somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাভার ট্রাজেডির মত আর একটি জাতীয় ট্রাজেডি রামপাল চুক্তি

০৭ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে গত ২০ শে এপ্রিল শনিবার বিদ্যুৎ ভবনে ভারতের সঙ্গে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হোল। সই হওয়া এ তিনটি চুক্তির মধ্যে রয়েছে,যৌথ উদ্যোগ চুক্তি, বাস্তবায়ন চুক্তি ও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। ২০১১ জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় দুই দেশেরমধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক হয়, যাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালনের বিষয়টি ছিল। এরপর রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশবিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। চুক্তিটি এমন সময় স্বাক্ষরিত হোল যখন পরিবেশবাদীরা প্রবল প্রতিবাদ করছে এবং হাই কোর্টও সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন না করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র কী জাতীয় স্বার্থকে রক্ষা করছে? আসুন দেখা যাক।

রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হবে দুই দেশের সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি নামে একটি কোম্পানিও গঠন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অর্থায়ন করবে ১৫% পি ডি বি, ১৫% ভারতীয় পক্ষ আর ৭০% ঋণ নেয়া হবে। যে নীট লাভ হবে সেটা ভাগ করা হবে ৫০% হারে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনবে পি ডি বি। বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হবে একটা ফর্মুলা অনুসারে। কী সে ফর্মুলা? যদি কয়লার দাম প্রতি টন ১০৫ ডলার হয় তবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ এর দাম হবে ৫ টাকা ৯০ পয়সা এবং প্রতি টন ১৪৫ ডলার হলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৮ টাকা ৮৫ পয়সা। অথচ দেশীয় ওরিয়ন গ্রুপের সাথে মাওয়া, খুলনার লবন চড়া এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা তে যে তিনটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের যে চুক্তি হয়েছে পি ডি বির সাথে সেখানে সরকার মাওয়া থেকে ৪ টাকায় প্রতি ইউনিট এবং আনোয়ারা ও লবন চড়া থেকে ৩টাকা ৮০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনবে। সরকার এর মধ্যেই ১৪৫ ডলার করে রামপালের জন্য কয়লা আমদানির প্রস্তাব চূড়ান্ত করে ফেলেছে। তার মানে ৮ টাকা ৮৫ পয়সা দিয়ে পি ডি বি এখান থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনবো সেটা নিশ্চিত।

এবার আসুন মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়। ১৮৩০ একরধানী জমি অধিগ্রহণের ফলে ৮০০০ পরিবার উচ্ছেদ হয়ে যাবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্ম সংস্থান হতে পারে সর্বোচ্চ ৬০০ জনের, ফলে উদ্বাস্তু এবং কর্মহীন হয়ে যাবে প্রায় ৭৫০০ পরিবার। শুধু তাই নয় আমরা প্রতি বছর হারাবো কয়েক কোটি টাকার কৃষিজ উৎপাদন।

এবারে আসুন পরিবেশের ক্ষতির প্রশ্নে। কয়লাভিত্তিক যেকোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে অন্য যে কোনো প্রকল্পের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। বিশেষত ভষ্মিভূত কয়লার ছাই এবং উৎপন্ন গ্যাসের ফলে বায়ু ও পানি দূষণের যুগপৎ প্রভাবের কারণে এই ক্ষতি হয়। এ ধরনের প্রকল্প এলাকার আশেপাশের অঞ্চলে এসিড বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে যা বৃক্ষ এবং বনাঞ্চলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে ভয়ানক মাত্রায়। যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায় যে, ২০১০সালে দেশটির মোট কার্বন ডাই অক্সাইডের ৮১ ভাগ উদগীরণ করেছে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো, যা থেকে মোট শক্তির মাত্র ৪১ ভাগ পাওয়া গেছে। এই সকল বিবেচনায় পৃথিবীব্যাপি সকল দেশেই কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। সাম্প্রতিককালে এই ধরনের প্রকল্প এড়িয়ে চলার চেষ্টাটাই বেশি চোখে পড়ে। এ ধরনের কয়লাভিত্তিক প্রকল্প প্রতি ৫০০মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রায় ২.২ বিলিয়ন গ্যালন পানির প্রয়োজন হয়।রামপালের প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা নিঃসন্দেহে মেটানো হবে পশুর নদী থেকে। পশুর নদীরপানি নোনা ও মিঠা জলের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের প্রয়োজন মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই নদীটির সাথে ওই গোটা অঞ্চলের সামগ্রিক জীববৈচিত্র্যের সংযোগ রয়েছে। এটি ওই অঞ্চলের জনবসতির ক্ষেত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী। কিন্তু এই প্রকল্প তৈরি করতে গিয়ে আমরা সেই নদীর অস্তিত্বকেই বিপন্ন করে ফেলছি।

এই প্রকল্প এলাকা সুন্দরবনের ঘোষিত সংরক্ষিত ও স্পর্শকাতর অঞ্চল থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে। অন্যান্য দেশে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটায় বলে সংরক্ষিত বনভূমি ও বসতির ১৫-২০ কি.মি.-এর মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয় না। এমনকি এই ভারতীয় কোম্পানিকেও তার নিজের দেশেই এই যুক্তিতে মধ্য প্রদেশে একটি অনুরুপ প্রকল্প করতে দেয়া হয়নি। ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দরবন থেকেমাত্র ১৪ কি.মি. দূরে! আবার সুন্দরবন থেকে দূরত্ব আসলেই ১৪ কি.মি. কিনা সেটা নিয়েও বিতর্ক আছে। খোদ ইআইএ রিপোর্টের এক জায়গায় বলা হয়েছে প্রকল্পের স্থানটি একসময় একেবারে সুন্দরবনেরই অংশ ছিল।

কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুইটিবিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট থাকবে। প্রথম ইউনিটটি নির্মাণ করতে সাড়ে চার বছর সময় লাগবে। প্রথম ইউনিটটি নির্মাণের সাড়ে চার বছর সময় জুড়ে গোটা এলাকার পরিবেশ, কৃষি,মৎস ও পানি সম্পদের উপর অসংখ্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের মালামাল ও যন্ত্রপাতি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নদী পথে পরিবহন করা হবে। ফলে বাড়তি নৌযান চলাচল, তেল নিঃসরণ, শব্দদূষণ, আলো, বর্জ্য নিঃসরণ ইত্যাদি সুন্দরবনের ইকো সিস্টেম বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, ডলফিন, ম্যানগ্রোভ বন ইত্যাদির উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে ইআইএ রিপোর্টে আশংকা করা প্রকাশ হয়েছে। ড্রেজিং এর ফলে নদীর পানি ঘোলা হবে। ড্রেজিং সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে তেল- গ্রীজ ইত্যাদি নিঃসৃত হয়ে নদীর পানির দূষিত হবে। পশুরনদীর তীরে যে ম্যানগ্রোভ বনের সারি আছে তা নির্মাণ পর্যায়ে জেটি নির্মাণসহ বিভিন্ন কারণে কাটা পড়বে। নদী তীরের ঝোপঝাড় কেটে ফেলার কারণে ঝোপঝাড়ের বিভিন্ন পাখিবিশেষ করে সারস ও বক জাতীয় পাখির বসতি নষ্ট হবে। এর পরে আসছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র অপারেশনে থাকার সময়কার প্রভাব- ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪২ টন বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইডও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড নির্গত হবে। পশুর নদী থেকে প্রতি ঘন্টায় ৯১৫০ ঘনমিটার করে পানি প্রত্যাহার করা হবে। যতই পরিশোধনের কথা বলা হোক, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি নির্গমন হলে তাতে বিভিন্ন মাত্রায় দূষণকারী উপাদান থাকবেই যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেলায় 'শূন্য নির্গমণ' বা 'জিরো ডিসচার্জ' নীতি অবলম্বন করা হয়। এনটিপিসিই যখন ভারতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রনির্মাণ করে তখন 'জিরো ডিসচার্জ' নীতি অনুসরণ করে অথচ রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্টে বলা হয়েছে- 'পরিশোধনকরার পর তরল বর্জ্য বা ইফ্লুয়েন্ট ঘন্টায় ১০০ ঘনমিটার হারে পশুর নদীতে নির্গত করা হবে।' যা গোটা সুন্দরবন এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করবে। ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে ২৭৫ মিটার উচু চিমনী থেকে নির্গত গ্যাসীয় বর্জ্যরে তাপমাত্রা হবে১২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ফলে আশেপাশের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রেবছরে ৭,৫০,০০০ টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লক্ষ টন বটম অ্যাশউৎপাদিত হবে। এতে বিভিন্ন ভারী ধাতু যেমন আর্সেনিক, পারদ,সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম,বেরিলিয়াম, ব্যারিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, রেডিয়াম মিশে থাকে। কিন্তু আরো ভয়ংকর ব্যাপার হলো, একদিকে বলা হয়েছে এই বিষাক্ত ছাইপরিবেশে নির্গত হলে ব্যাপক দূষণ হবে অন্যদিকে এই ছাই দিয়েই প্রকল্পের মোট ১৮৩৪একর জমির মধ্যে ১৪১৪ একর জমি ভরাট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে! এই বর্জ্য ছাই এর বিষাক্ত ভারী ধাতু নিশ্চিত ভাবেই বৃষ্টির পানি সাথে মিশে, চুইয়ে প্রকল্প এলাকার মাটি ও মাটির নীচের পানির স্তর দূষিত করবে যার প্রভাব শুধু প্রকল্প এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। উৎপাদিত বর্জ্য ছাই সিমেন্ট কারখানা, ইট তৈরি ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্পে ব্যাবহারের সম্ভাবনার কথা ইআইএ রিপোর্টে বলা হলেও আসলে বড় পুকুরিয়ার মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত দৈনিক ৩০০ মেট্রিক টন বর্জ্য ছাই কোনো সিমেন্ট কারখানায় ব্যাবহারের বদলে ছাই এর পুকুর বা অ্যাশ পন্ডে গাদা করে রেখে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টারবাইন, জেনারেটর,কম্প্রেসার, পাম্প, কুলিং টাওয়ার, কয়লা উঠানো নামানো, পরিবহন ইত্যাদির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও যানবাহন থেকে ভয়াবহ শব্দদূষণ হয়। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত সালফার, নাইট্রোজেন,কার্বন ইত্যাদির বিভিন্ন যৌগ কিংবা পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, ব্যারিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতুর দূষণ ছাড়াও কুলিং টাওয়ারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণেও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আকারে নিউমোনিয়া জাতীয় রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বছরে ৪৭ লক্ষ ২০ হাজার টনকয়লা ইন্দোনেশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণআফ্রিকা থেকে সমুদ্রপথে আমদানী করতে হবে। আমাদানীকৃত কয়লা সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজের মাধ্যমে মংলাবন্দরে এনে তারপর সেখান থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সুন্দরবনের ভেতরে পশুর নদীর গভীরতা সর্বত্র বড় জাহাজের জন্য উপযুক্ত না হওয়ার কারণে প্রথমে বড় জাহাজে করে কয়লা সুন্দরবনের আকরাম পয়েন্ট পর্যন্ত আনতেহবে, তারপর আকরাম পয়েন্ট থেকে একাধিক ছোট জাহাজে করে কয়লা মংলাবন্দরে নিয়ে যেতে হবে। ১৩২০ মেগাওয়াটের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার টন কয়লা লাগবে।অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্যায়ের শেষে ২৬ হাজার টন কয়লা লাগবে। এর জন্য সুন্দর বনের ভেতরে হিরণ পয়েন্ট থেকে আকরাম পয়েন্ট পর্যন্ত ৩০ কিমি নদী পথে বড় জাহাজ বছরে ৫৯ দিন এবং আকরাম পয়েন্ট থেকে মংলা বন্দরপর্যন্ত প্রায় ৬৭ কিমি পথ ছোট জাহাজে করে বছরে ২৩৬ দিন হাজার হাজার টন কয়লা পরিবহন করতে হবে!

সরকারের পরিবেশ সমীক্ষাতেই স্বীকার করা হয়েছে, এভাবে সুন্দরবনের ভেতরদিয়ে কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করার ফলে, কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ থেকে কয়লার গুড়া,ভাঙা /টুকরো কয়লা, তেল,ময়লা আবর্জনা, জাহাজের দূষিত পানি সহ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নি:সৃত হয়ে নদী-খাল-মাটি সহ গোটা সুন্দরবন দূষিত করে ফেলবে। চলাচলকারী জাহাজের ঢেউয়ে দুইপাশের তীরের ভূমি ক্ষয় হবে। কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ ও কয়লা লোড-আনলোড করার যন্ত্রপাতি থেকে দিনরাত ব্যাপক শব্দ দূষণ হবে। রাতে জাহাজ চলার সময় জাহাজের সার্চ লাইটের আলো নিশাচর প্রাণী সহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল সুন্দরবনের পশু-পাখির জীবনচক্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।

এই ভারতীয় কোম্পানি এন টি পি সি র মধ্যপ্রদেশে প্রস্তাবিত কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ভারতীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয় বাতিল করে দিয়েছে। তাঁরা বলেছে,” বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য প্রস্তাবিত স্থানটি কৃষি জমি, যা মোটেই প্রকল্পের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া নর্মদা নদী থেকে প্রকল্পের জন্য ৩২কিউসেক পানি টেনে নেয়া প্রকল্পের জন্য বাস্তবসম্মত নয়। কৃষি জমির সল্পতা,নিকটবর্তী জনবসতি, পানির সল্পতা, পরিবেশগত প্রভাব এসব বিবেচনায় এই প্রকল্প বাতিল করা হোল’। যে বিবেচনায় এন টি পি সি নিজের দেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রনির্মাণ করতে পারেনি সেই একই বিবেচনায় বাংলাদেশে কী তাদের প্রকল্প বাতিল হতে পারেনা?


প্রকল্পে ১৫% বিনিয়োগে ভারতীয় মালিকানা ৫০%।বিদ্যুতের দাম পড়ছে দ্বিগুণেরও বেশী। উচ্ছেদ হচ্ছে ৭৫০০ পরিবার। কৃষিজ সম্পদ হারাচ্ছে দেশ। পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে বাংলাদশে কিন্তু ৫০% শতাংশ মালিকানা ভারতীয় কোম্পানির? ভারত মধ্যপ্রদেশে যে প্রতিষ্ঠানকে কাজের অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ সেই এনটিপিসিকেই সুন্দরবনের উপর ১৩২০মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ করে দিচ্ছে পরিবেশের উপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব তোয়াক্কা না করেই। তার উপর ভারতীয় কোম্পানিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র লাভের করও দিতে হবে না। এটা কীভাবে জাতীয় স্বার্থের অনুকুলে হয়? আরএটাই কী আমাদের গিলতে হবে?

**রামপালের চুক্তির ব্যাপারে অনেকের লেখাই পরছি তার মধ্যে ব্লগার আতাউর রহমান ভাইয়ের লেখাটি খুব ভাল লেগেছে, চাইলে আপনিও পরতে পারেন।

** ফেসবুকে রামপাল চুক্তির বিরোধিতায় ইভেন্ট দেয়া হইছে আপনিও সেই ইভেন্টে জয়েন করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১:৪৯
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×