যতই দিন যাচ্ছে আমি ততই “কিন্তু” শব্দটার উপর বিরক্ত হয়ে উঠছি। আমার মনে হয় আমাদের ভাষায় এই শব্দটা তৈরী হয়েছে প্রতারণা করার সুযোগ দেয়ার জন্য। সোজা ভাষায় বলা যায় দুই নম্বুরী কাজ করার জন্য।কয়েকটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমনঃ
১। আমি ড্রোন বানিয়েছি। কি দারুণ সহজ সরল বাক্য। এখন যদি কিন্তু ব্যবহার করি তাহলে বাক্যটা দাড়ায় এমন > আমি ড্রোন বানিয়েছি কিন্তু সেই টা আসলে রিমোট কন্ট্রোল্ড খেলনা বিমান।
২। আমি খুব ভালো science fiction লিখি কিন্ত বিদেশী গল্প থেকে copy করা।
৩। আমি বিরোধী দলের নৈতিক অবক্ষয়, দুর্নীতির ইতিহাস দেখে শংকিত হই কিন্তু বর্তমান সরকারের যথেচ্ছ দুর্নীতি, স্বৈরাচারী আচরন আমার চোখে পড়ে না।
৪। আমি যুদ্ধপরাধিদের বিচারের একজন জান প্রান সমর্থক কিন্তু ট্রাইবুনালের রাষ্ট্র পক্ষের সাক্ষী হয়েও সাক্ষ্য দিতে যাইনি।
৫। আমি পাকিস্থান হয়ে বিমান যুক্তরাষ্ট্রে যাবে বলে সেই বিমান থেকে নেমে গিয়েছি কিন্তু আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাই, যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিলো, এমনকি ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যাকে সহায়তা দিতে বিমানবাহী রণতরী পর্যন্ত পাঠিয়েছিল।
৬। আমি আমেরিকার ইউনিভার্সিটি থেকে পি এইচ ডি করেছি ফিজিক্স নিয়া কিন্তু এক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াইতেছি সি এস ই
৭। আমি সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করি কিন্তু আওয়ামীলীগের নেতা তাতে জড়িত দেখলে চুপ করে যাই।
----- এবার বুঝলেন তো কেন আমি কিন্তু শব্দটির উপর এত বিরক্ত।
বি:দ্র: এখানে উদাহরনের জন্য ব্যবহারকৃত বাক্য গুলো কাল্পনিক। জীবিত বা মৃত বা অর্ধমৃত কোন ব্যাক্তির কর্মকান্ডের সাথে এর বিন্দুমাত্র মিল নেই। কোন ব্যক্তির কথা বা কাজের সাথে মিলে গেলে তা নিতান্তই কাঁকতলিয় এবং এর জন্য লেখক কোন ভাবেই দায়ী নয়। তাই "তোমরা যারা think করো" আশা করি তারা বাক্য দুটিকে মুক্তিযুদ্ধ চেতনার ফিল্টারে ফিল্টারিং করিবে না।