এই মহাদেশে সাতাশি বছর আগে আমাদের পিতৃপুরুষেরা একটি নতুন জাতির পত্তন করেছিলেন। যে জাতি দীক্ষিত স্বাধীনতার মন্ত্রে এবং সকল মানুষ সমান এই নীতিতে উত্সর্গীকৃত। এখন আমরা এক বিরাট গৃহযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি। যে যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পরীক্ষা করছি যে, এই নীতিতে দীক্ষিত এবং উত্সর্গীকৃত ওই জাতি বা অন্য যে কোনো জাতি দীর্ঘকাল টিকে থাকতে পারে কিনা। সেই যুদ্ধেরই এক মহান দিনে আমরা মিলিত হয়েছি। এই জাতি যাতে বেঁচে থাকতে পারে সেই জন্য যারা এখানে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাদেরই এক অন্তিম আশ্রয়স্থলের একাংশকে উৎসর্গের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে মিলিত হয়েছি। এই কার্য সম্পাদন করা আমাদের পক্ষে সর্বতোভাবে যথাযথ ও উপযুক্ত।কিন্তু বৃহত্তম পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করলে প্রকৃতপক্ষে আমরা এই ভূমি উৎসর্গ করতে পারি না, পবিত্র করতে পারি না, অথবা মহিমময় করতে পারি না। যে জীবিত ও মৃত ব্যক্তিরা এখানে সংগ্রাম করেছেন, তারাই এই ভূমিকে পবিত্র করেছেন। সেই পবিত্রতার হ্রাস বৃদ্ধি করা আমাদের ক্ষমতাতীত। আমরা এখানে যা বলি, পৃথিবী সেদিকে দৃষ্টি দেবে অতি অল্প অথবা তা বেশিদিন স্মরণ রাখবে না। কিন্তু তাদের বীর সন্তানদের এখানকার কার্যকলাপ কখনো বিস্মৃত হবে না।বরং, তাদের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য আমরা যারা বেঁচে আছি, আমাদের উৎসর্গীকৃত হওয়া উচিত। এই সম্মানিত মৃত ব্যক্তিরা, যারা তাদের নিষ্ঠার জন্য চরম মূল্য দিয়ে গিয়েছেন, তাদের দৃষ্টান্ত দেখে আমাদের নিষ্ঠা আরো বৃদ্ধি করা উচিত। এখানে আজ আমরা এমন দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করব, যেন তাদের জীবনদান ব্যর্থ না হয়; যেন এই জাতি বিধাতার কৃপায় স্বাধীনতার নব জন্ম লাভ করে এবং জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা পরিচালিত সরকার ও জনগণের জন্য গঠিত সরকার যেন কখনো পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত না হয়।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৫১