somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেলানীর হত্যাকারী অমিয় ঘোষ বেকসুর খালাস : রায় প্রত্যাখ্যান : দীপু দি কোথায়?

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রতিবেশি বন্ধু দেশের এমন আচরণে হতাশ দেশ ও জাতি। আলোচিত সীমান্ত হত্যা মামলার একমাত্র আসামী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দিয়েছে ভারতীয় আদালত।

দেবেই তো? না দিয়ে কি করবে তারা। গোয়ালা কখনো বলে না তার দুধ খারাপ।

কিন্তু আমার প্রশ্ন আমাদের প্রিয় দীপু দি কোথায়? তার কোন বক্তব্য কোথাও দেখছি না।

ভারতের কুচবিহার ১৮১ বিএসএফ সদর দপ্তরে বিশেষ আদালত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্ট এ রায় প্রদান করে। রায় প্রদানের পর অমিয় ঘোষকে তার ১৮১ কোম্পনীর হাওলায় ছেড়ে দেয়া হয়। এই রায় অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের পশ্চিম বাংলার প্রতিনিধি মধুপূর্ণা দাস তাকে ফোনে এই রায় নিশ্চিত করেছেন। ভারতীয় পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রায়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

রায় প্রকাশের খবর ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামের কাছে পৌঁছলে তিনি হতবাক হয়ে যান। সাথে সাথে এ রায় প্রত্যাখ্যান করেন তারা।

তিনি জানান, হত্যাকারী নিজে হত্যার কথা স্বীকার করে কিভাবে তাকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয় জানিনা। আমার মেয়েকে বিয়ে দেবার জন্য ভারত থেকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছিল। সীমান্ত কাটাতারে তাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে দালালসহ ভারতীয় বিএসএফ। এই রায় আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার চাইবো।

রায় শুনে ফেলানীর মা জাহানারা বেগম জানান, এই ধরণের রায় হলে সেটা ঠিক রায় হয় নাই। আমি ফাসির রায় চাইছিলাম। ভারত সরকার রায় নিয়া তামাশা করছে। আমার মেয়ে ঠিক বিচার পাইল না।

ফেলানীর মামলার শুনানিতে অংশ নেয়া বাংলাদেশের আইনজীবী কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, ‘এই রায়ে ন্যায়বিচার ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। হত্যাকারীর বিচারের মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা বন্ধের যে সম্ভাবনা তৈরী হয়েছিল তা তিরোহিত হলো। এই রায় মানবাধিকারের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং আত্মস্বীকৃত খুনকে বৈধতাদানের শামিল। এ রায় বহাল থাকলে আগামীতে সীমান্ত এলাকায় মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা আরো বৃদ্ধি পাবে। কারন অভিযুক্ত আসামি নিজে খুনের কথা স্বীকার করেছে আদালতে।

এছাড়া সাক্ষ্য প্রমানেও অপরাধ প্রমানিত হয়েছে যে- বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ গুলি করে ফেলানিকে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, সীমান্ত অপরাধ হিসেবে বিএসএফ পক্ষ নিজে বাদি হয়ে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি তাদেরই এক সদস্য অমিয় ঘোষকে আসামী করে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করে। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। ভারতীয় পুলিশও তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করে।’

কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, ভারতের বিএসএফের কাছে মামলার রায়ের ব্যাপারে একাধিক বার যোগাযোগ করে বিষয়টি চেষ্টা করা হলেও এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তিনি জানান, শুনানীর সময় আসামী পক্ষ নানাভাবে কনটাডিকশন তৈরীর চেষ্টা করলেও ফেলানীর বাবা ও মামা সঠিকভাবে স্বাক্ষ্য দেয়ায় আশা করা হয়েছিল আসামীর সর্বোচ্চ সাজা হবে।

গত ১৩ আগষ্ট ভারতের কোচবিহারের সোনারী এলাকায় বিএসএফের উদ্যোগে গঠিত একটি বিশেষ আদালতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ৫ সদস্যের বিচারক মন্ডলির সভাপতিত্ব করেন বিএসএফর গৌহাটি ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি সিপি ত্রিবেদী। বিচারের প্রথম দিন গত ১৩ আগষ্ট মামলার নথিপত্র জমাসহ একমাত্র আসামী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের জবানবন্দী নেয়া হয়। অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারায় (অনিচ্ছাকৃত খুন) এবং বিএসএফ আইনের ৪৬ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

এ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং সর্বো নিম্ন ৭ বছর কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।

গত ১৯ আগষ্ট আদালতে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ সাক্ষ্য দেন। এ বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী ভারত থেকে বাবার সাথে কুড়িগ্রামে আসার পথে অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়ে কাটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ ৫ ঘন্টা ঝুলে থাকার ছবি সংবলিত সংবাদটি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হয়।

হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবী ওঠে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে। এরই প্রেক্ষিতে অবশেষে দীর্ঘ আড়াই বছর পর ভারতের কোচবিহারে শুরু হয়েছে বিচার কাজ।




০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঈশ্বরের ভুল ছায়া – পর্ব ৩ | ভূমিকা-ব্রীজ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৮



"তুমি যদি বাতাসকে ভালোবাসো, তাকে বশ করো না—তার সুর বোঝো। কারণ বাতাস একবার থেমে গেলে, তার কণ্ঠ আর কখনো শোনা যায় না।"

“ঈশ্বরের ভুল ছায়া” সিরিজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষার ভবিষ্যৎ ভারতে নিহিত ইসরায়েল ও ভারতের ইসরায়েলি প্রতিরক্ষার ভবিষ্যৎ ভারতে নিহিত

লিখেছেন ঊণকৌটী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১৩


উভয় বাজারে নেতৃস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলির যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটছে। এটি ইসরায়েলকে পশ্চিমাদের উপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করছে, যা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের যুদ্ধে সমস্যাযুক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৮


শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কনফ্লিক্ট জোনে পরিণত করলো ড. ইউনুসের অবৈধ দখলদাররা ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:২১



শেষ পর্যন্ত ড.ইউন তার আন্তর্জাতিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখালেন! উনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কখনোই কোন কাজ করেননি ।আমাদের কোনো দুর্যোগে কখনো পাশে দাঁড়িয়েছেন তার কোনো দৃষ্টান্ত নেই । যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত একটি মানবিক দেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৩৮



যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। আমরা বাংলাদেশি তোমরা ভারতীয়। আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই। ভারতের বাংলাদেশের সাথে সাংস্কৃতিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×