পারস্যের "শিরি-ফরহাদ" বিয়োগান্তক অমর প্রেমকাহিনী মানুষের মুখে মুখে চর্চিত। প্রাচীন ইরানি লোকগাথা মতে ‘ফরহাদের’ অশ্রুজলে সিক্ত শুষ্ক ভুমিতে বিশ্বের সর্বপ্রথম টিউলিপ প্রস্ফুটিত হয়েছিল। এইজন্য পারস্যে লাল টিউলিপকে ভালবাসার প্রতীক এবং লাল টিউলিপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কালো অংশকে প্রেমিকার হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার বা কয়লার ন্যায় পুড়ে যাওয়া বোঝানো হয়।
আহ্ টিউলিপ ! যার মূল্য এক সময় গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ষোলশো শতকের মাঝামাঝির দিকে ডাচ'দের কাছে টিউলিপ ফুল ছিল বিত্ত-বৈভব ঐশ্বর্য্যর প্রতীক। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, সেসময় একটি টিউলিপ কন্দ (বীজ) বিনিময় হতো ৮ হাজার কেজি গম কিংবা ৩ হাজার কেজি রাই, ১২৬ গ্যালন ওয়াইন, এক হাজার গ্যালন বিয়ার, ৪০০ কেজি পনির বা দুই টন মাখনের সাথে।
কথিত আছে, এক ডাচ নাবিক পেঁয়াজ ভেবে একটি টিউলিপের কন্দ খেয়ে ফেলেছিলেন, এইজন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছিল কারণ সেসময় টিউলিপ কন্দ এত মূল্যবান ছিল যে এই অর্থে তাদের পুরো টিমকে সারাবছর বসিয়ে খাওয়ানো যেত। গবেষণার কাজে একটি টিউলিপ কন্দ ব্যবচ্ছেদ করার জন্য এক উদ্ভিদবিজ্ঞানীকে কারাবরণ করতে হয়েছিল।
সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতায় টিউলিপ ফুলের জুরি মেলা ভার। ডাবলিনে রাস্তা,পার্ক বা বাড়ির আঙিনায় সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে নয়নাভিরাম এই ফুলটির ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। বিচিত্র ও সহজলভ্য মনমাতানো রঙের বাহারের জন্য সকলের নিকট অত্যন্ত প্রিয়। লাল, নীল, হলুদ, গোলাপি, বেগুনি কোনো রঙ-ই যেন বাদ নেই৷
সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয় নেদারল্যান্ডে এবং আন অফিসিয়ালি তাদের জাতীয় ফুল আর তুরস্কের অফিসিয়ালি জাতীয় ফুল। সবাইকে টিউলিপ ফুলের শুভেচ্ছা!
ছবি: আমি
স্থান: ডাবলিনের পথ প্রান্তর।
ডাবলিনের টুকরো গল্প (২য় পর্ব) ছবি ব্লগ :