আমি নেই, মন্দতেও থাকবো না ।।
সবকিছু ধ্বংস হোক কিমবা গড়ে উঠুক ধ্বংস্তুপে ..
তোর অনাগত ভবিষ্যত সভ্যতা।
আমার ঠোটের কোণে,
অভিশপ্ত শয়তানের মুচকি নির্লিপ্ত হাসিটা চিরকাল তোর আর্তচিৎকার ডেকে আনবে প্রচন্ড ভীতি আর বিবমিষায় ।।
......
........ নিজ মনে লালিত শয়তান কখনো ভেঙে পড়ে না ।।
পাপকথা - ২
রাতদুপুরে কিছু মড়াখেকো শেয়ালের বিলাপ
চাঁদ আজো ডুবে যাচ্ছে, বাঁশবাগান আর মরা মেঘের অভিমানে ।।
ঘুমন্ত শয়তানটা জেগে উঠছে, নিজের ভেতর।।
নিষিদ্ধ কোনো বস্তুর প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণে দাড়িয়ে যাচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত রোম।
শিরায় বইছে পিশাচ ।।
প্রাগৈতিহাসিক পাপ ডেকে যাচ্ছে , আয় আয় আয় আয় ।।
ঝড়োবায়ু, বৃষ্টি হয়ে ভেঙে দিচ্ছে অধৈর্য্যের বাঁধ ।।।
পুরনো কবরের গর্তে আজ পরিচয়হীন বেওয়ারিশ হাড়গোর আর হাটু পানি ।।
চুরি গেছে এপিটাফ ।।
মৃতজগতের যাপিতশাস্তির আর্তনাদ অবজ্ঞা করে, জীবিত দেহগুলো আজ যৌবন বেঈমানিতে পটু ।।
অস্তিত্বের মেরুগুলো আজ মরুভূমি খোঁজে ।।
অন্ধকারে মানবজাতি বড্ড শারীরিক উষ্ণতালোভী ।।
আজ রাতে তোর ঠোটের দীর্ঘ চুম্বন দরকার।
রাতের শেষে মরার মতো ঘুমাবো ।।
এরপর আর কোনোদিন তোকে মনে রাখবো না ।।
পাপকথা-৩
""রাস্তার কুকুরটার সাথে অঘোষিত যুদ্ধ, নিজের খাবারটাতো বাঁচাতে হবে ।
ফুটো হয়ে যাওয়া ছন আর পলিথিনের নিচে অবিরাম ঘ্যানঘ্যান
মা অধিক শোকে পাথর, বাবা বিকলাঙ্গ বর্বর ।।
পচে যাওয়া খাবার থেকে, ওদের জন্যও রাখতে হবে .. ক্যানো ??
অ্যাতো ক্ষুধা ক্যানো, পেটে দোযখ জ্বলে কেনো??
অল্পকিছু পেটে পড়লে, রাক্ষস টা আরো রেগে যায়, মনে হয় ডাস্টবিনটাকে চিবিয়ে খাই
আগে নিজেকে বাচাই ... থুহ ... নিজেকে .. এই আমাকে ??
পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের লোলুপ দৃষ্টিটা কেনো ডাস্টবিনের দিকেই?
শহরবাসী আজোও কিছু ফ্যালেনি ওখানটায় ।।
মানুষের চড় লাথি অপমান, ক্রমাগত ছ্যাচড়া বানিয়েছে আমায়
কেউ দয়া দেখালে, একবেলা খাওয়ালে, তাকে ঠকাতে একমুহুর্ত দ্বিধা করিনা ।।
ফাকে ফোকড়ে বেকায়দায় কাউকে পেলে, সব ছিনিয়ে নিতে সংকোচে মরি না "" - আমি টোকাই
যে মেয়েটার সাথে কাগজ কুড়োতে গিয়ে প্রতিদিন দেখা হয়, ওকে অনেকবার "তোরে ভালোবাসি" বলা হয়েছে।।
জানোস, এই প্যাটে ম্যালা খিদারে।
একদিন সব মিটাইয়া তরে বউ বানামু , আমগো খাওনের কোনো অভাব থাকবো না ।।
ঘর বান্দুম আবার।।
একটা ঊন-মানুষ, ছ্যাচড়া টোকাইয়ের আবার কিসের হাহাকার ?????
অসমাপ্ত আত্নাভিমান
দেখার ছলে বাড়িয়ে দেয়া হাত দুটো
লাজুক সংকোচে ধরতেই পারিনি হাতটা।।
যেদিন সব বলে দেবো বলে ঠিক করেছি...
সেদিন জেনেছি, অনেক দেরি হয়ে গেছে আমার ।।
হাতেরা অপেক্ষা করে না ।।।
গলায় মালা ছিলো না, তাই গলার কাটাতেও হতভম্ব হইনি।।
দপ করে নিভে যাওয়া সূর্যটাকে, চাঁদে রুপান্তর করে নিয়েছি নিমিষেই ।।
গ্রহণকালের ফোস্কা বয়ে বেড়াচ্ছি দহনকালে।
সাগর খুঁজতে গিয়ে সাহারা প্রাপ্তি ঘটেছে ।।
ভীষণ গোয়ার আজ আমি ।।
ক্যাকটাস চিবানো রসে বেঁচে আছি , তেতো তৃষ্ণা নিয়ে ।।
আমার বিশ্বস্ত চওড়া কাঁধ সময়ের আচড় বয়ে বেড়ায়,
মনের বাগানে আজো রজনীগন্ধার লাশ
কন্যা আমি তোরই - চিরকালের অবাধ্য .. হার না মানা ক্রীতদাস ।।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:৫৮