somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সত্য মিথ্যার বাংলাদেশ

০৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটা কথা সবাই বলে, মৃত্যুর পূর্ব মূহূর্তে মানুষ নাকি সত্য কথা বলে ! আসলে কথাটা কি শুধুই মনগড়া নাকি সত্যি ? যদি সত্যি হয় তবে কথাটা কোথায় লিখা আছে ? মানবতা বিরোধি অপরাধে এই পর্যন্ত যে কয়জনকে ফাসির আদেশ দেয়া হয়েছে তাদের সবাই ফাসির কাষ্ঠে যাবার আগে অথবা তাদের পরিবারের সাথে শেষ দেখা করার সময় বলেছেন আমি সঠিক বিচার পাইনি ! মিথ্যা বিচারে আমাকে ফাসি দেয়া হচ্ছে ! আল্লাহ এর বিচার করবেন ! আল্লাহ এর আদালতে বিচার দিয়ে গেলাম ! আমি আসলে বলতে চাইছি, আমি বিশ্বাস করিনা যে এ পর্যন্ত যাদের মানবাধিকার অপরাধে বিচারে মৃত্যু দেয়া হয়েছে তাদের মাঝে একজনও রাজাকার নেই ! অথচ তারা সবাই মৃত্যুর পূর্বে নিজেদের নির্দোশ দাবি করে আল্লাহ এর আদালতে বিচার দিয়ে গেলেন ! কে রাজাকার এটা বলবে মুক্তিযোদ্ধারা, কিন্তু তারাই আজ দুইটা দলে বিভক্ত ! একদল মুক্তিযোদ্ধা বলে অমুক রাজাকার,আরেকদল মুক্তিযোদ্ধা বলে অমুক রাজাকার না ! তাহলে সত্যি কি ?

আমার এই লিখাটা যারা পড়ছেন তারা কি সবাই বীরশ্রেষ্ঠ ৭ জনের নাম বলতে পারবেন ? আমি জানি ৯৯ জন পারবেননা ! অথচ ক্লাস ১ থেকে ৬ পর্যন্ত এই ৭ জনের নাম পড়ানো হয়েছে ! এটাও সত্যি আমার নিজেরও মনে নেই ! আমরা কয়জন জানি বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরঙ্গনা, বীরপ্রতীক, বীরবিক্রম, বীরউত্তম, বীরশ্রেষ্ঠ ইত্যাদি খেতাবে কতোজনকে ভূষিত করা হয় ? অনেক সময় ভুলে যাই যুদ্ধে সারা দেশে কতোগুলা সেক্টর ছিলো ! সেক্টর কমান্ডারদের নাম আমি জানি না ! আপনারা জানেন ? আসলে জানাটা কি জরুরী ? খুব জরূরী,কারন ভবিষ্যতে বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ব সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন আসবে যা বাধ্যতামুলক ! বর্তমান সরকারী চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতিদের কোটা ৩০%, মহিলা ১০%, উপজাতী ৫%, জেলা কোটা ৫%, বাকি ৫০% কোটা বিহীন রয়েছে অর্থাৎ সাধারন মানুষের জন্য । বুঝতে পারছেন আপনি যদি মুক্তিযোদ্ধা না হন তাহলে আপনি কতটা অভিশপ্ত ? আর এটাও সত্যি বিসিএস লিখিতো পড়িক্ষায় পাস এর পর শুরূ হয় টাকার খেলা, টাকা দিলে ভাইবা পরীক্ষায় পাস ,তার মানে আপনি সরকারী চাকরী পেয়ে গেলেন ! যেহেতু আপনি টাকা দিয়ে চাকরী নিয়েছেন সেহেতু ঘুস/অবৈধ উপায়ে আপনার বিনীয়োগের টাকা তুলতে হবে সেটা যেভাবেই হোক , এটা করতে যদি দেশের অমঙ্গল হয় অথবা কয়েকটা লাস পড়ে যায় তাও আপনি পিছপা হবেননা :) ! তার মানে টাকা যার ক্ষমতা/ভবিষ্যত তার !

১৯৭১ থেকে ২০১৬ সাল, ৪৫ বছর হয়ে গেলো অথচ আমরা কেউ আজ পর্যন্ত একটি মুক্তিযুদ্বের বই পেলামনা যা সব রাজনৈতিক দল থেকে একমত ! সব কয়টা দলেই মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন অথচ তারা সবাই যখন যে দল সরকারে থাকে তখন তারা তাদের মতো করে মুক্তিযোদ্ধারাই নিজেদের মাঝে কাদা ছুরাছুরি করে ! কি লজ্জা, যারা একসময় দেশের জন্য যুদ্ব করেছেন জীবন বাজি রেখে আজ তারা নিজেরাই স্বার্থের জন্য একজন আরেকজনকে রাজাকার বলছেন ! প্রতিটা দলেই মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকার আছে এটা কেউ অস্বিকার করতে পারবেনা অথচ যখন যে দল ক্ষমতায় তখন সে দল হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধার দল,আর বিরোধী দল হয়ে যায় রাজাকার এর দল ! আমরা যারা মুক্তিযুদ্বের পর জন্মেছি অথবা জন্মাবে তারা কিভাবে মুক্তিযুদ্বের সত্যি ইতিহাস জানবে ?

ছোট্ট একটা গল্প বলবো,গল্পটা আজ থেকে ১০/১২ বছর আগে আমার এক দুলাভাই খুব বয়স্ক একজন মানুষ তিনি কথা প্রসঙ্গে বলেছেন- আমরা সবাই জানি ইদুর/চিকা নামক দূরগন্ধময় প্রানীর নাম ! এই চিকার শরীরে অনেক গন্ধ তাই গন্ধ যাতে না আসে তাই তার শরীরে অনেক বেশি বেশি করে সুগন্ধময় তেল মালীশ করা হয়! কিন্তু দেখা গেলো উলটা তার শরীর থেকে আরো বিশ্রী গন্ধ আসতে থাকলো,তখন তার পাশেই কেউ থাকতে পারেনা ! আমাদের বর্তমান অবস্থা তাই ! যখন যে সরকার আসে তখন বইয়ের ইতিহাস পরিবর্তন হয় ! আগে বলা হতো দলের চাইতে দেশ বড়ো,কিন্তু এখন দেশের চাইতে দল বড়ো !


আর কিছু লিখতে সাহস পাচ্ছিনা ! কেনো জানেন ? আজ অনলাইন নিউজে পড়লাম- ইলেকট্রনিকস মিডিয়া ( ফেসবুক/টিভি/পেপার/অনলাইন/প্রিন্ট ) জাতীর পিতা এবং মুক্তিযুদ্বের ইতিহাস অথবা আদালত ধারা সিকৃত মুক্তিযুদ্বের ইতিহাস কে কেউ ব্যাংগ করলে তার শাস্তি ১ কোটি টাকা অথবা জেল, অথবা দুইটাই ! এবং এই মামলার নিস্পত্বির সময়সীমা ২/৩ মাসের মধ্যে করতে হবে ! এটা বাধ্যতামুলক ! আমরা আছি কোন দেশে ? ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন তার দেশে তার শাসন আমলে কেউ যদি তার রাজনীতে ( বার্থ পার্টি ) না করতো তবে তারা চাকরী পেতনা,এমনকি তারা আর্মিতেও সুযোগ পেতোনা ! আমরা কি ইরাকের দিকে যাচ্ছি ?

যেহেতু মুক্তিযুদ্বের ইতিহাস বলতে মুক্তিযুদ্বারা দ্বিধাভক্ত, অথবা তারা সত্যি ইতিহাস বলতে চাচ্ছেননা, এবং আমরাও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে অন্ধকারে আছি সেহেতু আসেন আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবীত না হয়ে দেশ প্রেমের চেতনায় উজ্জিবীত হই , তাহলে অন্তত পরবর্তি প্রজন্ম সুখে থাকতে পারবে !

পরিশেষে , লিখায় বানান ভুল আছে অনেক ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ! কোথাও ভুল বলে থাকলে কমেন্টস করে জানাবেন !
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:৩২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×