"সিগন্যাল বাতি ব্যর্থ,
ক্রমাগত দীর্ঘ সারি যান্ত্রিক পরিবহনের;
এম্বুলেন্সের স্ট্রোকের রোগীটা, সেখানেই ঘুমিয়ে পরলো
চিরতরে, স্বজনেরা নির্বাক।
স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে ঝিমুচ্ছে
সাত নম্বর বাসের অবৈধ লিকলিকে ড্রাইভার।
কালো পোশাক! খাঁকি পোশাক! জলপাই পোশাক!
ক্রমাগত দীর্ঘ সারি।
একজন কেউ হতাশ; ট্রেনটা মিস করল,
যুবকটা বার বার ঘড়ি দেখছে, কে আছে তার অপেক্ষায়?
সদ্য বাপ হওয়া মোহন আলীর দম আটকে আছে
কখন দেখবে, প্রথম সন্তানের মুখ?
মালের লরির ছাদে নিশ্চিন্তে গান গাইছে ভাড়ায় খাটা মজুর,
অনিশ্চিতেই তার জীবনের নিশ্চিত যাত্রা।
পাগলটার সুরে ক্রমাগত বিলাপ-
'শুওরের বাচ্চারা! বাতাস কর,বাতাস!'
গার্মেন্টস শ্রমিক রোজিনার বুকে কে যেন হাত দিল
প্রতিবাদ নেই, এ তার নিত্য দিনের ব্যঞ্জন।
ক্রমাগত দীর্ঘ স্তূপ কতগুলো মানুষের
যেন এক অঘোষিত মিছিল।
বাঁশির হুইসেল দিয়ে পোশাকীরা সব
ঠেলতে লাগল সেই মিছিল-
'পিছে যাও পিছে,আরো পিছে'
যেন এই জনপদ থেকে তাদের ঠেলতে ঠেলতে
বের করে দিতে চায় কোন দূর্গন্ধময় ডোবার তলায়,
যেন এই জনপদের প্রতিটি জনগন,মানুষ নয়, অবৈধ প্রবাসী
অথবা কুরবানীর বলদ।
যেন তাদের ভিক্ষা দেয়া ভোটেই ইমারত
গড়েনি কতিপয় মনুষ্যহীন মানুষেরা।
তবু,জনগনেরা পিছপা হতে থাকে,অগনিত পা
বিরোধী দলের পুঁচকে লোকটা চেঁচাল-
'দ্যাশ কি বাপের সম্পদ নি কি?'
সে ভুলে গেল তার অতীত!
শহর দেখতে আসা সাইজুদ্দির বউ বাসের মানুষের গন্ধে
সিদ্ধ হয়ে বললো-
'কি গো, রাস্তা খালি কইরা, সব কিছু থামায় রাখছে ক্যান?'
সাইজুদ্দি বিজ্ঞের মত বলে-
'মন্ত্রী যাইবো বউ, মন্ত্রী'।
সাইজুদ্দীর বউ অবাক হয়
মন্ত্রী? কত মোটা সে?
কতখানি রাস্তা লাগে তার!"
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:১৬