অনেকেরই জুজুর ভয় দেখাচ্ছে যে, হাসিনা ফিরে আসবে।ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে।ত্রিপুরায় প্রবাসী সরকার গঠন করেছে।যা ঢাহা মিথ্যে কথা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নির্মম বাস্তবতা হইল শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ২০২৪ সালের ৫ ই আগষ্ট বিকেল ৩ টা ৩০ মিনিটে হয়ে গেছে।
গত ১০০ বছরের ইতিহাসে কখনো পতিত স্বৈরাচার ফিরে আসে নাই।
যেসকল পতিত স্বৈরাচার দেশে গ্রেফতার হয়েছে তাদের হয়তো ফাঁসি দেওয়া হয়েছে বা যাবদজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।আর ইরানের শাহ রেজা পাহলভী এর মত দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তাদের সারাজীবন নির্বাসিত জীবনযাপন করতে হয়েছে।এইদিকে শেখ হাসিনার বর্তমান বয়স ৭৭ বছর।
আওয়ামী লীগ আগামী ১০ বছর মাঠেই সুষ্ঠুভাবে দাঁড়াতে পারবে না।তাহলে ১০ বছর পর শেখ হাসিনার বয়স হবে ৮৭ বছর।বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ৮৭ বছরের একজন বৃদ্ধা মহিলা কোনভাবে রাজনীতি করতে পারবে না।কারন বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হইলে আপনাকে জেলে যেতে হবে, মাইর খাইতে হবে যা শেখ হাসিনা এখনই করতে হিমশিম খাবেন।
সুতরাং হাসির চ্যাপ্টার ক্লোজড।সুতরাং আপা আর আসবে না।কোন আওয়ামী লীগ সমর্থক বা কর্মী যদি আমার লেখা পড়েন তাহলে বিষয়টা মাথায় ঢুকিয়ে রাখেন।
কিন্তু আমি মনে করি দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে।কারন তার রাজনৈতিক স্পেস অন্য কেউ দখল করতে পারবে না।
কিন্তু আওয়ামী লীগ সহজে ফিরে আসতে পারবে না।এর বড় কারন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কাঠামো শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের ধ্বংস করে দিসেন।
আধুনিক ২০২৪ সালে একটি রাজনৈতিক দলের যে অবকাঠামো হওয়া উচিত সেইটা আওয়ামী লীগের নাই।আমি কখনো কখনো অবাক হয়ে যাই যে, আওয়ামী লীগের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ইংল্যান্ড, দুবাই আর যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০টির উপরে বাড়ি আছে তৈরি করেছেন এবং যার আনুমানিক মূল্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার তথা সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা।অথচ এই দলটির কোন সংঘবদ্ধ সাইবার টিম বা মিডিয়া সেল নাই।
অর্থাৎ আওয়ামী লীগ পুরোপুরি রাষ্ট্রযন্ত্র তথা পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার উপর নির্ভরশীল ছিল।
এখন দলটির পুরো কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে।একটি রাজনৈতিক দলে বয়ান তৈরি করার মত বুদ্ধিজীবী লাগে, ডেডিকেটেড সাইবার তথা অনলাইন মিডিয়া একটিভিস্ট লাগে, সাংস্কৃতিক উইং লাগে।
আওয়ামী লীগ গত ২০১৩ সালের পর একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে সবকিছু হারিয়ে ফেলেছে।তাদের পক্ষে কথা বলার মত সর্বজন গ্রহনীয় বুদ্ধিজীবী নাই।জাফর ইকবাল ও মুরগী কবিরদের আওয়ামী লীগ পঁচিয়েছে।তাদের নতুন প্রজন্মের সাইবার যোদ্ধা নাই; অমি পিয়ালদের গ্রুপ কাজ করছে যাদের গড় বয়স ৫০ এর কাছাকাছি।আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উদীচী আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার ছেলের সঙ্গে সংঘাতের জের ধরে।সুতরাং আওয়ামী লীগ এখন বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দেওলিয়া।
তাদের সবচেয়ে সমস্যা হইল ৩০ বছরের নিচের নাগরিকরা তাদেরকে পছন্দ করে না।নতুন প্রজন্মের যারা ছাত্রলীগ করেছে তাদের অধিকাংশ চুর, বাটপার, পকেটমার, চাঁদাবাজ, ধর্ষক, কিশোর গ্যাং এর লোক।সুতরাং এরা নিজেদের ভেতর গুটিবাজি করতে পারবে কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে বিরোধীদল মোকাবিলা করতে পারবে না।
তবে আওয়ামী লীগের রাস্তায় জনবল আছে।সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য প্রচুর লোকবল রয়েছে।কিন্তু তাদের দিয়ে আওয়ামী লীগ আরেকটি লগি বইঠা আন্দোলন করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগকে যদি পুনরায় আসতে হয় সেইটা জয় বা পুতুলের মাধ্যমে আসতে হবে।আমি জয়ের চেয়ে পুতুলকে উৎকৃষ্ট মনে করি।কিন্তু সে কি দেশে সরাসরি আসার সাহস করবে সেইটা সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৫০