ভাবছেন, হঠাৎ তালা কেনার কথা আসছে কেন? কারন অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আপনাকে পুরোপুরি তালা নির্ভর জীবন ধারন (জীবন যাপন আর জীবন ধারনের মাঝে বিস্তর ফাঁড়াক) করতে হবে। বুঝতে পারছেন না? বুঝিয়ে বলছি,
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির কথা মনে আছে আপনাদের? মনে পড়ছে না? ওই যে কয়েক বছর আগে সাগর আর রুনি নামে এক সাংবাদিক দম্পতি নিজ বাসায় একসাথে খুন হলো! তাদের মেঘ নামের ছোট্ট একটা দেবদূত ছিল।
ও হ্যাঁ হ্যাঁ! মনে পড়েছে।
এবার ঠিক মনে পড়েছে, ন! আসলে আমরা তো এমনই। কোনকিছু ঘটলে সেটা নিয়ে কয়েকদিন খুব মাতামাতি করি। সমগ্র দেশ তোলপার করে ফেলি। তারপর সব ভুলে যাই। কি করবো বলুন! ভালো থাকতে গেলে যে ভুলে যেতে হয়, ভুলে থাকতে হয়। ভুলে যাওয়াটাই এখন নিয়ম।
তখন মাননীয় এক মন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘন্টার মাঝে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
তারও কয়েকদিন পরে তিনি আবার বলেছিলেন, ৪৮ ঘন্টা মানেই তো আর ৪৮ ঘন্টা নয়।
তারপর কোন এক ঈদের আগে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়া জাতির নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে আবারো এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, আপনাদের ঘর পাহাড়া দেওয়ার দ্বায়িত্ব সরকারের নয়। ছুটিতে গ্রামে যাবার আগে যার যার ঘরে ভালো করে তালা লাগিয়ে যাবেন।
সেই ৪৮ ঘন্টার পরে আরো অনেক ঘন্টা, দিন, মাস, বছর কেটে গেছে। আমরা ভুলে গেছি সব। খুনিরা ধরা পড়েনি।
খুন হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে। আমরা চিৎকার করছি, প্রতিবাদ করছি, পথে নামছি, ভুলে যাচ্ছি। আবার নতুন করে হত্যা হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে।
ভবিষ্যতে হয়তো ধর্ষণের হাত থেকে বাচার জন্য আপনাকে সিকিউরিটি লক ব্যাবহার করতে হবে। বুঝতে পারছেন না? বুঝিয়ে বলছি,
প্রাচীন মিশরের নারীরা ছিলেন অতিমাত্রায় ব্যাভীচারি (বলাই বাহুল্য, পুরুষগুলোও দুধে ধোয়া তুলসী পাতা ছিলো না!)। আর পুরুষেরা ছিলো ব্যবসায়ী। সে সময় ব্যবসা-বাণিজ্য এতোটা সহজ ছিলো না। ব্যবসার জন্য তারা মাসের পর মাস উটের পিঠে চড়ে মরু পাড়ি দিয়েছে, কিংম্বা জাহাজে চেপে নীলনদ পাড়ি দিয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে তাদের স্ত্রী রা যেন অন্য কারো সাথে যৌন সম্পর্ক করতে না পারে সেজন্য তারা বিশেষ একধরনের তামার তৈরী ধাতব যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি ছিলো কিছুটা আধুনিক প্যান্টির মতো। যার সামনের দিকে ছোট দরজার মতো ছিলো। এবং দরজাটিতে ছোট তালা লাগনো যেত। তাতে মেয়েদের যোনিপথ অবরুদ্ধ থাকতো। আর পেছনের অংশ উন্মুক্ত ছিলো। মিশরীয় পুরুষেরা বাইরে যাবার সময় তাদের বউদেরকে ওই ধাতব প্যান্টি পড়িয়ে দিয়ে যেতো এবং চাবি সাথে করে নিযে যেত।
কিন্তু তাই বলে কিন্তু ব্যাভীচার থেমে থাকেনি। বরং ব্যাভিচারের নতুন এক ধারা চালু হয়েছিলো। কারন ওইসব ধাতব প্যান্টির সামনের অংশে তালা লাগানো থাকলেও পেছনের অংশ ছিলো উন্মুক্ত। আশা করি বাকিটুকু বুঝতে কারো অসুবিধা হচ্ছে না।
এবার আসুন বর্তমানের কথা বলি,
ধরুন, কোন একদিন আমাদের কোন এক মানীয় মন্ত্রী আবারো একদিন জাতির নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে বললেন, আপনাদের ধর্ষণ থেকে রক্ষা করার দ্বায়িত্ব সরকারের নয়। বাড়ি থেকে বের হবার সময় ধর্ষণ রোধী সেফটি লক পড়ে বের হবেন(?
(বিঃদ্রুপঃ ভুলেও পাসওয়ার্ড যুক্ত আধুনিক ডিজিটাল তালা ব্যবহার করবেন না। তাতে হ্যাকারদের জন্য ধর্ষণ করতে সুবিধা হবে।)
প্রাচীন মিশরীয় নারীদের মতো আপনি ধতব সেফটি লক পড়ে বের হলেও কিন্তু ধর্ষণ বন্ধ হবে না। কারন ধর্ষকেরা জেনে গেছে, এই দেশ তাদের জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্য!!!
এতো সিরিয়াসলি নেবার কোন কারন নেই। জাস্ট পাগলের প্রলাপ ভেবে হেসে উড়িযে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৯