somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১৪ )

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ দশকে এডুইন হাবেলের আবিস্কার মানুষকে “দ্বীপ জগত” বা Island Universe এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পরই শুরু হল মহাকাশে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা। বিজ্ঞান আমাদের জানিয়ে দিল যে মহাবিশ্বে নুন্যতম গ্যালাক্সি বা দ্বীপ জগতের সংখ্যা হল এক মহাপদ্ম বা 10 ^ 9, অর্থাৎ ১০০ কোটি। সমস্ত মহাবিশ্বের এই গ্যালাক্সি সমূহ আবার দলগত ভাবে গুচ্ছায়িত(clustered) । প্রতিটি গুচ্ছ কয়েকটি হতে কয়েক সহস্র উপগ্রহ গ্যালাক্সি(Satellite Galaxy) নিয়ে তাদের স্থানীয় গ্যালাক্সি দল(Local Groups) তৈরি করে। প্রতিটি গ্যালাক্সি পরস্পর থেকে গড়ে এক মেগা পারসেক দূরত্বে অবস্থান করে (প্রায় ৩৩ লক্ষ আলোকবর্ষ)। জানা গ্যালাক্সি সমূহের মধ্যে সর্ব বৃহৎ দলের গ্যালাক্সিগুচ্ছ হল Hercules Cluster যার পরিবারের গ্যালাক্সি, উপ-গ্যালাক্সির সংখ্যা হল ১০০০০. আমাদের অবস্থান থেকে এর দূরত্ব ৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। আমাদের গ্যালাক্সি যে গুচ্ছের অধিবাসী, সেই পরিবারের গ্যালাক্সির সংখ্যা হল ২০ টি।

প্রতিটি গ্যালাক্সির গড় ব্যাস ১০০০০০ আলোকবর্ষ। আমাদের ছায়াপথ বা মিল্কিওয়ে এক অতি সাধারণ গ্যালাক্সি, মহাবিশ্বে যার কোন উল্লেখযোগ্য স্থান নেই। জন গ্রেবিন এই ছায়াপথ বা রাতের যে মহাকাশ আমরা অবলোকন করি, তার সম্পর্কে জানিয়েছেন “ Our Milky way is nothing but a modest Galaxy with no special place in the universe.” আমেরিকান মহাকাশ বিজ্ঞানী Herlow Shapely প্রতিষ্ঠিত করেন ১০০০০০ আলোকবর্ষ পরিমাণ ব্যাসের এই গ্যালাক্সির নক্ষত্রের সংখ্যা ১০০০০ হাজার কোটি (১০০০০০০০০০০০)। তারমধ্যে সূর্য অত্যন্ত অনুল্লেখযোগ্য নক্ষত্র যা গ্যালাক্সির কেন্দ্র হতে ৩০০০০ আলোকবর্ষ দূরের কোন সীমায় পড়ে আছে। আর এই সূর্যের একটি ক্ষুদ্র গ্রহ আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী। তাহলে ভাবুন, আমরা এই গ্যালাক্সির তুলনায় কত ক্ষুদ্র। এই মহাবিশ্বের তুলনায় একটি অণুর চেয়েও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আমাদের পৃথিবী। আর এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পৃথিবীতে প্রাণের বসবাসের উপযোগী আবহাওয়া, প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে কোন স্রষ্টার হাত ছাড়া, আপনা আপনি বা দৈবক্রমে এমনটা শুধু বোকা আর পাগলরাই ভাবতে পারে। কিন্তু আমাদের ডারউইনবাদী, বস্তুবাদী, নাস্তিকরা এমন পাগলের প্রলাপেই বিশ্বাস করেন। তাই নাস্তিকদের আমার নিরেট গর্দভ ছাড়া আর কিছুই মনে হয়না।

এক নাস্তিকের সাথে কথোপকথনের সময় কথা প্রসঙ্গে এটা বলায় সে তো মহাখ্যাপা। আমি বললাম “ আচ্ছা, আপনি আমার একটা প্রশ্নের জবাব দেন দেখি, তাহলে আমি আমার কথা ফিরিয়ে নেব। “ সে বিজ্ঞের মত বলল “ কি প্রশ্ন? জীবনের সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে চাইবেন তো? “। আমি বললাম “ না, আমি জানতে চাইব “জীবন” কি? What “life” is? What do you mean by “Life”? কি সেই বিষয় যার উপস্থিতি একটা বস্তুকে প্রাণযুক্ত বা প্রাণী বলা হচ্ছে? কি সেই পাওয়ার যার অনুপস্থিতিতে জীব জড়বস্তুতে পরিণত হচ্ছে? ব্যাপারটা তো এমন না যে এটা একটা পাওয়ার সাপ্লাই বা ব্যাটারি, যা কার্যক্ষমতা হারালে মেশিন জড় এ পরিণত হচ্ছে আবার সেটা ঠিক করলে বা নতুন পাওয়ার সাপ্লাই যোগ করলে সেটা কার্যক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে। কি সেই জিনিস যার অনুপস্থিতিতে মৃত মানুষকে তার সমস্ত অঙ্গের সবল অঙ্গ দ্বারা প্রতিস্থাপন করার পরও মানুষটি জীবিত হয় না প্রান ফিরে পায়না একটা মেশিনের মত? কেন হার্ট অকেজো হয়ে যাওয়া কোন ব্যাক্তিকে কৃত্রিম হার্ট লাগিয়ে তার শরীরের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে হয় যতক্ষন না নতুন হার্ট প্রতিস্থাপন না করা হয়? মৃত্যু কি? কিসের অনুপস্থিতি মৃত্যু? “
আমার প্রশ্নবাণে সে কিছুটা থতমত খেয়ে গেল। দুর্বল ভাবে কিছু উত্তর দিতে চেষ্টা করল। তারপর বলল “এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মত বিজ্ঞান আসলে এতটা উন্নত হয়নি এখনো। ভবিষ্যতে জানা যাবে। “ আমি বললাম “ আপনারা বলেন বর্তমান বিজ্ঞান তার উন্নতির শিখরে আছে তারপরও বিজ্ঞান এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনা? নাকি ইচ্ছে করেই দেয়না? আর আপনার এই বিজ্ঞানের কতিপয় অপ্রমাণিত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বলে দিচ্ছেন স্রষ্টা বলে কেউ নেই। যেখানে প্রানের সংজ্ঞাই জানেন না সেখানে প্রাণের স্রষ্টা নেই এই কথা যারা বলে তাদের আমি নিরেট গাধা বলবনা তো কি বলব?”

মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১৩ )
১৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যদি এমন হতো.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:২৮

যদি এমন হতো....

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা-দারিদ্র-মহামারী, যুদ্ধবিগ্রহের ধ্বংসযজ্ঞে মানুষে মানুষে, দেশে দেশে সকল বৈরীতা ভুলে একটা সুখী পরিবার গঠন করে দুনিটাকে সত্যিকার ভূস্বর্গ করতে...
শুরু হতো বাংলাদেশ থেকে। সব রাজনৈতিক দল মুক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বিকার ( কবি দাউদ হায়দার স্বরনে তারি লেখা কিছু কবিতা থেকে উৎসাহিত হয়ে)

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৫



জন্মেছি, এও এক ঘটনা মাত্র।
কারও ইচ্ছেতে নয়, কারও অনিচ্ছেতেও নয়।
রক্তের গন্ধে ভরা এক সকালে
আমি নেমে এসেছি, অপ্রত্যাশিত চিৎকারে ।

শহরের ধুলো, গলির বিক্রি হয়ে যাওয়া রোদ,
বাসের পাদানিতে ঝিমিয়ে পড়া শরীর,
সবকিছু দেখেছি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের পাশে আমেরিকা-ইসরায়েল। পাকিস্তানের পাশে কারা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩


গত রাতে ইসরায়েল থেকে ভারতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গেছে একটি কার্গো বিমান। তাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড মিসাইল বিপুল পরিমাণে আছে। এই মিসাইলগুলো অতি নিখুঁতভাবে মেঘ, বৃষ্টি বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৮


শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×