আওয়ামী লীগ ও সরকার সমর্থক ছাত্রলীগের ৪৭ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ১৪ বছর আগের পুলিশ কর্মকর্তা হত্যামামলা খারিজ করেছে আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে তা খারিজ করা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের বিচারক রবিউল হাসান সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর দ্বিতীয় দফা আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি খারিজ করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের পিপি মো. আইয়ুব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার ১৫তম সভার সুপারিশের ভিত্তিতে দ্বিতীয় দফায় মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করি।" তিনি জানান, মামলার বাদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলাটি আর চালানোর পক্ষে নয় বলে আবেদনের শুনানিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৯৬ সালের ১১ ফেব্র"য়ারি তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম নগরীর জাকির হোসেন সড়কের ওমর গণি এমইএস কলেজের সামনে কর্তব্যরত অবস্থায় বুকে গুলিবিদ্ধ হন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার বশির আলী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনায় পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন ওসি এমএ নেওয়াজী একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এমইএস কলেজের তৎকালীন ভিপি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীসহ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ৪৯ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৩ নভেম্বর ৪৯ জনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যে মামলার দুই আসামি মারা গেছেন। রোববার মামলাটি প্রত্যাহারে দ্বিতীয় দফা আবেদন করেন মো. আইয়ুব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের পিপি অ্যাডভোকেট মো. আইয়ুব মামলাটি 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক' উল্লেখ করে একই আদালতে মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন গত ১৫ সেপ্টেম্বর।
আদালাত গত ২২ সেপ্টেম্বর খারিজ আবেদন নাকচ করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এর বিচার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা প্রত্যাহারের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি জানিয়ে ওইদিন খারিজ আবেদন করে আদালত বলেছিলো, "স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে নয়, সুপ্রিম কোর্টের আদেশে এ মামলার বিচারকাজ অব্যাহত রাখা হবে।"
অন্যতম আসামি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ২০০৩ সালে মামলার বিচার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এটি হাইকোর্ট ঘুরে আপিল বিভাগে গেলে ২০০৭ সালে সর্বোচ্চ আদালত নিম্ন আদালতেই ওই আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। মামলাটি এ বছরের ১২ অগাস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। ইতিমধ্যে এ মামলায় ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আরো ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি আছে।
-----------------বিডিনিউজ