মিথ্যা আছে বলে পৃথিবীটা এখনও বসবাসের যোগ্য। সত্যি কথা কেউ শুনতে চায় না, সত্যি কথা কেউ বলতে চায় না, সত্যি কথা সবসময় বলাও যায় না, কারণ সত্যি কথা কেউ পছন্দ করে না।
ধরা যাক পৃথিবীর সবাই একদিন সত্যি বলা শুরু করলো। তখন অবস্থাটা কেমন হবে?
ঘটনা ১
এক বন্ধুর কাছে ‘প্রেমিক পুরুষ’ বন্ধুর টাকা ধার চাওয়া।
কথোপকথন ১ক : যখন সবাই সত্যি কথা বলে!
- দোস্ত, আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ‘অমুক’ রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে ‘আজাইরা’ টাকা খরচ করবো। কিন্তু আমার কাছে টাকা নাই, যেহেতু আমি একটু অলস, কোন কাজ করি না, বাবার টাকায় চলি। আমারে ৫০০০ টাকা ধার দিতে পারবি? আমি তোরে এই টাকা ফেরত নাও দিতে পারি।
- না দোস্ত, আমাকে কাছে টাকা ধার দেবার মত টাকা আছে, কিন্তু তবুও আমি তোকে দিবো না, কারণ তুই টাকাটা একটা ফালতু কাজে খরচ করবি এবং ফেরৎ দিবি না।
কথোপকথন ১খ : যখন সবাই সত্যি+মিথ্যে কথা বলে (সত্যিটা সাইলেন্ট)!
- দোস্ত, আমাকে ৫০০০ টাকা ধার দিতে পারবি? আমার জরুরী ভিত্তিতে কিছু বই কিনতে হবে। টাকাটা আমি তোকে ৩ দিনের মধ্যেই দিয়ে দেব (কোন ৩ দিনের মধ্যে সেটা জানি না)! জানিস্ তো, তুই তো আমার একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড (টাকার দরকার হলে)!
- ওফ, শীট! দোস্ত, তুই আমারে একদিন আগে বলতি, টাকাটা দিতে পারতাম (মানে ঐদিন ফোন বন্ধ কইরা রাখতাম)! এখন তো পকেট একদম ফাঁকা (কারণ টাকা আমি জায়গামতো লুকাইয়া রাখছি, যেন তোর মতন মেয়ে চাটা বন্ধুর হাতে না যায়), অামি আরও চিন্তা করছিলাম, আজকে তোর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিবো (হালা ফকিন্নি, তুই দিবি আমারে টাকা ধার)! দোস্ত. তোর এই বিপদের দিনে তোরে হেল্প করতে পারলাম না, বিষয়টা চিন্তা করে অনেক খারাপ লাগছে!
ঘটনা ২
মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব অাসলো। ছেলে মোটামুটি ভালো। কিন্তু কিছুদিন পর আরেটি প্রস্তাব আসলো, এই ছেলেটি প্রথম ছেলের থেকে বেশি ভালো, অর্থ-সম্পদ বেশি।
কথোপকথন ২ক : যখন সবাই সত্যি কথা বলে!
- আপনার ছেলেকে আমাদের ভালো লেগেছে, সব দিক দিয়ে ঠিক ছিল, কিন্তু আমারা আরেকটি প্রস্তাব পেয়েছি, এই ছেলেটির আর্থিক অবস্থা আপনার ছেলের থেকে ভালো। তাছাড়া এই ছেলে আপনার ছেলের থেকে দেখতেও বেশি হ্যান্ডসাম। সব দিক বিবেচনা করে আমরা আপনাদের প্রস্তাবটা নাকচ করছি। কিছু মনে করবেন না।
- আমি অবশ্যই কিছু মনে করবো, আমার মনে হচ্ছে আপনি মেয়ে বিয়ে দিচ্ছেন না, মেয়েকে বাজারে তুলেছেন, বিক্রির জন্য। আপনি একজন লোভী প্রকৃতির মানুষ।
কথোপকথন ২খ : যখন সবাই সত্যি+মিথ্যে কথা বলে (সত্যিটা সাইলেন্ট)!
- আমরা আমাদের মেয়ের সাথে কথা বলেছি, সে পড়াশোনা করতে চায় (শশুরবাড়ি গিয়ে), আপাতত বিয়ে করতে চায় না (আপনার ছেলের মতন গরীব ছেলেকে)। আপনার ছেলেকে আমাদের সব দিক দিয়েই ভালো লেগেছিল (শুধু টাকাটা থাকলেই চলতো), কিন্তু কী আর করার বলুন? আপনারা কিছু মনে করবেন না দয়া করে (মনে করলেই বা আমার কী আসে যায়)।
- আরে না, মেয়েদের পড়াশোনা করার দরকার আছে (আমারে বোকা পাইছে), আমি তো এগুলা বুঝি! সম্পর্ক হয়নি তো কী হয়েছে, মাঝে মাঝে বাসায় বেড়াইতে আইসেন (যদি নির্লজ্জ স্বভাবের হয়ে থাকেন)। প্রার্থনা করি যেন আপনার মেয়ে ভালো একজন স্বামী পায় (যে তাকে প্রতিদিন ধরে ধরে মারবে)!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৬