ছেলেমেয়ারা প্রেম করলে বাপ-মায়ের বহুল প্রচলিত ডায়লগ হচ্ছে, "পড়াশোনার ক্ষতি হবে"! আসলেই কি পড়াশোনার ক্ষতি হয়? ভিকারুন্নিসার ৮০ পার্সেন্ট(বেশিও হতে পারে) মেয়েই স্কুল থেকেই প্রেম করে! ফিজিক্যাল রিলেশনেও জড়াইয়া পড়ে। কই? এরা তো সবাই গোল্ডেন এ+ পায়! আসলে বাংলাদেশের যে পড়াশোনার সিস্টেম, কেউ তিন মাস পড়লেই এ+পেতে পারে! সুতরাং "পড়াশোনার ক্ষতি" টার্মটা প্রযোজ্য নয়!
.
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে "প্রেমিক-প্রেমিকা" রা অনেক পিছিয়ে। প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চান্স পায় না বললেই চলে। (যেহেতু কিছুটা ক্রিয়েটিভিটির দরকার)
ইউনিভার্সিটিতেও প্রেম করার পরও অনেককে ভালো রেজাল্ট করতে দেখেছি। তবে সাধারণত ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড হতে পারে না!
.
প্রেম করলে প্রধান সমস্যা হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হয়। একটু একটু করে আপনার ভেতরের সুন্দর সুন্দর চিন্তাগুলোকে একদম ধ্বংস করে দেয়। এই স্লো পয়জনটা কারো মধ্যে ঢুকলে ভেতর থেকে ধীরে ধীরে মানুষটার প্রাণশক্তি নষ্ট করে দেয়! বাইরে ঝকঝক করলেও, চাকচিক্য থাকলেও ভেতর থেকে কুড়ে কুড়ে খায়!
.
তার দুনিয়াটাই অনেক ছোট হয়ে আসে। দুনিয়ার অনেক ইন্টারেস্টিং জিনিস থেকেই বঞ্চিত হয়! নির্মল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। নানাধরনের যন্ত্রণা তো আছেই।
.
বাঘ সাধারণ মানুষের মাংস খায় না, কিন্তু যে বাঘ একবার মানুষের মাংসের স্বাদ পায়, সে বারবার মানুষের মাংস খেতে চায়! প্রেমিক-প্রেমিকারাও সেইম। যে জীবনে প্রেম করে নাই, সে থাকতে পারে। কিন্তু একবার যে প্রেম করছে, সে বারবার করতে চায়, এমনকি বিয়ের পরেও সে নিজেকে সামলাতে পারে না।
.
ছোটবেলায় সিনেমাতে দেখতাম, পুলিশ অফিসার ছোটভাই মায়ের কসম দিয়ে সন্ত্রাসী বড় ভাইকে আলোর পথে ফিরে আসতে বলে। "এই পথে ঢুকা যায়, বের হওয়া যায় না" বড় ভাইয়ের ডায়লগ।
প্রেমিক-প্রেমিকারাও সেইম। একবার এইপথে পা বাড়ালে বের হওয়া অনেক কষ্ট।
.
ছয়মাস একবছর প্রেম করার পর আপনারই বিতৃষ্ণা চলে আসবে। জীবনটাকে কারাগারের অন্ধকার কোনো প্রকোষ্ঠের চেয়েও ভয়াবহ মনে হবে। ব্রেক আপ হলো। আহ! মুক্তি! কিছু দিন স্বাধীনতার সুখ। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই আবার "সেই দিনগুলো"কে মিস করবেন! মজার স্মৃতিগুলো মনে পড়বে। আবার আরেকটা প্রেমে পড়ে যাবেন!
.
.."ভাই! আপনি এতকিছু জানলেন কেম্নে? নিশ্চয়ই আপনিও....."
নাহ, সবকিছুর জন্য অভিজ্ঞতার দরকার নাই!
যে যত কথাই বলুক, একটা সময় পর, সব ছেলেমেয়েরই মন চায়, বিপরীত লিংগের কারো সাথে কথা বলতে, একটু হাসি-কান্নার কথা শেয়ার করতে। তাছাড়া চারপাশের পরিবেশ, বন্ধু বান্ধবের দেখাদেখি নাটক সিনেমার প্রভাবে সে অনুভুতিটা আরো তীব্র হয়!
.
তবে এই কষ্টের তুলনায় প্রেম করলে এর চেয়ে লক্ষ গুন বেশি কষ্ট! প্রেম করায় মজা অবশ্যই আছে। কিন্তু যদি সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কিংবা ডিসএডভান্টেজের কথা ভেবে অথবা ধর্মীয় ব্যাপার চিন্তা করে প্রেমে না জড়ান, এতে হাজার গুণ মজা। একবার যে এই মজা পাইছে, একমাত্র সে-ই এই মজা বুঝবে, বাইরে থেকে কেউই অনুভব করতে পারবে না। বিলিভ মি।
.
কিন্তু....
কিন্তু মানুষের মন বড়ই অদ্ভুত জিনিস! কখন কাকে ভালো লেগে যায়, বলা যায় না। যদি দেখেন আপনি কন্ট্রোল করতে পারবেন না, তবে যাকে ভালো লাগলো তাকে জানান। দুজনের পছন্দ হলে বিয়ে করে ফেলতে পারেন।
মেয়ে ইন্টার, ছেলে অনার্সপড়ুয়া হলে বিয়ে কোনো বাধাই না, ইচ্ছা শক্তি-ই যথেষ্ঠ!
মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট। তেমনি মানুষের ভেতরের প্রাণশক্তি, বিপরীত লিংগের প্রতি দৈহিক মানসিক আকর্ষণও নির্দিষ্ট! আপনি যত খরচ করবেন, ততই কমবে। বিয়ের আগে প্রেম করলে দাম্পত্য জীবনে গিয়ে আপনার পার্টনার ঠকবে। আপনারও অনেক অনেক প্রব্লেম! আপনি নিজেই পার্থক্যটা বুঝবেন!
কাউসার আলম
.
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৬ দুপুর ১:১২