আল্লাহ তায়ালা মানুষ এবং জ্বিন জাতিকে বিবেক বিবেচনা এবং জ্ঞানসম্পন্ন দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তাদের পরিচালনা এবং হিসাব নিকাশের জন্য সৃষ্টি করেছেন ফেরেশতাদের। পবিত্র কুরআনে তাদের সংখ্যা বা আকৃতি সম্পর্কে তেমন কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে বেশ কিছু সহীহ হাদিসের মধ্যে হজরত জিব্রাইল (আঃ) এর আকৃতিগত বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত জিব্রাইল (আঃ) হলেন সব ফেরেশতাদের সরদার। সব নবী ও রাসুলদের বার্তাবাহক ছিলেন তিনি। পবিত্র কুরআনে হজরত জিব্রাইলকে রূহ নামে অভিহিত করেছেন আল্লাহ মহান। যাই হোক একজন মানুষ হিসেবে, একজন খাঁটি মুসলমান হিসেবে হজরত জিব্রাইল (আঃ) সহ প্রত্যেক ফেরেশতার প্রতি আমাদের কিছু হক রয়েছে। নিজ উদ্যোগে, সচেতনভাবে আমাদের সেসব হক আদায় করা উচিত। ১।ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। অর্থাৎ, ফেরেশতারাও যে আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি, এমন বিশ্বাস স্থাপন করা এবং ফেরেশতাদের প্রতি এই বিশ্বাসের বিষয়টি ঈমানেরও একটি অংশ। কোনো মুসলিম ঈমানদার হতে পারবে না যদি সে ফেরেশতাদের ওপর বিশ্বাস না রাখে। ২। ফেরেশতাদের নিষ্পাপ বলে ধারণা পোষণ করা। গোনাহ বা পাপের হিসাব নিকাশের বাইরে ফেরেশতাদের অবস্থান। এরা কেবলই আল্লাহ মহানের হুকমের গোলাম। মানব জাতির মতো নিজস্ব কোনো চালিকাবোধ নেই ফেরেশতাদের। তাই এরা পাপ বা গোনাহের আওতাভুক্ত নয়।৩। যে কোনো ফেরেশতার নাম শোনার পর আলাইহিস সালাম পাঠ করা।এভাবে বিভিন্ন দোয়ামূলক শাব্দিক উচ্চারণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরের মানুষ এবং সৃষ্টিকে সম্মান প্রদর্শন করাই এই বিধির মূল উদ্দেশ্য।৪। ফেরেশতারা কষ্ট পায় এমন সব কাজ থেকে বেঁচে থাকা। পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আল্লাহ মহানের নির্দেশ মোতাবিক বিভিন্ন সময় নানাবিধ কাজে ধরাধামে আগমন ঘটে ফেরেশতাদের। সহীহ হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী পৃথিবীতে অবস্থিত আল্লাহর ঘর মসজিদগুলোতে প্রতিনিয়তই ফেরেশতারা আগমন করেন। তাই দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু বা খাবার যেমন, বিড়ি-সিগারেট ও তামাক এবং অন্যান্য দুর্গন্ধযুক্ত ও নেশাযুক্ত খাবার খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করা নিষেধ। তাছাড়াও বিভিন্ন সময় মুসলিম পরিবারে রহমতের ফেরেশতাদের আগমন ঘটে। ঘরে কোনো প্রাণীর ছবি লটকানো থাকলে শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া কুকুর পালন করলে, মিথ্যা কথা বললে, অলসতা বশত ফরজ গোসল আদায়ে দেরি করলে এবং অতি প্রয়োজনীয় কোনো কারণ ছাড়া উলঙ্গ হলে ঘর থেকে রহমতের ফেরেশতারা চলে যায়। বিষয়টির প্রতি সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৭