( এক )
কত ফুটন্ত সকাল পেরিয়ে,
কত বিষণ্ণ দুপুর মাড়িয়ে,
গোধূলির ম্লান আলোয় স্নাত হয়ে,
এ কে তুমি?
কে তুমি, চলেছ, নিরালার সন্ধানে?--------------------------
অবসর! অখন্ড অবসর। যার কোন ভাষা নেই, যার কোন আশা নেই। এ এক নির্লিপ্ত জীবন দহন। একদিন সারাদিনের খাটুনিতে, যে ঘাম শরীরের প্রতি রোমকূপ দিয়ে ঝরে পড়ত, আজ তাই-ই হৃদয় নিঙ্গড়ে রক্ত হয়ে চুঁইয়ে আসে------কেউ মুছিয়ে দেয় না, এ-যে দেখা যায় না?
শত ক্লান্তি দূর করে দিত সামান্য একটু বিশ্রাম! আজ নিরন্তর বিশ্রামও সেই একই ক্লান্তি ডেকে আনে, তাকে দূর করব কি দিয়ে?
( দুই )
আজই, এইমাত্র মাকে হোস্টেলে রেখে এলাম। হ্যাঁ, হ্যাঁ বৃদ্ধ বয়সের হস্টেলই এটা। মাত্র আট বছর বয়সে যে নাকি পুতুল খেলতে খেলতে, আর সখীদের সাথে পূণ্যি-পুকুর ব্রত করতে করতে, এক মায়ের কোল থেকে আর এক মায়ের কোলে এসে উঠেছিল--------------আমার সেই মা, আজ থেকে তার বাকী জীবন এখানেই কাটাবে। কি করা যাবে? এছাড়া যে আর কোন উপায় ছিল না।
লেখা-পড়ার জন্য যাকে কোনদিন হস্টেলে থাকতে হয়নি, জীবিকার প্রয়োজনেও যাকে কখনও বাইরে বেরোতে হয়নি, শুনতে কষ্ট হলেও, এটাই একমাত্র সত্য যে,----------আজ মৃত্যুর অপেক্ষাতেই তাকে এখানে দিন গুনতে হবে।
( তিন )
আমি, দাদা আর বৌদি গাড়ীতে করে মাকে নিয়ে যাওয়ার সময়, মা যখন আমায় বারবার জিজ্ঞেস করছিলেন,
-"আচ্ছা টুকি, তোরা আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?-" আমি শিশুর মত করে মাকে বোঝাতে চাইলাম,
-"ওখানে দেখবে তোমার মত অনেক বুড়োবুড়ী আছে। সবাই তোমরা একসাথে থাকবে। তোমার কোন কাজ করতে হবেনা। সব ওরাই করে দেবে। তোমার খাওয়া, পরা সব ওরা গুছিয়ে দেবে। অসুখ হলেও ওরাই সেবা করবে। সম-বয়সীদের সাথে গল্প করে, দেখবে তোমার কেমন দিন কেটে যাবে।-"
-"নাঃ, আমি ওখানে কারুককে চিনি না, ওখানে থাকতে আমার ভাল লাগবেনা।-"
-"থাকতে থাকতেই চিনে যাবে। দেখবে তোমার কোন অসুবিধাই হবেনা। আর আমরাতো, মাঝে মাঝেই ওখানে তোমায় দেখতে যাব।-"
-"কেনরে, আমায় ওখানে দিয়ে আসবি? আমিতো বাড়ীতেই বেশ থাকতে পারি।-" সাথে সাথে মাকে বলি, একটু জোর দিয়েই বলি, -"আচ্ছা মা, তুমি কি কিছুই বোঝনা ? না বুঝতে চাওনা? সারাদিনে যারা একবার তোমায় মা বলেও ডাকেনা, কখনও ভুলেও একটু পাশে এসে বসে না-------------------তারাওতো মাসে একবার অন্তত মায়ের পাশটিতে গিয়ে বসবে? পরীক্ষার ছলে হলেও একবার গায়ে হাতটি বুলিয়ে দেখবে, এই বুড়ী আরও কতটা দিন টিকবে? খেতে না চাইলেও, মুখে সন্দেশ গুঁজে দেবে। ভয় কাটলে, তবেই না মানুষ কাছে আসে?-"
( চার )
------আট বছরের বালিকা যখন খেলতে খেলতে, বগলে শাড়ীর পুঁটলি নিয়ে, শাশুড়ীর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ত------------------আদর করে মা তাকে বুকে তুলে নিতেন , আবার গুছিয়ে শাড়ী পরিয়ে দিতেন, আর বলতেন, -"তুমি এ-বাড়ীর বড়-বৌ, বৌরা কি ও-রকম আদুল গায়ে ঘুরে বেড়ায়"?
ওমনি দেওর-ননদ সঙ্গী নিয়ে ছুট্টে পালিয়ে যেত কোন বাগানে। যে খেলার পুতুল সে ফেলে এসেছে, তার মায়ের কাছে, সেই আবার পুতুল হয়ে ঘুরে বেড়ায় আর এক মায়ের হাতে।
দিন যেতে বেশী সময় লাগেনা। একদিন সেই বালিকাই হয়ে ওঠে , সংসারের একছত্র-কর্ত্রী। ছেলে-পুলে নিয়ে ভর-ভরন্ত সংসার। সব এক হাতে সামাল দিয়ে, তার আর খেলার সময় হয়ে ওঠেনা।
চার ছেলে এক মেয়ে নিয়ে গড়ে ওঠে সুখের সংসার। স্বামীর ছায়ায়, সন্তানের মায়ায় নিবেদিত মন-প্রাণ। সন্তান গর্বে যেন আত্মহারা। এক মেয়ের বিয়ে দিয়ে, চার-চারটা মেয়ে এনে ঘর ভরে যায়। উপচে পড়া সুখ। সামনের দিনের জন্য, না জানি আরও কত বেশী সুখ জমা হয়ে আছে। ভাবতেই মনটা নেচে ওঠে।
এত সুখ বুঝি বহন করাও যায়না। তাই ভরা সংসার গড়ে, সব কর্তব্য সমাপন করে, সকলের প্রয়োজনের মাঝেই ফুরিয়ে যান।---------পঞ্চাশ বছরের সঙ্গীনিকে একলা ফেলে চার-চারটা পাষন্ডের কবলে--------------------
আজ নিঃস্ব-ও নই, নিঃসন্তান-ও নই। তবুও বড় একা। চারপাশ ভরা কিন্তু ভেতরটা একদম ফাঁকা।
কিছুই দেখলেনা, কিছুই বুঝলেনা। ভালই হোল, দুজনে মিলে যা ভোগ করতাম, তা সব একাই কেমন ভোগ করছি।------------তুমিতো দেখলেই না, তোমার সন্তানরা, আমায় কেমন আদর-যত্ন দিয়ে আগলে রেখেছে। কোন কাজতো করতেই দেয়না, কোন কথাও বলতে হয়না।
কিছু জিজ্ঞেস করলেই, ছেলে-বৌ, নাতি-নাতনি একেবারে খলবলিয়ে ওঠে---------"ও তুমি বুঝবেনা, ও তুমি বুঝবেনা। সব ব্যাপারেই তোমার এত কৌতূহল, ভাল্ লাগেনা।-"
তবে ভাল ওদের বোধহয় কারুককেই লাগেনা। ওদের নিজেদেরই কি ওদের ভাল-লাগে? কিজানি এটাই হয়ত স্বচ্ছলতার নমুনা।
( পাঁচ )
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই, চার ছেলে চার যায়গায় চলে যায়। নিজেদের মাকে, তিন মাস তিন মাস করে ভাগ করে নেয়। কিন্তু এই তিন-মাস সময়তো নেহাৎ কম নয়? নব্বই, নব্বইটা দিন! বড়ই চিন্তার বিষয়! একেক জনের একেক রকম অসুবিধা।
বড় ছেলে ডাক্তার, তার বাড়ীতে সব-সময় রুগী লোকজন লেগেই আছে। এরমাঝে মা-বুড়ী আর এক উৎপাত।
মেজ ছেলের বাড়ীতে নিত্য পার্টি লেগেই আছে, মা থাকলে এসব ব্যাপারে নানান অসুবিধার সন্মুখীন হতে হয়।
সেজ?-------সে-তো বড়-লোকের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। ওনাদেরতো মেয়ে ছাড়া দেখাশোনা করার আর কেউ নেই, সুতরাং ছেলেকে তার শ্বশুর বাড়ীতেই থাকতে হয়। সেখানেতো আর মায়ের যাওয়া চলেনা?
সবার সেরা ছোট। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরী করে। তাদের বাড়ীতে নাকি যায়গাও কম। মাত্র চার-খানা ঘর। একটি স্বামী-স্ত্রীর জন্য। আর দুটো ছেলে-মেয়ের দখলে, আরও একটা তাদের আদরের জিমির। সুতরাং মা গেলে সত্যি অসুবিধাই হয়।
মা তবে কোথায় থাকবে?---------কোথায় যাবে? চার ছেলের সংসারেও , মায়ের তাই আর জায়গা কূলোয়না। সবারই অবশ্য উপযুক্ত যুক্তি আছে।
( ছয় )
মানুষ যখন তার সামান্য কর্তব্যের মূল্য-বোধটুকুও হারিয়ে ফেলে, তখন তার ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়াও অন্যায়। এসব ব্যাপারে একটু উদার হতে পারলেই বোধ হয় ভাল। আগেকার দিনেও-তো পঞ্চাশ বছরের উর্দ্ধে বলা হত বাণপ্রস্থে যাও------------তা এখন বন কোথায়? যে বানপ্রস্থে যাবে? সুতরাং বৃদ্ধাবাসে যাও।
মৃত্যু পথ যাত্রীও তার প্রিয়জনের চোখে ভালবাসা গোনে। সে ফল যখন শূন্য, তখন তার কাছে কি আবাস, কি বৃদ্ধাবাস সবই সমান। আর তীর্থে বা আশ্রমে গিয়েই বা কি করবে? যার নিজেরই এখন সেবার প্রয়োজন, সে ওখানে গিয়ে কোন দেবতার সেবা করবে? বরং সম-ব্যাথীদের মনের আয়নায়, নিজের কষ্ট কিছুটা হয়ত লাঘব হবে।
( সাত )
শনিবার, শনিবার টিটোকে নিয়ে আবৃত্তির ক্লাসে যেতে হয়। দাদার মেয়ে টুসিও সেখানে নাচ শেখে। ক্লাস হয়ে গেলে, টুকিকে না নিয়ে ও কিছুতেই বাড়ী যাবেনা। এ বাড়ীতে আমার আর আলাদা কোন সম্বোধন নেই। ছোট বড় সবার কাছেই আমি টুকি। সকলেই, সত্যিই আমায় খুবই ভালবাসে। বাচ্চারাতো, টুকিকে দেখলে একেবারে লাফিয়ে ওঠে।
সেদিন বিকেলে, সকলকে একসাথে পাওয়াও যায়। খাওয়া -দাওয়া , কথা-বার্তা বলে বেশ আনন্দেই সময়টা কাটে।----------------কিন্তু নিজের মায়ের প্রতি যে অশ্রদ্ধা লক্ষ্য করি, তাতে আমি আর কতটুকুই-বা খুশি হতে পারি?
সারা জীবনের এত সঞ্চয়, এত প্রতিষ্ঠা নিয়েও মাকে দেখি কেমন নির্বিকার। শিক্ষিত, মার্জ্জিত সংসারে, যে নিঃশব্দ অবহেলা প্রত্যক্ষ করি, তা বড়ই বেদনা-দায়ক।
( আট )
পাশেই মায়ের খবর না জানলেও, আমার শাশুড়ীর খবর কিন্তু সবাই নিয়মিত রাখে। বড় বৌদি-তো সেদিন বলেই ফেলল, -"তোমার শাশুড়ী সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।-"
মা বোকার মত সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, কি-যে ব্যাথা বুকে বাজে, সে আমি বুঝি। এ-যেন শুধুমাত্র আঙুল দিয়েই চোখ দেখান নয়, চোখ খুঁচিয়ে তবে চোখ দেখান। আর চুপ থাকতে পারিনা, বলি,
-"কার সাথে কার তুলনা করছ বৌদি? যে নাকি সারা জীবন বাইরে বাইরেই কাজ করে কাটালেন। এখনও সারাদিনে কারুর দিকে তাকাবার ফুরসুতটুকুও পান-না । কিজানি, ওনারও হয়ত মনে কোন আক্ষেপ থেকে থাকতে পারে , যা হয়ত আমরা বুঝতেই পারিনা?-"
দাদারাও যেন কেমন, আরে তোদের দেখেইতো বৌরা শিখবে
তোরাতো আর মাকে আজ নতুন দেখছিস না? দুধের দাঁত পড়বার-ও আগে যে নাকি একগলা ঘোমটা টেনে, বার-বার হোঁচট খেয়েও আবার উঠে দাঁড়িয়েছে----------------------------সে কি করে পাল্লা দেবে, আমাদের এই সভ্য সমাজের সাথে?
কজনাই-বা পারে, আমোদিনির মত, মুখ বুজে দিনলিপি রচনা করে যেতে?-------আমরাই কি পারি, এক-গলা ঘোমটা টেনে, ঘরের সব চাইতে কোনটিতে দিন-রাত বসে থাকতে? না,না পারিনা। সে-রকম মাও হয়ত আমাদের অনেক কিছুই পারেনা। শিখিয়ে, পড়িয়ে, গড়িয়ে নে-না। দেখবি, তোদের পছন্দ মত সমান তালে না হলেও, কিছুটাতো মানিয়ে যাবেই।
যা গড়তেই পারবি-না, তা ধ্বংস করতে কি এতটুকু-ও লজ্জা হয়না?
মনে মনে ভাবি, দিনের পর দিন, যে বিষের ধোঁওয়া এই শিশু-গুলোর মনে চারিয়ে দিচ্ছিস, সেটা যেদিন উদ্গীরণ হবে, সেদিন আরও ভয়ঙ্কর!
( নয় )
প্রত্যেকবার ঘুরে এসেই ভাবি, আর যাবনা ও বাড়ী। কিন্তু কদিন পরই কি যেন আমায় টেনে নিয়ে যায়। ইদানিং ব্যাপারটা ক্রমশই এমন জটিল হয়ে যাচ্ছিল-যে আমি আর সহ্য করতে পারলাম না।
তাই , সেদিন টুসির জন্মদিন উপলক্ষ্যে বড়দার বাড়ীতে সকলে যখন একত্র হলাম, তখন আমিই কথাটা পাড়লাম। কারণ এতদিন সকলেই আকারে-ইঙ্গিতে এই কথাটাই বলতে চাইছিল, কিন্তু ঠিক সাহস করে উচ্চারণ করতে পারছিল না। সে-যাইহোক, ছোট-বোন এবং মেয়ে হিসেবে আমার-ও-তো কিছু করণীয় নিশ্চয়ই আছে , নাকি? তাই যথা সম্ভব কারুর সন্মান ক্ষুন্ন না করে এবং কারুককে ছোট না করে , আমি যখন সর্ব-সমক্ষে মাকে বৃদ্ধা-বাসে রাখার প্রস্তাব পেশ করলাম, সকলেই মুখে, আকাশ-ভাঙ্গা এক অপ্রস্তুত ভাব ফুটিয়ে, মায়া জড়ানো দৃষ্টি মাটিতে নিক্ষেপ করে------------আন্তরিক-ভাবেই সুখী হয় বুঝতে পারি।
টাকাতো কোন সমস্যাই নয়। আর সেটার জন্য কেউ চিন্তাও করেনা। সুতরাং আমিই উদ্যোগী হয়ে একটা সু-ব্যাবস্থা করতে নেবে পড়লাম। আর পুঁজির অভাব না থাকলে এসব ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হওয়ার কথাও নয়। সুতরাং অতি সহজেই, নিজেদের পছন্দমত ও সুবিধা মত, মার জন্য স্থান হয়ে যায়।
( দশ )
তবে-কিনা, এই যাওয়াটা তখনই সুখের ও সুন্দর হয় , যে যায়, সে যদি স্বেচ্ছায় যায়। কিন্তু কজন আর পারে, সংসারের এই ভাল-মন্দের মায়া-জাল ছিন্ন করে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে?-----------এর জন্যে-ও কিছুটা প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে।
এসব যাদের ভাবায়, তারা হয়ত মনে করে, একটা বিশেষ সময়ের পর আর সংসারে থাকব-না। সে আশ্রমেই হোক, কি বৃদ্ধা-বসেই হোক, কি তীর্থেই হোক।------------সেক্ষেত্রে , সংসার তাকে মুক্তি দেয়-না, সংসারকে সে মুক্তি দেয়। কিন্তু এই চিন্তা-ধারার জন্যেও-তো কিছুটা জ্ঞানের প্রয়োজন আছে।
যে জ্ঞান মানুষকে মোহাচ্ছন্ন করে-না, করে মোহ-মুক্ত।
সামান্য অক্ষর জ্ঞান-হীন, আশি বছরের বৃদ্ধা---------------যে সারা জীবন কেবল সংসারের চিন্তা করে, সকলকে খাওয়াতে আর খেতেই ভালবেসেছে, সে কোথায় পাবে এই জ্ঞান?
তবুও অনেকগুলো নিশ্চিন্ত সুখের মুখ আমায় বাধ্য করে মাকে দূরে সরিয়ে দিতে। দিনে-দিনে, তিলে-তিলে, এই মানসিক নির্য্যাতন অপেক্ষা শারীরিক এই নির্বাসন দন্ড বোধ-হয় শ্রেয়।
( এগার )
মাকে রেখে ফেরার পথে, আমার ভবিষ্যত কর্ণধার টিটোর স্কুল বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইলাম। বাসের কন্ডাক্টার, দরজাটা খুলতেই, টিটো যেভাবে দুহাত ছড়িয়ে, সারা মুখ হেসে আমার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, যেন মনে হোল কত যুগ ও আমায় দেখেনি। ওর নিষ্পাপ ভালবাসা, যেন আমার নিষ্ঠুরতাকে ব্যাঙ্গ করে। শিশু-সুলভ চপলতায়, প্রতিদিনের মত আজও, আমায় হাজারো প্রশ্ন করে চলে।------------------আজ আর আমার ওর কথার জবাব দিতে ভাল লাগে-না। নিজের কাছেই নিজেকে লুকোবার জন্য ওকে কোলে তুলে নিয়ে তাড়াতাড়ি পথ চলতে থাকি। কানের পাশেই, টিটোর নরম, ছোট্ট বুকের ধুকপুকুনিতে যেন শুনতে পাই,
সমবয়সীর বুকে মুখ গুঁজে, আমার ফেলে আসা মায়ের ফোঁপানোর শব্দ।
মুক্তি! মুক্তি কোথায়? মুক্তি নেই, মুক্তি নেই-----------------আমি জানি, আমৃত্যু বিবেকের এই দংশন আমায় তাড়া করে ফিরবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:৫১