১. বর্তমান সরকার যত তর্জন-গর্জন করে দেশ থেকে দুর্নীতি বিতাড়নের আওয়াজ তুলেছে তার প্রায় সবটাই ফাঁকা ওয়াজ কি না এইটা এখন ভাবার সময় এসেছে। কারণ এনাদের এক বছর হইতে চললো।
২. যে প্রক্রিয়ায় তারা দুর্নীতি দমনের জন্য তৎপরতা চালিয়েছে তাতে দুর্নীতি ু কার টুকুও দমন করতে পারবে কি না এইটা এখন ভেবে দেখা যেতে পারে। কিছু রাজনীতিককে দমন করা সম্ভব হলেও দুর্নীতি দমন হবে এইটা ভাবা দিনকে দিন কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
৩. দুর্নীতি দমন অভিযানে ব্যবসায়ীদের আগে আংশিকভাবে এখন পুরোপুরি ছাড় দেয়ার প্রক্রিয়া নেয়া হচ্ছে। ফলে দুর্নীতি যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে সেই ব্যবসার গায়ে হাত পড়বে না এইটা প্রায় কনফার্ম।
৪. ব্যবসায়ীরা বুঝতে পেরেছে এখন ভয় পেয়ে বসে থাকাটাই সবচেয়ে লাভজনক। সরকার এসে যেমন তেলাবে তেমনি ধরা খাওয়ার ভয়ও থাকবে না। এইভাবেই তারা গুদাম সিলের অভিযানকে ট্রুথ কমিশনে এনে ঠেকিয়েছে।
৫. এই সরকারের মোট কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ১০ জন, দুদকের কমিশনার ৩ জন। নির্বাচন কমিশনে তিনজন। এইভাবে সাকুল্যে ১০০ জনের কম। এদের বেশির ভাগই অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি। নতুন কেউ কাজ পায় নাই। পাটকল শ্রমিক, সাংবাদিক, গার্মেন্টস কর্মী মিলিয়ে কতজন কাজ হারিয়েছে তার হিসাব বসে বসে করা যেতে পারে।
৬.এই সরকারের আমলে কোনো নতুন কাজের জায়গা তৈরি হয়েছে বলে আমরা জানি না। নুতন ইনভেস্টমেন্ট প্রায় জিরো।
৭. কোনো নতুন স্কেল ঘোষণা করা হয়নি। কারও বেতন বাড়েনি। কিন্তু দ্রব্যমূল্য প্রায় দ্বিগুণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনচার গুণ হয়েছে।
৮. দুই দফা বন্যা আর এক দফা সাইক্লোনে ফসলহানি হয়েছে ব্যাপক। খাদ্য ঘাটতির সঙ্গে এইগুলা যোগ হলে সামনে কী আছে আমাদের কপালে সেটা ভাবা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। আপাতত উত্তরবঙ্গ বেঁচে গেলেও সেখানে মঙ্গার মৌসুম সমাগত।
৯. ছাত্র-পেশাজীবীরা যে ত্রাণ কাজে অংশ নিচ্ছেন না। তার একটা কারণ জরুরি অবস্থা কিন্তু তার চেয়ে বড় কারণ হলো মধ্যম আয়ের মানুষের সাহায্য করার সামর্থ্য নাই।
১০. শেয়ারবাজরের রহস্যময় আচরণে বিক্ষোভ হয়েছে। ওই একটা জায়গাতেও আগামীতে তেমন বিনিয়োগ হবে না বলেই আশঙ্কা করা যায়।
১১. মিসম্যানেজমেন্টের কারণে বিদেশে লোক যাওয়া বন্ধ। অতএব কর্মসংস্থানের আউটসোর্সিংয়ের আশা আপাতত বাদ।
১২. ভাশুরেরা কিছু ইনভেস্টমেন্ট হয়তো করবে। কিন্তু তার প্রায় সবটাই হবে অসম চুক্তির ভিত্তিতে।
১৩. মনে হচ্ছে, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব একেবারে ভুল। সিভিল সোসাইটির ক্ষমতায় যাওয়ার এতদিনের প্রস্তুতির ফল যদি
এই হয় তাহলে এদের নিয়ে ভাবতে হবে। এদের ওয়াজ ভবিষ্যতে আর কেউ শুনবে বলে মনে হয় না।
বুঝার চেষ্টা করতেছি।