রাধানাথ শিকদার থেকে মুসা ইব্রাহিম।
হিমালয় পবর্ত শ্রেণীর মধ্যে ১৫ নম্বরটি যে খানিকটা মাথা উঁচু করে থাকে তাতে অনেকে সন্দেহ পোষণ করেন। কারণ হিসেব কষে বলা যাচ্ছে না সে আসলে কতটা উঁচু। তবে দুর থেকে তাকে মাথা উঁচু করেই থাকতে দেখা যায়। ব্রিটিশ ভারত এক সময় সিদ্ধান্ত নিল সে ভারতে বিভিন্ন অঞ্চল জরিপ করার। ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ ভারতে সার্ভেয়ার জেনারেল এন্ড্রু ওয়াহ ঘোষণা দেন যে হিমালয়ের ১৫ নম্বর পবর্তটির উচ্চতা ২৯,০০২ ফুট (৮,৮৩৯ মিটার, বর্তমানে তার স্বীকৃত উচ্চতা ২৯,০২৯ ফুট, তবে এই উচ্চতা বিভিন্ন সময় বাড়ে এবং কমে)। এই ঘোষণার সাথে সাথে এই বিশেষ পবর্তশৃঙ্গটির গুরুত্ব আলাদা হয়ে যায়, কারণ এর ফলে সেটি তখন হয়ে দাঁড়ায় বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। ১৮৫৬ সালে এই ঘোষণা আসলেও এই উচ্চতা মাপার কাজটি সম্পন্ন হয় ১৮৫২ সালে। আর যিনি এই কাজটি করেছিলেন তার নাম রাধানাথ শিকদার। দেরুদুনে কাজ করার সময় তিনি এই উচ্চতা পরিমাপ করেন। একজন বাঙ্গালীর এই আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে ১৫ নম্বর পবর্ত শৃঙ্গটি এমন এক পর্বত শৃঙ্গের মর্যাদা পায় যেখানে চড়ার জন্য গর্ব অনুভব করে অনেকেই। এই পবর্ত শৃঙ্গটি তখন স্থানীয় তিব্বতী নাম চুমালাং হিসেবে পরিচিত ছিল। ফরাসী ভুগোলবীদ ডি-আনভিলেরর তৈরি করা ১৭৩৩ সালের মানচিত্রে এই নামেই তাকে পাওয়া যায়। কিন্তু ব্রিটিশরা জরিপকালীন সময়ে সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেষ্টের নামে এর নাম রাখে এভারেস্ট।
প্রথম আবিষ্কারক হিসেবে রাধানাথ শিকদারের নামে হতে পারত এই পর্বতেচূড়ার নাম। তারপরেও আবিষ্কারে ১৫৮ বছর পর প্রথম বাংলাদেশী বাঙ্গালী হিসেবে মুসা ইব্রাহিম এই পর্বতচূড়ায় পা রেখে রাধানাথ শিকদার এবং সকল বাঙ্গালীকে আরো একবার গৌরবান্বিত করলো। তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন।
১. ২৪ শে মে, ২০১০ রাত ৯:৩৯ ০