কেস স্টাডি-১:
জনপ্রিয় অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস আইনি অভিযোগ আনেন, তার নামে একটি ওয়েব সাইট চালু করেছেন জনৈক রাসেল বয়েড।মোকাদ্দমায় জিগাষাবাদে জানা যায়, রাসেলআরো বেশ কিছু সেলিব্রিটির নামে এমন ওয়েব সাইট করেছেন যেগুলোর সাথে উক্ত ব্যক্তিরা কোনভাবেই সম্পৃক্ত নন। অভিযুক্ত ব্যক্তি জুলিয়া রবার্টস –এর নামে করা ডোমেইন ই-কমার্স সাইট ই-বে’তে নিলামের জন্যও তুলেছিলেন। আদালত অভিযুক্তের এই আচরণকে ’ব্যাড ফেইথ’ হিসেবে চিন্হিত করেন এবং জুলিয়া বরার্টসকে ডোমেইনটি হস্তান্তর করা হয়।
কেস স্টাডি-২:
২০০৩ সালে ব্রিটিশ পুলিশের একটি বিশেষ দল জানিয়েছিল, তারা মাত্র ৪ সপ্তাহে ১০০ জনকে শিশু পর্নগ্রাফি ডাউডলোড কালে গ্রেপ্তার করেছে।
মুম্বাইতে এক সুইস দম্পতি পুলিশ কর্তৃক ধৃত হয়, যারা বস্তির ছেলেমেয়েদের আপত্তিকর ভঙ্গিমায় ছবি তুলতে বাধ্য করতো। এ সব ছবি বিশেষত পেডোফিলিয়ায় (যারা শিশুদের সাথে যৌনাচারে আগ্রহী) আক্রান্তদের জন্য তৈরী পর্নসাইটগুলোতে প্রকাশিত হতো।
কেস স্টাডি-৩:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুরের ব্যক্তিগত ই-মেইল হিসেবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হলো একটি ইমেইজ ফাইল। প্রথমত, ইমেইল হ্যাক হয়ে থাকলে তা একটি অপরাধ।দ্বিতীয়ত, ইমেইল গ্রাফিক্সটি ভূয়া প্রমানিত হলে (ইতিমধ্যে ব্লগে বিভিন্ন ক্রসচেকিংয়ের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ইমেইল গ্রাফিক্সটির ভূয়া হবার সম্ভাবনা ), ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে ইন্টারনেটে এ ধরনের অপপ্রচারনা আরেকটি অপরাধ। এমনকি যারা সত্য বাছবিচার না করে ইংরেজিতে লিখিত ইমেইলের বাংলা অনুবাদ করে তা ব্লগে ব্লগে প্রচার করছিলেন, তাদেরকেও অপরাধী সাব্যস্ত করা যায়।
কেস স্টাডি-৪:
গণমাধ্যমগুলোতে ফারজানা কর্তৃক হীরনকে তালাক দেয়ার ঘটনা যখন বেশ আলোচিত তখন নারী হিসেবে ফারজানাকে সহজেই বিতর্কিত করার আপত্তিকর প্রচেষ্টা দেখা গেল ইন্টারনেটে । হীরনের ফেসবুক ওয়ালে আপত্তিকর বক্তব্যসহ ফারজানার ছবি, মোবাইল ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয়, যা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
কেস স্টাডি-৫:
শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, লেখক জাফর ইকবালকে অপদস্থ করতে একটি বিশেষ চক্র এক কাঠি সরেস থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলের কোন অনুষ্ঠানে নিজের স্ত্রী-কন্যার উপস্থিতিতে ও সাথে গানের তালে তাল মেলানোর ভিডিও অসৎ উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে দেয়া হলো ফেসবুক আর বাংলা ব্লগগুলোতে।সাম্প্রতিককালে জাফর ইকবালের কন্যার প্রবাস জীবনের বিভিন্ন ছবি আচমকাই ছড়িয়ে দেয়া হলো ইন্টারনেটে, বাংলা ব্লগগুলোতে। যদিও সচেতন ব্লগারদের প্রতিবাদের কারণে এরূপ অপপ্রচার থিতু হয়ে এসেছিল, তবে যারা এভাবে ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে ব্যক্তি আক্রমনে উদ্যত হয়েছিলেন, এদের আচরণকে ক্রাইম হিসেবে গন্য করতেই হবে।
কেস স্টাডি-৬:
’আমার ব্লগ’ এর কপিরাইট সংরক্ষণে সচেতনতা লক্ষনীয় বটে। ব্লগটিতে মোটা হরফের সতর্কবার্তায় লেখা আছে- ”এই ব্লগের কোন লেখা, কমেন্ট বা কন্টেন্টের স্বত্ব সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট ব্লগারের। লেখক, মন্তব্যকারী বা ব্লগের অনুমতি ছাড়া ব্লগ পোস্ট ও মন্তব্যের সম্পূর্ণ বা আংশিক অন্য কোথাও প্রকাশ, সংকলন, গ্রন্থনা করা বেআইনি।” প্রশ্ন করা যেতে পারে, কোন ’আইনের’ প্রেক্ষিতে এমন আচরণ ’বেআইনি’ হবে? অর্থ্যাৎ ইন্টারনেটে ইন্টেলেকচুয়্যাল প্রপার্টি নিশ্চিত করা হবে কোন আইনে? উত্তর- সাইবার আইন।
কেস স্টাডি-৭:’
'জেনারেল’ ও ’আইজুদ্দিন’ এর নাম জানেননা এমন ব্লগার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে বিরল। এদের পরিচয় বস্তুনিষ্ঠ ব্লগিংয়ের কারণে নয়। বরং বাংলা ব্লগের শুরু থেকে আজ অব্দি ক্রমাগত অশ্লীলতাকেই লালন করে যাচ্ছেন তারা। বিশেষত নারী ব্লগারদের নিয়ে এদের চরম বিকৃত যৌনআক্রমনাত্মক মন্তব্য বাংলা ব্লগগুলোতে একটু খুঁজলেই পাওয়া যাবে। ব্লগার ’জেনারেল’, যিনি ’ক্যামিকেল আলী’ নামেও লিখেন, -এর প্রকৃত নাম-পরিচয় (প্রকৃত নাম সেলিম হোসেন - M. Selim Hossain, তার ইমেইল এড্রেস - [email protected]
এবং [email protected], তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৯৭ সালে এইচএসসি পাস করার পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাষ্টার্স করেন জৈব রসায়নে। ২০০৬ সালে লেকহেড ইউনিভারসিটি থেকে জৈব রসায়নে মাষ্টার্স সম্পন্ন করেন) এবং প্রবাসের যে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউনিভার্সিটি অফ গুয়েল্ফ, টরোন্টো, কানাডা, ) আইপি ব্যবহার করে তিনি ব্লগে ব্লগে নোংরামি করে যাচ্ছেন, তা জানা গেছে। ব্লগ কর্তৃপক্ষরা এ ধরনের বিস্তারিত তথ্য দিতে সক্ষম। বাংলা ব্লগে এমন অশ্লীল ভাবে ব্যক্তি আক্রমন ও যৌন আক্রমনাত্মক আচরণকে সাইবার ক্রাইম হিসেবে গণ্য করে বাংলা ব্লগগুলোর পরিচালনাকারীরা ও ব্লগাররা যদি আইনি পথে এগোন তবে ”জেনারেল” এর বিশ্ববিদ্যালয়েও তার বিরুদ্ধে অভিযোগনামা প্রেরণ সম্ভব।
কেস স্টাডি-৮:
একজন জনপ্রিয় নারী ব্লগারের নামে ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগ খোলা হয়েছে। নারী ব্লগারের ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করে সাইটটি সাবস্ক্রাইব করা হয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেসের সেই পাতা নিশ্চয়ই কোন যৌন বিকৃত ও মানসিক ব্যধিগ্রস্থ ব্যক্তিরা মিলেই করেছেন, যেখানে দু’টি বাংলা ব্লগের কর্তৃপক্ষ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে আপত্তিকর শিরোনাম জুড়ে দেয়া হয়েছে, তাদের নাম ট্যাগ করে পর্নগল্প (চটি) লেখা হয়েছে। বাংলা ব্লগের যে কোন ব্লগারের পক্ষে এই পাতাটি দেখার পর বুঝতে বেগ পেতে হবে না, কারা কারা এই চটি লেখনীতে জড়িত। (আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১১, রাত ৯টার দিকে জানা গেল সাইটটির লিংক এক্সেস করতে গেলে ”… is no longer available” দেখাচ্ছে। উল্লেখ্য, ওয়ার্ডপ্রেস কর্তৃপক্ষ বরাবর ইমেইল করে অভিযোগ জানানো হয়েছিল)
কেস স্টাডি-৯:
এই কেস স্টাডিটি বেশ অভিনব। এ জাতীয় ক্রাইম বিশ্বে বিরলও। যে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় গৌরব, সে মুক্তিযুদ্ধকে মিশিয়ে ফেলা হলো একটি পর্নসাইটের সাথে। তাতে সমর্থন যোগালেন জনা কয়েক, যারা আবার ব্লগার হিসেবেও পরিচিত। এডাল্ট পর্নগ্রাফি আর মুক্তিযুদ্ধ একই ওয়েবসাইটে চলে এল রাতারাতি। রসাল চটি পড়া শেষ করে, নারীর গোপন ভিডিও/ছবি দেখা শেষ করে একই সাইটে মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো নারীদের নিয়ে পর্নসাইট ভিজিটরদের মাতম শোনা গেল। আমরা পর্ন দেখি, পর্ন সবাই দেখে – এসব সাবলীল আলাপ হয়ে গেলে ইন্টারনেট কমিউনিটির একটা বড় অংশে। চটি শেয়ারও স্বাভাবিক হয়ে গেল। ’আশ্রম’ ছদ্মনামে একজন রগরগে চটিলেখক পর্নসাইটে নিজেকে ’এন্টারটেইনার’ হিসেবে পরিচিত করান, তিনিই আবার স্বনামে বাংলা ব্লগে ভার্চুয়্যাল মুক্তিযুদ্ধ ঘোষনা ও ভার্চুয়্যাল মুক্তিযোদ্ধা হবার মত ফ্যান্টাসি করেন।
বিপ্লব-ফ্যান্টাসিতে ভোগা তরুণ প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক আবেগকে সুকৌশলে ব্যবহার করে কতিপয় ব্লগার নামধারী ব্যক্তিরা মুক্তিযুদ্ধের নামে নিজেদের পর্নগ্রাফি সাইট সম্পৃক্ততাকে স্বীকৃত করে নেয়ার পাঁয়তারা করেছিলেন বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে। অত্যন্ত দু:খজনক হলো, এ গোষ্ঠির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিছু সংখ্যক তরুণ ব্লগারদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার প্রয়োজনীয় সুস্থ-স্বাভাবিক চিন্তাশক্তির বিলুপ্তি ঘটেও ছিল। তবুও, সংখ্যাগরিষ্ঠ, সচেতন ব্লগারদের মধ্য থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল সে সময় এবং তা জারি আছে আজো। মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদার এরূপ খেলো উপস্থাপনা যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠির ইতিহাস বিকৃতি প্রচেষ্টার মতই অবমাননাকর। যেখানে ফেসবুকে পর্নলিংক স্পামিং হলেই ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিব্রতবোধ করেন, সেখানে পর্নগ্রাফি সাইটে মুক্তিযুদ্ধকে সম্পৃক্ত করে মুক্তিযোদ্ধা নারী-পুরুষদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত চেতনার সাথে তামাশা করার মত ধৃষ্টতা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ন্যাক্কারজনক কাজে জড়িতদের সাইবার জগতে একটাই পরিচয় হতে পারে – এরা ঘৃণিত সাইবার ক্রিমিনাল!
সাইবার আইনের সার-সংক্ষেপ:
সাধারণত ইন্টারনেটে তথ্য-অর্থ-ব্যক্তি-জাতীয় নিরাপত্তা কোনভাবে বিঘ্নিত হলে তা সাইবার ক্রাইম হিসেবে বিবেচিত হয়।সাইবার আইন ইন্টারনেট আইন হিসেবেও পরিচিত। অন্যদিকে সাইবার ক্রাইম পরিচিত সাইবার টেরোরিজম বা সাইবার সন্ত্রাস হিসেবে। দুটি পর্যায়ে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে ভাগ করা সম্ভব – (১)ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটার, নেটওয়ার্ক অবকাঠামোকে সরাসরি আক্রমন, (২) ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যক্তি ও জাতীয় নিরাপত্তায় ব্যতয় ঘটানো। এই দুই অংশে সাইবার অপরাধ রূপে যা যা ঘটে বা ঘটতে পারে –
(১) ভাইরাস আক্রমন
(২) ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রিয় ওয়েব সাইট হ্যাকিং
(৩) স্প্যামিং, ম্যালওয়্যার
(৪) সাইবারস্টকিং বা সাইবার হয়রানি – ইমেইল বা ব্লগ বা ওয়েব সাইট ব্যবহার করে হুমকি প্রদান, ব্যক্তির নামে মিথ্যাচার/অপপ্রচার, নারী অবমাননা, যৌনাক্রমণ
(৫) ফিশিং – লগইন/এক্সেস তথ্যচুরি, বিশেষত ই-কমার্স, ই-ব্যাংকিং সাইটগুলো ফিশারদের লক্ষবস্তু হয়ে থাকে। র্যা পিডশেয়ার সাইটের প্রিমিয়াম এ্যাকাউন্ট এক্সেস তথ্য চুরির মত ফিশিং ঘটেছে। ফিশারদের দ্বারা মাইস্পেসের লগইন তথ্যও চুরি হয়েছিল।
(৬) অর্থ আত্মসাৎ - ইন্টারনেট থেকে তথ্য চুরি করে ব্যাংকের এক এ্যাকাউন্ট থেকে অন্য এ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর একটি উদাহরণ। ইন্টারনেটে ব্লগ/ইমেইল/ফেসবুক ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অথবা প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাও ঘটে। কিছুদিন আগে ব্লগার হাসনা হেনা ও রোজলীনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বাংলা ব্লগ থেকে অর্থ জোচ্চুরির অভিযোগ উত্থাপিত হয়।
(৭)সাইবার মাদক ব্যবসা – পুলিশের চোখ এড়াতে ইদানীং কালে ইন্টারনেট ব্যবহার করে মাদক চালানের ব্যবসায়িক যোগাযোগের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে
(৮) পাইরেসি – সদ্য প্রকাশিত গান ও সিনেমার এমপিথ্রি বা মুভি ফাইল ইন্টারনেটে শেয়ার হয়ে যাচ্ছে পলকে
(৯) ইন্টেলেকচুয়্যাল প্রোপার্টি – ব্লগ ও ওয়েব সাইট থেকে কোন লেখা, ফটোগ্রাফ সহজেই কপি-পেস্ট করে নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে সাইবার কমিউনিটিতে
(১০) পর্নগ্রাফি – শিশু পর্নগ্রাফি ইন্টারনেটে ভয়ংকরভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।এডাল্ট পর্নগ্রাফিতে গোপনে ধারনকৃত, অনুমতি বিহীন ব্যক্তিগত ছবি/ভিডিও প্রকাশ বৃদ্ধি পেয়েছে
(১১) ব্যক্তিগত তথ্য-পরিচয়-ছবি চুরি ও ইন্টারনেটে এর অপ্যব্যবহার
যারা নিয়মিতভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ করেন, তাদের উপরের যে কোনটি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থেকে যায়।
বাংলাদেশে সাইবার আইন:
ইংল্যান্ড বিশ্বে প্রথম সাইবার আইন প্রণেতা হিসেবে তৈরী করে ’কম্পিউটার মিসইউজ এ্যাক্ট ১৯৯০’। ই-ক্রাইম প্রতিরোধে ২০০৮ সালে জাতীয় ই-ক্রাইম ইউনিটও গঠন করা হয়েছিল।ভারতে তৈরী হয়েছিল ’তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০০’। বাংলাদেশে সাইবার আইন প্রণয়ণে মিশ্র-অবিমিশ্র আলোচনা জারি থাকলেও, একটা তথ্য অনেকেরই কাছেই অস্পষ্ট রয়ে গেছে- বাংলাদেশে ২০০৬ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইন তৈরী করা হয় এবং ২০০৯ সালে এই আইনে কিছু পরিমার্জনা করা হয়। ধরে নেয়া যাক, এই তথ্যপ্রযুক্তি আইনই আমাদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োগ হবে।
সমস্যা হলো, আমাদের দেশে আইন থাকলেও আইনি অব্যবস্থাপনা নিয়ে জনসাধারণের ক্ষোভ হরহামেশাই দেখা গেছে । নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও অধিকারই যেখানে নিশ্চিত নয়, সেখানে ইন্টারনেটে ব্যক্তি নিরাপত্তা দাবি করা বাতুলতাই।তদুপরি, রাষ্ট্রীয় প্রচারণার অভাবে নাগরিকদের আইনি অধিকার দিতে কোন আইনে কী প্রতিকার লাভ সম্ভব, তা নাগরিকদের কাছে অজ্ঞাতই থেকে যায়।
অবশ্য ঘোষিত তথ্যপ্রযুক্তি আইন সাইবার অপরাধ সনাক্তকরণ ও বিচারকার্য পরিচালনায় কতটা যুগপযোগী তা প্রশ্নসাপেক্ষ। তাছাড়া প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত উন্নত হচ্ছে, তাতে অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এজন্য সাইবার আইন একটি চলন্ত গবেষণার দাবি রাখে।
সাইবার আইন কেবলমাত্র রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন প্রযুক্তি অবকাঠামোতে সংগঠিত সাইবার অপরাধের জন্য প্রযোজ্য হবে তা নয়। একজন বাংলাদেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রবাস থেকেও বাংলাদেশে অপরাধমূলক কাজ পরিচালনা করতে পারেন। তাই সাইবার অপরাধিকে সনাক্তকরণে, প্রয়োজনীয় সাইবার তথ্য বিনিময়ে ও সর্বপরি অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে দু’টি দেশের মধ্যে বিশেষ সাইবার নীতিমালা থাকতে হবে । সাইবার অপরাধ মনিটরিং ও অভিযোগ দায়ের করার জন্য ’জাতীয় সাইবার সেল‘ গঠন করা জরুরী। এই সেলের প্রযুক্তিগত সুবিধা উন্নততর হতে হবে যেন কোন অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তের ইন্টারনেট গতিবিধি ট্র্যাকিং/ট্রেসিং করে অকাট্য তথ্য দ্রুততার সাথে আদালতে পেশ করা সম্ভব হয়।
সাইবার আইন ডিসকোর্স:
তৃতীয় বাংলা ব্লগ দিবসে প্রথমবারের মত প্রতিপাদ্য সংযোজিত হয়েছিল, গণজাগরণে সামাজিকযোগাযোগমাধ্যম ও সাইবার আইন। সোশ্যাল মিডিয়ার গনজাগরণ নিয়ে আমাদের সম্যক ধারনা আছে কিন্তু সাইবার আইন নিয়ে আমাদের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ ও প্রতিপক্ষ অবস্থান তৈরী হয়েছে ইতিমধ্যে। দেখা যাচ্ছে, একটি বিস্তৃত পরিসরের আলোচনা কেবল এবং কেবলমাত্র দু’টো বিষয়ে আবদ্ধ হয়ে আছে –(১) ব্লগ নিয়ন্ত্রন (২) বাক স্বাধীনতা হরণ।
এখন পর্যন্ত সাইবার আইন প্রসঙ্গে আমরা কেবল মাত্র ব্লগ নিয়েই প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠেছি। অথচ ’সাইবার’ যদি সৌরজগৎ হয় তো ব্লগ এর একটি গ্রহ মাত্র। কারো কারো ক্ষেত্রে অবশ্য এরূপ আশংকায় স্বাভাবিক অধিকার নিশ্চিতকরণের চাহিদা আছে, তবে কারো কারো ক্ষেত্রে রয়েছে উদ্দেশ্যমূলক উস্কানি। বাক স্বাধীনতার মত দ্বায়িত্বপূর্ণ আচরণ নিয়ে এমন অনেকেই উচ্চবাচ্য করছেন, যারা মূলত ’গালি স্বাধীনতা‘ চর্চা করেন। এরূপ গোষ্ঠির উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণায় প্রভাবিত হলে সাইবার আইন সংক্রান্ত সার্বিক সচেতনতা বিঘ্নিত হবে।
সরকার ব্লগ নিয়ন্ত্রন করতে চাচ্ছেন- এমন আশংকায় নেটিজেনরা আশংকিত হতেই পারেন। তবে রূঢ় বাস্তবতা হচ্ছে, ব্লগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বের কোন রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘটা করে সাইবার আইন প্রণয়ন জরুরী হয়ে ওঠে না। রাষ্ট্র গনতান্ত্রিক আলাপের বিরুদ্ধে যেয়ে একনায়কতন্ত্রে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে সাইবার আইন ছাড়াই। বরং বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নিজেদের স্বার্থে সাইবার আইনে বাক স্বাধীনতা বান্ধব বিধি যোগে সচেষ্ট হতে হবে নেটিজেনদেরই।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যখন প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হয়, তখন একই সাথে প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিধিমালা নীতিনির্ধারণী চিত্রে সমান্তরালভাবে অবস্থান করে। অন্যথা তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও সাইবার আইন ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা প্রণয়ন একটি অপূর্নাঙ্গ রোডম্যাপ হতে বাধ্য।
(ব্লক ডায়াগ্রাম বড় করে দেখতে ক্লিক করুন )
সরকার ও সুশীল সমাজের ব্লগ বৈরাগ্য এবং ব্লগারদের বাক স্বাধীনতা:
আসিফ নজরুল, আব্দুর নূর তুষার, মেহেরজান চলচ্চিত্রের পরিচালক রুবাইয়্যাত সহ হালে এলজিআরডি মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফকে ব্লগ নিয়ে বিরূপ হতে দেখা গেছে। আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্লগকে বৈশ্বিকভাবে সকল প্রশাসনই একটু বাঁকা চোখে দেখেন। এ বস্তুত মূল ব্লগিং চর্চা সম্পর্কে তাদের জানাশোনার সীমাবদ্ধতা; ক্ষেত্র বিশেষে নাগরিক সমালোচনা গ্রহণে উদারতার অভাবও। তাই বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ক্ষমতাসীনদের এরূপ মন্তব্যে ব্লগ ও ব্লগারদের উপর খড়গ হস্তের একটি আশংকা স্বাভাবিকভাবেই ব্লগারদের মধ্যে বিস্তারিত হতে দেখা যায়। প্রসঙ্গত বলতেই হয়, আসিফ নজরুল নিজেই একজন কড়া সমালোচক। আব্দুর নূর তুষারও লেখনীতে ধারাল হয়ে উঠতে পারেন। রাজনীতিবিদেরা একে অন্যকে দোষারোপ করে প্রায়শই এটা-ওটা উক্তি করে বসেন। তাহলে ব্লগাররা সমালোচনা করলে তা দোষনীয় হয়ে উঠছে কেন? দেশে ছিনতাই-খুন-ধর্ষন বৃদ্ধিতে জনগণ যদি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে সরকারকে সামগ্রিকভাবে ব্যর্থ আখ্যায়িত করে তবে সরকার কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য সার্বিক ব্যবস্থাপনাকে দোষারোপকরণ অনুচিৎ বলে মনে করেন। সেক্ষেত্রে, গুটিকয়েক ব্লগারদের অশ্লীলতার দায় পুরো বাংলা ব্লগ কমিউনিটির উপর চাপিয়ে দেয়া কতটা যৌক্তিক হতে পারে?
ব্লগাররা বিভিন্ন কারণেই রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠেন। প্রশ্ন হতেই পারে, ব্লগারদের সমালোচনা করা হলে, তারা এতো প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠেন কেন? মন্ত্রী আশরাফ সাহেব যখন ব্লগ বলতে পর্নগ্রাফি বুঝে থাকেন, তখন বুঝতে হবে, তিনি তথ্যগত দিক দিয়ে অন্ধকারে আছেন এবং যেটুকু তার সম্মুখে এসেছে, সেটুকু জুড়ে আপত্তিকর কিছু থাকতেই পারে। ব্লগারদের বরং এই সুবাদে পর্নগ্রাফি সাইটগুলোকে চিন্হিত করে ও বিশেষ কোন ব্লগে যদি প্রতিনিয়ত অশ্লীলতাকেই আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হয়, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কী কী করণীয় রয়েছে তা জানতে মন্ত্রী সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিৎ।
ব্লগারদের সমালোচনা হলেই বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে এমন গোষ্ঠিবদ্ধ হুজুগ প্রকারান্তরে কোন ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে না। ব্লগাররা সমালোচনার উর্ধ্বে থাকা কেউ নন। ইন্টারনেটবাসীরা তিউনিশিয়ায় বিপ্লব করেছিল বলে, আরব বসন্ত এনেছিল বলে তাবৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বিপ্লবী হয়ে যান না। আজকাল মাউসের ক্লিকে ক্লিকে বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে বিশ্বে। তাহলে এ যুগের বিপ্লব কি জলবৎ তরলম হয়ে যায়নি? খুদিরাম, ভগৎ সিং, মাস্টার দা সূর্যসেন, প্রীতিলতা আর আমাদের ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধারাও বিপ্লবী ছিলেন। তাদের মত ধৈর্য, আত্মত্যাগ, দূরদর্শীতা, দ্বায়িত্ববোধ, প্রজ্ঞা আদৌ কতটুকু রয়েছে আমাদের মাঝে?
একটা ছোট প্রতীক খুঁজে নেই আলোচনার এই অংশে – ছুরি! সুস্থ মানসিকতার কেউ ছুরি ব্যবহার করে সবজি-ফল কাটতে পারেন, দড়ির প্যাঁচ কাটতে পারেন, আর বেসামাল হলে আঙ্গুল কেটে ফেলতে পারেন। অন্যদিকে অসুস্থ মানসিকতার কেউ ছুরি দিয়ে অপরকে আহত-নিহত করতে পারেন। ব্যবহারকারীর কারণে প্রযুক্তি-ইন্টারনেট ছুরির মত কার্যকরী হতে পারে, আত্মঘাতি হতে পারে, আবার হতে পারে ভয়ংকরও!
দ্বায়িত্বশীলতার কথাটা এখানেই বারবার উত্থাপিত হয়। দ্বায়িত্বশীলতার প্রত্যাশা পারস্পারিকও বটে। ব্লগার-নেটিজেনরা সরকারের কাছে দ্বায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করবে, বিপরীতে সরকার ব্লগার-নেটিজেনদের কাছেও দ্বায়িত্বশীল প্রতিক্রিয়া চাইবে। কোন ধরনের অচলাবস্থা এড়াতে দু’পক্ষের মুখোমুখি মুক্তালোচনাকে স্বাগত জানানোর পরিসর রাখাটা মত প্রকাশের গ্রহণযোগ্যতাকে বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত।
সাইবার আইন- নিরাপত্তা না খড়গের আশংকা?
এটা স্পষ্ট, সাইবার আইন নিয়ে আমাদের চিন্তা ধারা সম্পূর্ণ সার্বজনীন হয়নি এখনো। যদি শুরু থেকে শুরু করি, তাহলে এভাবে বলতে হয়, সমাজ গঠিত হলে সেখানে কিছু সামাজিক আরোপ হয়। আদালত যেখানে পৌঁছতো না, সেখানে পঞ্চায়েত বসে যেত। যদিও সরকার-আইন ও মানুষের সম্পর্ক মানব-মানবীর সম্পর্কের চেয়েও জটিল ও কুটিল হতে পারে। কিভাবে?
মানুষের একাংশ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, একাংশ শৃঙ্খলা মুখী। আইন মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। আবার আইন মানুষের অধিকারের উপর খড়গের আশংকাও। সরকার কাঠামো গঠনে জনগণের ভূমিকা আছে। জনগণ তাদের প্রয়োজনেই সরকার ব্যবস্থা সমর্থন করে। উল্টো পিঠে, সরকার ও জনগণ – দু’পক্ষই একে অন্যকে নিয়ে আশংকিত থাকে। একে অন্যের আচরণে আগ্রাসী প্রবণতাকে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করে। তবু, জনগণ সরকার কাঠামোমুখী, আইনি ব্যবস্থাপনামুখী। কারণ রাষ্ট্র সামাজিক বিশৃংখলা নিয়ন্ত্রন করবে, এটা সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক প্রত্যাশা।
প্রকৃতপক্ষে, ইন্টারনেটে বাক স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি সাইবার আইনের আওতাধীন হলেও সাইবার আইনকে কেবল এবং কেবল মাত্র বাক স্বাধীনতা দিয়ে সংজ্ঞায়িত করলে সেটা আমাদের পুরো ভার্চুয়্যাল জগতের বহুবিধ (’সু’ এবং ’কু’) এ্যাকটিভিকে তুলে ধরতে ও বুঝে উঠতে না পারার ব্যর্থতা হতে পারে। সাইবার আইনের আওতায় কী কী থাকতে পারে, তা না জানার ঘাটতিতে সাইবার আইন নিয়ে আমাদের মধ্যে যে দ্বিধাবোধ জেগেছে, তাতে আমাদের সাইবার আইন কেন্দ্রিক প্রত্যাশা ও আশংকা পুরোটাই বাক স্বাধীনতা কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে।
অবশ্য প্রত্যাশা ও আশংকা দু’টোরই সহাবস্থান এ পর্যায়ে থাকা ভাল। কেবল এর পরিসর একমুখী না করে বহুমুখীকরণ হওয়া চাই। নয়তো আমরা পুরো ইস্যুটিকে আমাদের মাঝেই ’মিস লিড’ করার সুযোগ করে দিতে পারি। ইন্টারনেট ইউজার মাত্রই যে ব্লগার হবেন এমন কিছু নয়।তাই ইন্টারনেট ব্যবহার মানেই যে ব্লগিং হতে হবে এমনও কারণ নেই। ফলে সাইবার আইন কেবল ও কেবল মাত্র ব্লগ ও ব্লগারদের জন্য নয়।
একথা অনস্বীকার্য যে, সাইবার আইন নিয়ে আমাদের অজ্ঞতার, ইতস্ততার সবচেয়ে বড় ফায়দা নেবেন তারাই যারা ইন্টারনেটে সুস্থ ধারায় মত প্রকাশে বিশ্বাস রাখেন না, যারা ইন্টারনেটে অশ্লীলতাকে ছড়িয়ে দিতে সংঘবদ্ধ। প্রথাগত আইনি ধারনা এড়িয়ে, উন্নত বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সাইবার আইন মুক্তমত চর্চাকারী নেটিজেন, ব্লগারদের জন্য বান্ধব হয়ে উঠবে আর কাল হয়ে উঠবে স্রেফ সাইবার ক্রিমিনালদের জন্য।
***
সাইবার আইন সংক্রান্ত আরো কিছু লেখা/মতামত-
১। দেশে দেশে সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালা, ব্লগার নাজনীন১
২। গণজাগরণে সোশ্যাল মিডিয়া ও সাইবার আইন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
৩। তরুণ প্রজন্মের হ্যাকিং প্রীতি ও সাইবার আইন, http://www.dw-world.de
৪। প্রাইভেসি রক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি আইন চায় হাইকোর্ট, বিডিনিউজ২৪.কম
৫। পর্নোগ্রাফি রোধে আইসিটি আইন , দৈনিক সংবাদ (লেখক: মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রোগ্রামার, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। )
৬। সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে, বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, দৈনিক কালের কণ্ঠ
৭। সাইবার ক্রাইম : নতুন আইনের প্রয়োজন নেই, ড. শাহ্দীন মালিক, দৈনিক কালের কণ্ঠ
৮। সাইবার ক্রাইম বেড়েই চলেছে, দৈনিক আমার দেশ, ০৩ মে ২০১১
৯। সাইবার ক্রাইম রোধে আইন আছে, ইমদাদুল হক, দৈনিক কালের কণ্ঠ
১০। ওয়েবসাইট হ্যাকিং, সাইবার আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই, ড. জুলফিকার আহম্মদ, http://taiyabs.wordpress.com
১১। ব্লগার নয়, অপরাধীদের জন্যই সাইবার আইন, বাংলানিউজ২৪.কম
১২। সাইবার অপরাধবলয়, একরামুল হক শামীম , দৈনিক সমকাল