সাংকেতিক লেখা নিয়ে চর্চার নামই ক্রিপ্টোলজি। গ্রিক শব্দ 'ক্রিপ্টোজ' আর 'গ্রাফেইন' থেকে এর উদ্ভব। ক্রিপ্টোজ অর্থ গোপনীয় আর গ্রাফেইন মানে লেখা। এই দুয়ে মিলে 'ক্রিপ্টোগ্রাফি', অর্থাৎ 'গোপন লেখা'। আর এ-বিষয়ক চর্চার নাম 'ক্রিপ্টোলজি'। অর্থাৎ গোপনীয় সংকেতভিত্তিক লেখা-বিষয়ক চর্চা। আদিতে এ ধরনের লেখার উদ্ভব ঘটে মূলত গোপনীয় কোনো সংবাদ এক জায়গা থেকে অন্যত্র পাঠানোর উদ্দেশ্য। তবে বর্তমান যুগেও গণিতশাস্র, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এসব চর্চায় ব্যবহিত হয় ক্রিপ্টোগ্রাফি।
আধুনিক সময়ের আগ পর্যন্ত ক্রিপ্টোগ্রাফি বলতে প্রধানত কোনো একটা কথাকে আপাতদৃষ্টিতে 'অপাঠযোগ্য' করে তোলাকেই বোঝানো হতো। যেন যার বা যাদের উদ্দেশে ওই বার্তা, তারা ছাড়া অন্য কেউ এ লেখার পাঠোদ্ধার করতে না পারে। ক্রিপ্টোলজি চর্চায় তিনটি শব্দ খুব প্রচলিত-আলিস (এ), অর্থাৎ যে ক্রিপ্টোগ্রাফি পাঠাচ্ছে; বব (বি) হচ্ছে যার উদ্দেশে লেখা হয়েছে ওই বার্তা; আর 'ইভ' হচ্ছে তারা, যাদের কাছে ওই বার্তাকে দুর্বোধ্য রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
যুদ্ধের সময় এই ক্রিপ্টোগ্রাফির বহুল ব্যাবহার ঘটে, 'রটন মেশিন' নামে রীতিমতো একটি ডিভাইস তৈরী হয়ে যায় এই কাজে ব্যবহারের জন্য। ১৯২০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ছিল ক্রিপ্টোগ্রাফির ক্ষেত্রে স্বর্ণালি সম। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এর ব্যাপক ব্যবহার হয়। তবে যুদ্ধ নয়, গোয়েন্দাগিরি, টাকার হিসাব, ব্যবসার গোপন কৌশল-এসব ক্ষেত্রেও ক্রিপ্টোগ্রাফি চর্চা নতুন কোনো ঘটনা নয়।
যে বার্তাটা পাঠানো হবে, সাধারণ অবস্থায় তাকে বলে 'প্লেইন টেক্সট'। আর রূপান্তর ঘটার পর তার নাম দেওয়া হয় 'সাইফার টেক্সট'। আর 'ডিক্রিপশন' হচ্ছে সাংকেতিক বার্তাটিকে উদ্ধার করে পাঠযোগ্য অবস্থায় নিয়ে আসা।
আজ এই পর্যন্ত, পরের কোনো এক পর্বে ক্রিপ্টোগ্রাফ কি করে তৈরী করা যায় এবং কিভাবে পাঠউদ্ধার করা যায় সে সম্পর্কে লিখব।
তথ্য সাহায্যঃ কিশোর আলো ও উইকিপিডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৩২