গ্রামের এক সাধারণ বালক ওয়াশিকুর মারা যাওয়ার পর যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে এদেশের তাবত মিডিয়ায় ঝড় বইছে তখন তার গ্রামের এক লোক মন্তব্য করেছিল " আমাগো ওয়াশিকুর দেখছি প্রেসিডেন্ট হয়ে মারা গেল! তার জন্য এত কিছু!!!!"
এক এসপি বাবুলের স্ত্রী নিহত হওয়ার পর ২৪ ঘন্টায় ১৩০০ গ্রেফতার!! রিতিমত মিরাক্কেল!!
অভিজিৎ খুনের মামলায় ব্রিটেন-আমেরিকা থেকে এখনো তদারকি চলছে।
হিন্দু সাধুর খুনের পর থেকে তো ঐ জেলার পুরুষ সব ঘরছাড়া।
এসব দেখলে মনে হয় দেশে কেবল "মুক্তমনা -সং্খ্যালঘুরাই খুন হচ্ছে। বাকিরা সব নিরাপদেই আছে।
অথচ এক নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই খুন হল ১৩০ জনের মত। দেশে প্রতিদিন গড়ে খুন হচ্ছে ১০ এর উপরে। ক্রসফায়ার নাটকে ঝরে পড়ছে অসং্খ্য মেধাবী তরুনের প্রান। হেফাজত ইস্যুতে প্রান দিলেন ৬০ এর অধিক আলেম। মাদ্রাসা-মসজিদ রক্ষায় বি-বাড়িয়া সহ সারা দেশে শহীদ হয়েছেন অসং্খ্য মাদ্রাসার ছাত্র ও ইমাম-মুয়াজ্জিন। এসব লিখলে পৃষ্ঠার উপরে পৃষ্ঠা শেষ হবে কিন্তু বিবরণ শেষ হবে না। কিন্তু এই সকল খুনের পর দেশে কয়জন গ্রেফতার হয়েছেন? কয়টা চিরুনি অভিজান হয়েছে দেশে? কয়টা মিডিয়া দিনের পর দিন এসব নিয়ে টকশো-সংবাদ পরিবেশনে ব্যাস্ত ছিল? আমেরিকা -ইউরোপ থেকে কতটা শোকপ্রস্তাব এসেছে?
উত্তর আসবে না। কারন এগুলোকে খুন বলা হয় না। খুনের সংজ্ঞায় এসব পড়েনা।
হত্যাকান্ডের পর এই বিভাজনের কারনেই খুনিরা খুনের নেশায় মেতেছে। আড়ালে চলে যাচ্ছে প্রকৃত আসামীরা। ১০ জনকে বাঁচাতে গিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে ১০০ জনকে। এক খুনের মামলা নিয়ে সবাই ব্যাস্ত থাকায় অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে হাজারো খুনের মামলা।
এভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। জননিরাপত্তা কখনো আশার আলো দেখবে না। " আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান " এটা এখন মিথ্যায় পরিনত হয়ে গেছে।
যদি দেশের সকল নাগরিককে সমান গুরুত্ব দেওয়া না হয়, যদি সব খুনের পরই খুনিদের পিছনে এভাবে ধাওয়া করা না হয় তাহলে একদিন এদেশে "খুন" শব্দটা বিনোদনে পরিনত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৫