ইন্ডিয়ার বহিঃশত্রুর চেয়ে তাদের বড় থ্রেট অভ্যন্তরেই রয়েছে। এবং সীমান্ত নিরাপত্তার কঠোর প্রদর্শনীর অন্তরালে নিজেদের ঘর রক্ষা যে আসলে নেহায়েতই নড়বড়ে তার প্রমাণ মেলে গত রাতে মুম্বাইতে সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণের দায়ভার বিদেশী রাষ্ট্রের ঘাড়ে চাপানোর ফলে। কমপক্ষে ৮টা জাতিস্বত্তা যেখানে সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবীতে সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ, মুসলিম জঙ্গীবাদ উসকে দেবার মত অভিজ্ঞ তাত্ত্বিক ধর্মগুরু যেখানে বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক এবং খোদ সরকার যেখনে বিশালবপু রাষ্ট্রের পাশ্ববর্তী ক্ষুদ্র ভূখন্ডতে এসপিওনাজে ব্যস্ত সেখানে অসহায় ইন্ডিয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ করার জন্য বাইরের প্ররোচনা কতটুকু কার্যকর - মনে হয় একজন ইন্ডিয়ানও তা বিশ্বাস করে না। ৮শ বছর যাবত মুসলিমদের দ্বারা শোষিত হিন্দু জাতিয়তাবাদীদের উগ্রতা আর বিগত শাসক জাতির প্রয়াত আভিজত্যবোধে দূষিত মুসলিমদের পারস্পরিক সৌহার্দ্যের রক্ষাকবচ যেখানে ঐতিহাসিকভাবে দাঙ্গাবিক্ষুব্ধ হয়ে এসেছে বিভিন্ন কালে - সেখানে ইন্ডিয়ার জন্য পররাষ্ট্র চর্চার চেয়ে অভ্যন্তরীণ বৈষম্য দূরীকরণ সর্বাগ্রে প্রয়োজন।
মুম্বাই নগরীর মুসলিম নেতৃত্বাধীন মাফিয়াদের বলা হয়ে থাকে এশিয়ার সেরা। দুবাই থেকে শুরু করে কুয়ালালামপুর, সিংগাপুর, ব্যাংকক, হংকং এ রয়েছে এদের বিশাল নেটওয়ার্ক। কাউন্টার ফোর্স হিসাবে হিন্দু মৌলবাদীদের সাবোটাজ দীর্ঘকাল যাবত পর্যবেক্ষনাধীন একটা বাস্তবতা। এই উভয়ের পদক্ষেপ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্যের মিশেলে ধর্মীয় আদর্শ প্রতিষ্ঠার একটা ছদ্মাবরিত তত্ত্ব থাকে। সাধারণভাবে ইন্ডিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মুসলিমদের নেটওয়ার্ক আর পূর্বাঞ্চলের স্বাধীণতা সংগ্রামরত গোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় উন্মত্তা তেমন ক্রীয়াশীল না হলেও সবচয়ে ভয়াবহ সম্ভাবনা ভিন্নতর, কেউ কেউ বলে থাকেন বহু আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে।
এই সম্ভাবনার কথা উচ্চারণকারীদের মধ্যে অনেকে বলে থাকেন বৈশ্বিক জঙ্গীবাদ প্রসারের নীলনকশা প্রণয়নের সবচেয়ে আদর্শ স্থান মুম্বাই। তাদের মতে পিঙ্ক সিটির মর্যাদাপ্রাপ্ত মুম্বাই সর্বধরণের পরিকল্পনার আদর্শ বৈশ্বিক যোগাযোগ কেন্দ্র। এই উপমহাদেশে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর নাশকতামূলক সমস্ত কর্মকান্ডের মূল ধারণার উদ্ভব হয় মুম্বাই থেকে।
এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিদেশী রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র বলে সন্দেহের তীর ছুড়েছেন মনমোহন অথচ এখন পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোই বরঞ্চ মুম্বাই বিষয়ে ইন্ডিয়ার সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। বিশ্বে জঙ্গীবাদ প্রসারে মুম্বাই যে পীঠস্থান হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না তা নিশ্চিত করা এখন ইন্ডিয়ার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:০২