somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনি:শেষ অপেক্ষা

২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুট করেই একদিন মনে হলো, জহির রায়হানের মত এত ট্যালেন্টেড একটা মানুষকে কারা গুম করে ফেললো? জহির রায়হানের ব্যাপারে যত জায়গায় যত আর্টিকেল পেয়েছি, সব খুঁজে বের করে পড়ে ফেললাম। উনি যত উপন্যাস, ছোটগল্প লিখেছেন, সব পড়ে ফেললাম। মাসিক ২০০০ নামে একটা ম্যাগাজিনে "পিতার অস্থি'র সন্ধানে" নামে অনল রায়হানের একটা আর্টিকেল পেয়েছিলাম, যেটা আমাকে ভীষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
জহির রায়হানের অন্তর্ধান রহস্য বাঙ্গালিরাই ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ব্যাপারগুলি যতটা সম্ভব আড়ালে আবডালে রাখা হয়েছে। কারণ? অজানা।
আমরা যে কী সম্পদ হারিয়েছি, সেটা কখনো উপলব্ধি করতে পারিনি। আসলে করার চেষ্টাও করিনি। করি না।
জহির রায়হান আমার প্রিয় লেখক, প্রিয় চিত্র পরিচালক। তাঁকে মনে রাখার মাধ্যম হিসেবে এই ফ্যানফিকশনটা লিখেছি। আমার খুব প্রিয় একটা গল্প এটা।




পড়ন্ত বিকেল।
আকাশটা লালচে হলুদ বর্ণ ধারণ করে আছে। উজ্জ্বল সোনালি আভায়ভাসিয়ে দিচ্ছে পৃথিবীকে।
একেই বুঝি বলে - কনে দেখা আলো।
এই আলোতেই বুঝি সব মেয়েকেই সুন্দর দেখায়।
অদ্ভুত মায়াবী সুন্দর।
যে সৌন্দর্য বর্ণনা করবার মত নয়।

রেলিং বিহীন ছাদের কার্নিশে পা ঝুলিয়ে বসে রয়েছে শায়লা।
হাত দুখানা শরীরের দুপাশে।
ও দুটোর উপর ভর করে , একটু পিছনে হেলে বসেছে সে।
আশ্চর্য আমুদে ভঙ্গী।
ডান হাতের পাশে নিতান্তই অবহেলায় পড়ে আছে একটা গল্পের বই।
কোমর অবধি লম্বা চুলগুলো এলোমেলো বাতাসে উড়ছে।
বিষন্ন দৃষ্টি মেলে চেয়ে আছে দূর দিগন্তে।
থরেথরে কালি পড়েছে চোখের নিচে।
হয়তো দুশ্চিন্তায়।
হয়তো রাত্রি জাগরণে।
অথবা অন্য কোন কারণ।
অতো ভেবে কাজ নেই।
কনে দেখা আলোয় বড় সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে।
চোখের নিচে কালি থাকা স্বত্ত্বেও।

প্রায় প্রতিদিনই ছাদে এসে এমনি করে বসে থাকে শায়লা। বিকেলের এটুকু সময় একান্তই তার। এই সময়টুকুতে পড়া তৈরি করার চিন্তা নেই। অফিসের ঝক্কি নেই। হুড়োহুড়ি করে বাসে ওঠার ঝামেলা নেই।
মায়ের বকা নেই।
বাবার চোখ রাঙ্গানি নেই।
কিচ্ছু নেই।
তাই এই সময়টা ভাল লাগে শায়লার।
বড় ভালো লাগে।

মাগরিবের আজান দিতে উঠে পড়ল শায়লা। সন্ধ্যায় বাসার বাইরে থাকলে মা বকাঝকা করে। কয়েক কদম এগিয়ে থমকে দাড়ালো সে। সহসা পিছন ফিরলো।
গল্পের বইটা রেখে যাচ্ছিল ভুলে। ঝুঁকে বইটা তুলে নিল সে।

সকালে নয়টা বাজার আগেই বাসা থেকে বের হতে হয় শায়লাকে। নয়টা-পাঁচটা অফিস। আর যে দিনগুলোতে ক্লাস থাকে, বসের কাছ থেকে ঘন্টাখানেকের ছুটি নিয়ে ছোটে ক্লাস করতে। বেশিরভাগ দিনই ক্লাস করতে যায়না ও। বসের কাছে ছুটি চাইতে গেলে লোকটা কেমন করে যেন তাকায় ওর দিকে।
বড় ভয়ঙ্কর লাগে ওই দৃষ্টি।
আজও একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস আছে।
আবারও ওই লোকটার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।
উফফ!
ক্লাস আর অফিস!
অফিস আর ক্লাস।
বিরক্তিকর এই জীবন!
ধীরেধীরে বসের কেবিনের সামনে দাঁড়ালো শায়লা।

বাস থেকে নামতেই মৃদু একটা বাতাস ছুঁয়ে গেল শায়লাকে। ঘামে ভেজা শরীরটা যেন জুড়িয়ে গেল ওর।
খানিকটা হাঁটাপথ পরেই বাসা।
বাসায় ঢুকতেই মা আবেগমাখা গলায় বললেন, 'আহহারে! ঘেমে নেয়ে গেছিস! যা। চটপট গোসল সেরে নে। আমি খাবার বেড়ে দিচ্ছি।'
অবাক দৃষ্টি মেলে মা'র দিকে তাকালো শায়লা।
প্রতিদিনই তো সে এভাবেই ফেরে।
এটা কি আজ নতুন?
কিছু না বলে গোসলে গেল।
গোসল সেরে ভেজা চুলে খাবার টেবিলে বসল।
মা খাবার সাজিয়ে বসে আছে।
কিছুক্ষণ বাদেই মা'র অতি আদরের কারণ বোঝা গেল। সন্ধ্যায় দেখতে আসবে ওকে। পছন্দ হলে আজই বিয়ে।
হুট ক'রে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো!
ওকে একবার বলারও দরকার মনে করল না!

শায়লা তবুও কিছু বলল না।
ওকে এমন চুপচাপ দেখে মা অবাক হলেন।
ভেবেছিলেন শায়লা চেঁচামেচি করবে।
নিজেই যেচে পড়ে মেয়ের কাছে কৈফিয়ত দিতে এলেন।
হঠাৎ করেই এল সম্বন্ধটা। তোর বড়খালু এনেছেন।
ছেলেটা খুব ভাল।
নাম কায়সার।
শায়লা তবুও নীরব। তর্ক করে তো আর নিজের ভাগ্যকে পাল্টাতে পারবে না!
ছেলেটা ভাষাসৈনিক।
আবার বলে উঠলেন মা।
ঝট করে মুখ তুলল শায়লা। ধীরে ধীরে একটা মিষ্টি হাসি ফুটলো ওর ঠোঁটে।
সে হাসি চোখ ছুঁয়ে গেল।

যেন স্বপ্নের মধ্যে ঘটে গেল সব।
ওর সাথে করে ওদের বাড়িতে এসেছে শায়লা। আসবেই তো। বিয়ের পর মেয়েরা শ্বশুরগৃহেই তো আসে।
ছোট ছোট তিনটে ঘর। পাকা দালান ওদের।
একটা রান্নাঘর।
একটা বাথরুম।
কলপাড়।
বাসার সামনে ছোট একটা বাগানও আছে।
বাড়িটা খুব পছন্দ হলো শায়লার।
লোকজন তেমন নেই। কায়সারের বুড়ো মা আর বড় ভাই।
খুব মিল দুই ভাইয়ের।
এক ভাই সাহিত্যিক। আরেক ভাই সাংবাদিক। দুজনেই দৃঢ়চেতা, স্পষ্টভাষী, দেশপ্রেমিক।
খুশিতে চোখে জল আসে শায়লার!
জীবনে যা চেয়েছিল, তাই পেয়েছে।
এমন সুখ কী ওর সইবে?

পড়ন্ত বিকেল।
সুযোগ পেলে এই বাসার ছাদেও হাঁটাহাঁটি করে শায়লা। তবে রেলিং থাকায় আগের মত পা ঝুলিয়ে বসতে
পারে না।
গুটিকয়েক স্টীলের চেয়ার আছে।
ওতেই বসে।
ভালোই লাগে।
অসম্ভব ভালো।
এখন আর ওর দৃষ্টিতে বিষন্নতার
ছিঁটেটাও খুঁজে পাওয়া যায় না।
অনেক সুখী সে।
সহসা ‘হাউ’ বলে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কায়সার।
ধ্যান ভেঙে চমকে উঠে শায়লা!
'কী ভাবছিলে এত?'
হাসি হাসি গলায় কায়সার শুধায়।
কী যেন ভাবতে ভাবতে লজ্জায় লাল হয়ে যায় শায়লা। ‘বাবা হচ্ছেন আপনি!’
কাঁপা কাঁপা গলায় বলে ও। বলে তারপর এক ছুটে নেমে যায় ছাঁদ থেকে।
হতভম্ব কায়সার তখনো ঠায় দাঁড়িয়ে।

বাঃ বাঃ বাঃ বাব বাবঃ বাবঃ …………
একবছর তিনমাস বয়সী মুনিম মুখে বুলি ফুটছে। একটু একটু করে।
‘এত কষ্ট করে বড় করছি আমি, আর সে কিনা আগে বাবাকে ডাকছে?’
শায়লার গলায় আনন্দ মেশানো অনুযোগ!
ছেলের সাথে কথা বলছে সে।
‘আর যাকে ডাকছো তার তো কোন ভ্রুক্ষেপই নাই!’ আড়চোখে কায়সারের দিকে তাকায়।
আগামীকালের প্রতিবেদন তৈরি করছে সে। ছবি বাছাই করছে।
শায়লার কথা শুনে পিছন ফিরলো।
ছেলের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘বাবাকে ডাকতে হবে না!
আগে বাংলা বলো।’
শায়লার কাছ থেকে মুনিমকে নিজের কোলে নিয়ে নেয় কায়সার।
‘বাঙঃ বাঃ বাঃ বাঃ…………’
দুই হাতে বাবার চুল টানছে মুনিম।
বাবার কোলে এসে খুব খুশি।

তরকারিটা চড়িয়ে দিয়ে ঘরে এসে ঢুকতেই চমকে গেল শায়লা।
কাপড়চোপরের ওয়ারড্রোবটার উপরে চড়ে বসে আছে মুনিম। মনের আনন্দে বাবার রেখে যাওয়া নোটবুকটা হাতে
নিয়ে খেলছে। ঘরে শায়লা আর মুনিম ছাড়া তৃতীয় কোন প্রানী নেই। তাহলে কী করে এত উঁচু জায়গায় উঠলো
বাচ্চাটা? নিজে নিজে? তড়িঘড়ি করে ওকে ওখান থেকে নামিয়ে দিল শায়লা। কিন্তু পরক্ষনেই হাত-পা ছুঁড়ে
নিজেকে মুক্ত করে নিল মুনিম। হেলে দুলে থপাস থপাস পা ফেলে চাল রাখার বালতিটার দিকে এগোল সে। শায়লা
বাধা দিল না ওকে। দেখতে চায় কী করে সে।

চালের বালতিটার উপর চড়ে বসলো মুনিম। ওটার উপর দাঁড়াতেই ওর ছোট্ট হাতের নাগাল পেয়ে গেল জানালাটা। শিক ধরে জানালায় চড়ল। এক শিক এক শিক করে জানালার এপাশে এসে নামলো থালাবাসন রাখার র্যাকটার উপর। এরপর র্যাকের সাথে লাগোয়া ওয়ারড্রোবটার উপর অতি সহজেই উঠে পড়লো সে।
তারপর আবার বাবার নোটবুকটায় হাত দিল। চোখে রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে শায়লা। ছেলেটা
পুরো তার বাবার মত হবে।
সাহসী।
বুদ্ধিমান।
দৃঢচেতা।
ছেলেটাকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরলো শায়লা।

‘আজ আপনার ছেলে কী করেছে, জানেন?’
হাসিহাসি গলায় শায়লা শুধালো কায়সারকে। কায়সার এখন কাজ করছে তার লেখার টেবিলে। প্রিন্ট করা ছবিগুলো ভালো করে দেখছে। কতগুলো আলাদা করে রাখছে। শায়লার কথা শুনছে বলে মনে হলো না।
শায়লা এসে হাত রাখল কায়সারের কাঁধে। ‘কী নিয়ে এত ভাবছেন?’
গলায় উৎকন্ঠা নিয়ে শুধালো সে।
‘আমাদের কাল সকালেই বেরুতে হবে।
তৈরি থেকো।’ জরুরী গলা কায়সারের।
কোথায় যাবেন, কেন যাবেন, এই ধরনের কোন প্রশ্ন করলো না শায়লা। এর আগেও এইভাবে বহুবার বিভিন্ন
জায়গায় গিয়েছে। পরদিন ভোরে ওরা কোলকাতায় চলে গেল।
তারপর।
তারপর আরো অনেকদিন পর দেশে ফিরে এল ওরা। এর মাঝে ঘটে গেছে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। নির্বিচারে মানুষ
মেরেছে ওরা।
পাকিস্তানীরা।
হানাদারেরা।
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে সব ছারখার করে দিয়েছে। সাংবাদিক – সাহিত্যিক – অধ্যাপক – গীতিকার – সুরকার – কাউকে বাঁচিয়ে রাখে নি। সব মেরে ফেলেছে।
কায়সারের প্রাণের বন্ধুকেও ধরে নিয়ে গেছে ১৪ই ডিসেম্বর।
এই নয়মাসে আমি বসে থাকি নি। বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ধার করেছি।
বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডের জন্য যারা দায়ী তাদের নামধাম ঠিকানা সব পেয়েছি। আমার কাছে ওদের গোপন লিফলেট আছে! যাতে লেখা –
"আমাদের সংগ্রাম শেষ হয় নি – সবে শুরু।"
আমি তাদের কিছুতেই ছাড়বো না।
শেষ সংগ্রাম করে যাব!

বজ্রকন্ঠে সাংবাদিক বন্ধুদের বলল কায়সার।
এখনো তো দেখছি অনেকেই ভদ্রতার মুখোশ পরে বসে আছে! যুদ্ধের নামে কোলকাতায় কারা কী করেছে সব কিছুর
প্রমান আমার কাছে আছে। সময় সুযোগ বুঝে আমি ওসব প্রচার করব।

ওর এইসব কথা শুনে চুপ মেরে গেছিল পত্রিকা অফিসের প্রত্যেকটা মানুষ।
কারো মুখ উজ্জল হলো।
কারো চেহারা অমাবশ্যার মত অন্ধকার হলো। যেন কেউ কালি লেপে দিয়েছে ওদের চোখে মুখে।
সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে কায়সার বের হয়ে গেল পত্রিকা অফিস থেকে।

‘আমার বন্ধুটাকে নাকি বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে!
ওকে খুঁজতে যাচ্ছি আমি’
এক ভোরে এটুকু বলে বেরিয়ে গেল কায়সার। ফ্যালফ্যাল করে ওর গমন পথের দিকে তাকিয়ে রইলো শায়লা।
কিছুই বলল না।
সারাটা সকাল গেল।
দুপুর গড়ালো।
বিকেল পেরোল।
রাত কেটে গেল।
আবার ভোর হল।
আবার! আবার! আবার!
দিন গেল। মাস গেল।
কায়সার আর ফিরে এলো না!

তারপর।
তারপর আরো অনেকগুলো বছর কেটে গেল।
শায়লা এখনো প্রতিদিন বিকেলেই ছাদে আসে। দিগন্ত পানে চেয়ে থাকে।
সেই দৃষ্টিতে কোন অনুভূতি নেই , রাগ নেই, ক্ষোভ নেই। আছে কতগুলো জিজ্ঞাসা?
কেন বিহারী উচ্ছেদের দিনটাতেইম কায়সারকে ডেকে ওই মৃত্যুপুরীতে পাঠানো হলো?
কেন ও নিখোঁজ হবার পর ভালোমত তদন্ত করা হলো না? কেন পুরো ব্যাপারটা ধামা চাপা দেওয়া হলো?
স্বান্তনা স্বরুপ ওদের একটা বাড়ি দেবার পরও কেন ওটা কেড়ে নেওয়া হল?
আর কায়সারে সংগ্রহ করা ঐ দলিল গুলোই বা কই গেল?
যেগুলোতে বুদ্ধিজীবি হত্যাকারীদের নাম পরিচয় ছিল? তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ওসব ডকুমেন্টগুলো কোথাও খুঁজে পায়নি শায়লা। কায়সার কখনোই তার কাজেরব্যাপারে কাউকে কিছু জানাতো না।
শায়লার যেন যেন মনে হয় ওইসব প্রকাশিত হবার ভয়েই কায়সারকে গুম করা হয়েছে। হয়তো তার পিছনে
দেশদ্রোহীদের সাথে সাথেসরকারেরও ভূমিকা আছে। কায়সারের ওইসব দলিল-দস্তাবেদে হয়তো সরকারকেও ফাঁসানোর মত কোন তথ্য আছে। তা না হলে এতসব ‘কেন’ এর কোন উত্তর না পাওয়ার কারণ কী?
যারা জীবন দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিল তারা কী এই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল? স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও দেশকে এমন নাস্তানাবুদ অবস্থায় দেখতে চেয়েছিল?
এখন তো বৃটিশরা নেই, পাকিস্তানীরা নেই, বিহারীরাও নেই। তাহলে কে শোষণ করছে দেশকে?
আমরা নিজেরাই নিজেদের শোষণ করছি। ক্ষমতাধরেরা সাধারন মানুষকে শোষণ করছে।
ছিহ! ধিক্কার এদের। ধিক্কার!

সহসা পদশব্দ পেয়ে পিছনে তাকালো শায়লা। মুনিম দাঁড়িয়ে।
'মিরপুর ১২ নম্বরে পুরোনো এক কুয়ার মুখ পাওয়া গেছে। সিমেন্টে স্ল্যাভ ভেঙ্গে কুয়া থেকে তিনটি মানুষের
খুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
'
কাঁপা কাঁপা গলায় মাকে বলল মুনিম।
শায়লা অদ্ভুত দৃষ্টি মেলে চেয়ে আছে ছেলের দিকে। কেন যেন কোন কথা বেরুচ্ছে না ওর মুখ থেকে।
‘আমি দেখতে যাচ্ছি মা।’ ভাবাবেগ একপাশে সরিয়ে রেখে বলল ছেলেটা। ‘দোয়া করো, যাতে বাবাকে পেয়ে যাই!’
যাই বলেও মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো মুনিম। যদি মা কিছু একটা বলে?
শায়লা তখনো চুপ!
মায়ের দিকে আরো কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে মুনিম চলে যেতে পা বাড়ালো।
‘যা বাবা! তোর বাবাকে খুঁজে নিয়ে আয়!’
পিছন থেকে ভেজা ভেজা গলায় বলল শায়লা।
সূর্যটা তখন অস্ত যাচ্ছে।

উৎস্বর্গ ঃ জহির রায়হান।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১:০৭
৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×