পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে নয় মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণত, প্রতি বছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। তবে, এ বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দিন জানান, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেন্টমার্টিনগামী জাহাজগুলোকে চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করতে দেওয়া হবে না। যদি সরকার ভ্রমণের সময় বাড়ায়, তবে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, দ্বীপে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে শত শত মানুষ। মানবিক দিক বিবেচনায় পর্যটকদের জন্য অন্তত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, করোনার পর থেকে দ্বীপবাসী এখনও হোটেল ব্যবসায় লোকসানে রয়েছেন। এখন যদি দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তারা আরও বড় সংকটে পড়বেন।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা পর্যটন মৌসুমের ওপর নির্ভরশীল। এই সময়টুকুতেই তারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য যথেষ্ট আয় করে থাকেন। কিন্তু, এ বছর পর্যটকদের জন্য সময়সীমা কমিয়ে দেওয়ায় তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
পর্যটন বন্ধ থাকার কারণে শুধু ব্যবসায়ীরাই নন, দ্বীপের সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অনেক পরিবার পর্যটকদের উপর নির্ভর করে তাদের জীবন চালায়। তাই, এই সিদ্ধান্ত তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হয়তো কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার উপর এর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা হয়তো পূরণ করা কঠিন হবে।
এই পরিস্থিতিতে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সরকারের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা উচিত। এছাড়াও, পর্যটন মৌসুমের সময়সীমা বাড়ানো যায় কিনা, তা বিবেচনা করা যেতে পারে।
সেন্টমার্টিন শুধু একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি অনেক মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস। তাই, এর উন্নয়নে সরকারের আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:০৯