আমি ছোটবেলা থেকেই একটু বেশি লাজুক। আমার লজ্জা নিয়ে অনেক কাহিনী আছে, কিন্তু আমি সেগুলো সবাইকে বলতে পারি না, লজ্জায়! লজ্জা যদি কোন সুপার পাওয়ারের নাম হতো, আমার নাম হতো লজ্জাম্যান। আমার সুপার পাওয়ার হতো, লজ্জায় বারবার মরে গিয়েও আমার জীবিত হয়ে উঠা! আমার এতো লজ্জা, আমি কলাও ছিলে খাই না। মেয়েদেরে মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারি না, মুখের দিকে না তাকিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকি, তাতেও মেয়েরা আমাকে ভুল বুঝে।
আমি এতো লজ্জা পাই, নিজের বাসায়ও ২য় বার খাবার নিয়ে খাই না, শেষে কেউ যদি কিছু মনে করে!
এতো লজ্জা থাকার কারণে আমি রুমে একা থাকলেও গামছা পরে প্যান্ট চ্যাঞ্জ করি! আমি এতো লজ্জা পাই, গ্রামীনফোন কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে মেশিনে যে মেয়েটা ইন্ট্রাকশন দেয়, সেটা শুনেও লজ্জায় ফোন কেটে দেই! লজ্জায় আমি সানি লিউনির নাম মুখে আনি না, হাত দিয়ে লিখতেও পারি না, যার কারণে এই লেখায় ‘সানি লিউনি’ লেখাটা আমাকে পা দিয়ে লিখতে হয়েছে।
আমার এতো লজ্জা, আমি পর্ণ মুভি তো দূরের কথা, এ্যনিমেল প্ল্যানেট চ্যানেলও দেখি না কারণ ওখানে মাঝে মাঝে পশুদের বংশ বিন্তারের প্রক্রিয়া দেয়ায়।
অতিরিক্ত লজ্জা থাকারে কারণে আমি ঠিকমত খিস্তিও করতে পারি না। নিজের সালাকেও সালা বলে ডাকতে পারবো কিনা জানি না! বাংলায় গালি দিতে সমস্যা তাই, সেটার ইংরেজী করে গালি দেই। আমার অনেক ইচ্ছে করে অন্য সব স্বাভবিক ছেলেদের মত ‘খ*কির পোলা’ টাইপের খিস্তি প্রয়োগ করতে, লজ্জায় আমি সেটা ইংরেজীতে বলি `What do you eat?' এর পোলা!
আমি বিভিন্ন ভায়ায় লজ্জা পেতে পারি। স্বাভাবিক অবস্থায় আমি বাংলায় লজ্জা পাই, গোসলে গেলে ইংরেজীতে লজ্জা পাই! হিন্দিতে আমি লজ্জা পাই না, কারণ ওদের ভাষারই কোন লজ্জা নেই, আমি বাংলায় যেগুলা বলতে লজ্জা পাই, হিন্দিতে ওরা দিব্যি সেগুলো বলে বেড়ায়! হিন্দি সিনেমায় ‘বাল’, ‘হোগা’ শব্দের উপর্যুপুরি ব্যবহার দেখে লজ্জায় আর ওদের সিনেমা দেখি না।
আমাকে কেউ বিয়ের কথা বললে আমি অনেক লজ্জা পাই, গায়ের রঙ একটু কালো হওয়ার দরুন ঠিকমত লজ্জায় লালও হতে পারি না, আরও বেশি কালো হয়ে যায়। উল্টো মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘‘মুখ কালো করে বসে আছো কেন?’’
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০