প্রথমত যারা শুধু এই কথা বলছে যে- "মেয়েরা পর্দা না করলে এমন হবেই, রুপ দেখিয়ে বেড়াবে আর ধর্ষণ হবে না!", তারা খুব অল্প জ্ঞান সম্পন্ন একচোখা মানুষ, যাদের ইসলাম সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান নেই। তাই এরা সব দোষ মেয়ের কাপড়ের উপর দিয়ে থাকে! যদিও এই শ্রেণির সংখ্যা সমাজে সবচেয়ে বেশি।
দ্বিতীয় কথা হলো এই শ্রেণির প্রতিবাদে আরেক শ্রেণি যারা ধর্ম বিদ্বেষী তাদের কাছে ব্যাপারটা অনেকটা এই রকম- "কই তোমাগো হিজাব তো পারলো না ধর্ষণ ঠেকাতে, লাভ কি তাইলে হিজাব কইরা, এর চেয়ে মুক্তমনার মত উদার পোশাকে ঘুরে বেড়ানো ভালো"! এই শ্রেণি আরো বড় ইতর। এরা ভিতরে ভিতরে নারীর সম্মতিক্রমে খেলবে, যৌনতার স্বাধীনতায় উন্মত্ত হবে, অন্যদিকে বাইরে এসে মোমবাতি জ্বালিয়ে বলবে- বিচার চাই, বিচার চাই!
এবার আসল কথায় আসি- ইসলাম এ হিজাব করতে বলা হয়েছে সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য নয়, বরং পর পুরুষ থেকে সেই সৌন্দর্য ঢেকে রাখার জন্য। হিজাব এমন হতে হবে যেনো তিনি দাদী, নানী নাকি যুবতি মেয়ে তা বোঝার অবকাশ না থাকে। বর্তমানের চলন্ত হিজাব নামের ট্রেন্ড কোনভাবেই হিজাব নয়, সেখানে শুধুমাত্র মার্জিত উপায়ে, অনেক সময় অমার্জিত ভাবেও শুধু মাথায় কিছু কাপড় পেচিয়ে সারাদেহের সৌন্দর্য ঠিক ই তুলে ধরা হয়, অথচ ইসলাম এ এমন কোন হিজাব এর কথা বলা তো হয়নি, বরং সাবধান করা হয়েছে মাথার উপর উটের কুজের মত উচু করে কাপড় না পড়তে। তাই ইসলাম এর নাম এখানে কোন ভাবেই আনা ঠিক না।
পরের কথা হচ্ছে- একজন প্রকৃত ঈমান দার মুসলিম কখনো একটা বেগানা মেয়ের দিকে তাকাতেও ভয় পায়, কারণ আল্লাহ বারণ করেছেন। যারা ধর্ষণ করে তারা ধর্মের বাইরের মানুষ। এদের কাছে ধর্ম বলতে কিছু নেই। কে কি পোশাক পড়লো, না পড়লো তাতে এদের কিছু আসে যায় না। শুধুমাত্র একটা বার ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী সেই ধর্ষকদের একজন কে পাথর মেরে জনসম্মুখে হত্যা করে দেখুন, সব ধর্ষক নামের কুকুরগুলো না চাইতেও শুধরে যেতে বাধ্য!
ধর্ষক নামের কুকুরদের কিন্তু এই সমাজ ই তৈরি করে। ইচ্ছাকৃত অবৈধ সম্পর্ককে বৈধ করে তুলে অনিচ্ছাকৃত অবৈধ সম্পর্ককে ধর্ষণ এর নাম দিয়ে বিচার চাওয়া দ্বিমুখী নীতি ছাড়া কিছুই না। সমাজে বিয়ে কঠিন করে ফেলা, ব্যভিচার প্রশ্রয় দেয়া আর ধর্মীয় উপলব্ধি সমন্বয়ের শিক্ষাকে অবহেলার কারণেই এই কুকুর জাতের প্রজাতি বেড়ে চলেছে, পাশাপাশি তথাকথিত বিচার ব্যবস্থা তো আছেই!
আর হ্যা, মেয়ে ছেলে উভয় এর পর্দা রয়েছে। ছেলেরা দৃষ্টি সংযত না রেখে শুধু মেয়েদের দোষ ধরতে যাওয়া বিচার মানি তালগাছ আমার এর মতই। আবার ছেলে বিহীন একটা সমাজে মেয়েদের ছেড়ে দিন- দেখবেন উগ্র সাজগোজ আর সৌন্দর্য প্রকাশ কই উধাও হয়ে যাবে! নিয়ম সঠিক ভাবে জানা এবং মানা উভয় এরই কাম্য। নিয়ম একরোখা কখনোই নয়।
এইসব বিষয় না বুঝেই আমরা প্রথমে উল্লেখিত দুই দলের হয়ে দলাদলি তে ব্যস্ত। আর অন্যদিকে শুধু শুধু ইসলাম এবং এর নিয়ম কানুন টেনে নিজেদের অজ্ঞতাকে ঢাকার চেষ্টা করি সর্বদা! যা সত্যি ই দু:খ জনক !
বিনোদনের জোয়ারে ভেসে আমাদের চিন্তাশক্তি, বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা যেনো একদম ভোতা হয়ে গেছে!! কবে যে আমাদের মস্তিষ্ক সত্যি ই তার আসল কাজ করবে! কবে !
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৩৪