সেদিন এটিম বুথ থেকে টাকা তুলতে গেছিলাম আর একটু শুনার চেষ্টা করলাম দুজন নিরাপত্তা রক্ষীর আলাপ..খুবই মজা লাগছিল শুনে যে একজন বলে চাঁদে আসলেই দেখা গেছে কারন তিনি সেইরম একখান মানুষ-----আর একজন বলে না এইটা হতে পারে না মানুষ তিনি যাই হউক চাঁদে দেখা যাওটা বাড়াবাড়ি..
অনেক্ষন শুনলাম তাদের তর্ক-বিতর্ক..এক পর্যায়ে মনে হল উনারা হাতাহাতি শুরু করে দিবেন..কয়েকজন এসে আবার বলল ---এই সব করে লাভ নাই সবই রাজনীতি---আপানারা শুধু শুধু এইসব নিয়ে তর্ক করে কি লাভ বলেন..
পরে উরা উত্তর দিলেন যা শুনে মনটা ভরে গেল..'নারে ভাই আমরা এইরম সারাদিন করি--তয় আবার দুজন মিলে একসাথে বাড়ি যাই-একজন আরেকজনের বিপদে কাছে থাকি--তর্ক-মতবিরোধ মানে এই নয় যে তার জন্য আমরা নিজেরা মারামারি করব---আমরা হেই দুই নেতৃ ও তাদের দলের চেয়ে ভাল

এই যে মানুষগুলো বেশী শিক্ষিত না, তবে শিক্ষিত মানুষের চেয়ে মনে হইল অনেক বিভেকবান। আজকে এদের কেউ একজন সাঈদীর পক্ষে কথা বললে আমরা তাকে বলে দেই রাজাকার-যা পাকিস্তান চলে যা, আর বিপক্ষে বললে বলি নাস্তিক--তোর জায়গা এই দেশে হবে না..অভাগা জাতি আমরা।
আজকে আসলেই যুদ্ধ্যাপরাধীর বিচারের নামে দেশে একটা রাজনৈতিক খেলা চলতেছে আর এর বুলি হচ্ছে সাধারন মানুষ। আমি কেন রাজনৈতিক খেলা বললাম----???
হা রাজনৈতিক খেলাই বটে!!!!! এইখানে দুইটা পক্ষ বলে আমরা বলি, একটা রাজাকার আর একটা বিচারপ্রার্থি----আসলে না, আমার চোখে একটা জামাত-শিবির আর একটা এন্টি-জামাত-শিবির। এর কারন আমার কাছে স্পষ্ট
১। আজকে যাদের বিচার হচ্ছে তারা সবাই কি আসলেই যুদ্ধ্যাপরাধী? না আমার মনে হয় না..আমার মনে হয় না সাঈদী যুদ্ধ্যাপরাধী..আমি বিচার হবার আগে তাই মনে করেছিলাম যে সে যুদ্ধ্যাপরাধী..তবে রায়ের পর তা মনে হয় না..কার যে দুইটা মামলায় তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তার একটাতে ও সে জড়িত নয় যা রায়ের মধ্যেই আছে..একটা মামলার বিচার ১৯৭২ সালে হয়ে গেছে যেটাতে মৃত ব্যাক্তির স্ত্রীই মামলা করেছিল আর সেখানে সাঈদী ছিল না। বিস্তারিত (Click This Link Click This Link) স্বামী ইব্রাহীম কুট্টিকে গুলি করে হত্যা করার সময় মমতাজ বেগমের হাতেও গুলি লাগে। মমতাজ বেগম এখনো জীবিত। কিন্তু তাকে কি স্বাক্ষী করা হয়েছিল এই মামলায়? কেন?
অন্য মামলার স্বাক্ষী যাকে গুম করা হয়েছে সে কি বলে দেখুন (Click This Link)
অতএব আমার মতে সাঈদী নির্দোষ, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার মাত্র। তাইলে কি বলব এইখানে যুদ্ধ্যাপরাধীর বিচার হচ্ছে নাকি রাজনৈতিক বিরোধীতার বিচার হচ্ছে?
২। আমি যুদ্ধাপরাধীর ন্যায় বিচার চাই। কোন নিরপরাধীর রাজনৈতিক বিচার মানি না, সাঈদীর বিচার ন্যায় বিচার হয় নি। গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, সাকা এদের বিচার করা সহজ কারন অনেক প্রমান আছে এদের বিরূদ্ধ্যে, অথচ এইসব নিয় তামাসা করা হচ্ছে, আসল অপরাধীকে রেখে যাকে বড় প্রতিপক্ষ মনে হয় তাকে ফঁসি দিব---কারন যাই হউক তাল গাছ আমার--এইসব করলে কি হতে পারে দেখাই গেছে..গত ২৮শে ফেব!!
৩। শাহবাগ, প্রথমে শুরুটা ছিল দারুন, গন দাবি হল 'যুদ্ধাপরাধীর বিচার' যদিও আমি বলি 'যুদ্ধাপরাধীর ন্যায় বিচার'। কিন্তু এখন কি হচ্ছে?? যুদ্ধাপরাধীর বিচারের সাথে জামাত-শিবিরকে এন্টি বানালেন কেন? জামাত-শিবিরের হাজার হাজার নেতার মধ্যে ১০-২০জন নাইলে জড়িত, ওদের বিচার করতে আপত্তি নাই, কিন্তু ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ্যের দাবি কেন আসল---কারন শাহবাগে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তিনারা মুলত আওয়ামী-নাষ্তিক ঘরনার, যাদের মুল ইসুই হল ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা যেমন আম্বা-বিম্পির মুল দাবি হল তাকে ক্ষমতা দেওয়া। অতএব যুদ্ধাপরাধীর বিচারের নামে নিজের রাজনৈতিক ইস্যু নিয়েই খেলতেছি কারন আওয়ামী-নাষ্তিকদের পথের কাঁটা হল ইসলাম আর ইসলামী রাজনীতি বন্ধ করতে পারলেই যে তসলিমা নাসরিনরা এইদেশে রাজত্ব করতে পারবে!!
অতএব আজকে ইহা দিবালোকের মত পরিস্কার যে যুদ্ধাপরাধীর বিচার একটা রাজনৈতিক বিচার আর বিচারকে নিয়ে শাহবাগ কে ব্যাবহার করা হচ্ছে, শাহবাগই আজকে সরকারের সকল ব্যর্থতা ঢাকার ছাতা----দেশের সবকিছুকে জলান্জলী দিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর কৃত্তিম ষড়যন্ত্র।