somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বারাক ওবামা: চামড়া নিয়া ডগমগ করার রাজনীতি

১৩ ই নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পয়লা কিস্তি


বারাক ওবামা মার্কিন মুল্লুকের মাননীয় হর্তাকর্তা হইছেন। সে মুল্লুকের বাসিন্দারা তারে সাদা-বাড়িতে যাইবার টিকেট দিছে। তো, বারাক হোসেন ওবামা কালো চামড়ার একজন আফ্রো-আমেরিকান, ডেমোক্রাট এতো হইচই বাধাঁইলেন ক্যেমনে? এত্তো মাতামাতির হইলোটা কি? দুনিয়াতে কি সত্যিই উথাল-পাথাল পরিবর্তন আইসা পড়লো নিহি! মার্কিন মুল্লুকের শরীফ বাসিন্দারা হঠাৎ জাইগা উঠলো? কী তাহাদের চক্ষু খুলিয়া দিল? এত এত সাধু রব!

এইসব আউলার মইধ্যে, বা তারোও আগে যখন জল্পনা চলতাছিলো আর নানা মুনিরা গভীর পাণ্ডিত্যের ততোধিক ভার নিয়া নানান চ্যানেল, মিড়িয়ায় কথামৃত ছড়ায়া যাইতেছিলেন তখন থেইকাই খাবি খাইতাছিলাম।

আমরা চাই বা না চাই যেহেতু সাম্যাজ্যের নতুন সম্রাটের অভিষেক হইবো, বেবাকরেই তা জানতে হইবো, বাচতে হইবো! স্মরণে আসে কিছুকাল আগে প্রয়াত মহান পোপ(সম্রাটের) কথা। তাঁর মৃত্যু ও উত্তরসরির আগমন টানা দুইটা হপ্তা জগৎবাসির অবিরাম হজম করতে হইছিলো, যেন তখনো দুনিয়ায় একটা মহাপ্রলয় ঘটিয়া গিয়াছিলো। খৃস্ট ধর্ম ও মার্কিন দেশ তাবত দুনিয়ার যা কিছু আলো ও ভালো-- সব কিছুর একচেটিয়া মালিকানা রাখে। মুক্তি ও মঙ্গলের সবটাই তাহারা উদার হস্তে দিকে দিকে সেই কবে থেকে বিতরণ করিয়া অভ্যস্ত। তবু বাদবাকি দুনিয়ার বাদামি অদমি হওয়ার জন্য অথবা খাসিলতের দরুন( কলনিয়াল মাস্টারগো ভাষায়) মন খালি খসখস করে।

পিওয়র ব্লাক বা ন্যাটিভ দুটার কনোটাই ওবামা না, হাফ কেনিয়ান লিগেসি(বাবার সহচার্যে থাকার সুযোগ পান নাই)। মার্কিন মাতা অ্যান ডানহামের ঘরে জন্ম(৪আগস্ট ১৯৬১), পরে দ্বিতীয় পিতা ইন্দোনেশিয়ান হওনের সুবাদে সেইখানে বাল্যকাল কাটাইছেন। ১০ বছর পর থেকা নানা-নানির কাছে হাওয়াইতেই বড় হইছেন। কলাম্বিয়া এবং হার্ভাড গ্রাজুয়েট-- রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইনে। নানা কমিউনিটি ও চার্চ বেইজ অর্গানাইজেশনের লগে কামকাজ করছেন। তার কারণে নির্বাচনি প্রচারণার সময়ে টুকটাক হেপাও সামলাইতে হইছে। ওবামা কোন ধরণের ও কতটুকু খ্রিস্টান তা পাই পাই কইরা হিসাব দিয়া খালাস পাইতে হইছে। বাইবেল ধইরা কিরা-কসম কাটা দেইখা অবশ্য এদেশীয় (আবাল)কিছু সেক্যুলার হায় হায় কইরা মাতম তোলার জোগাড়। যাউক সে কথা, মোটামুটি সবকয়টা জায়গাতেই ওবামা পাস করে কেবল সন্দেহ আর দুরু দুরু বুক ধুকপুকানি জারি থাকে জন্ম দোষে কালা-চামড়াটা নিয়া। ইহাতেই জগতের যত বর্ণবাদ নির্মূল আর ইতিহাস পয়দা করার হূলস্থুল বাইধা যায়।

আর কিছু না, ওবামার আর কোন বিশেষত্ব নিয়া কথা উঠে নাই। অবশ্য সেটা নাইও, হেই বাতচিতই অধমের মূখ্য আলোচ্য। পরে আসতাছি।

ওবামার চামড়া নিয়া হাউকাই লাইগা যাওনের কারণ যে নাই তা কিন্তু না। পৃথিবীতে আধুনিক সভ্যতা আর হালে 'ঈশ্বরের উপহার' গণতন্ত্র রপ্তানির সোল এজেন্ট হইলেও এরা সভ্যতার অতি প্রাথমিক বিষয়গুলাও হাসেল করতে পারে নাই। লাখ লাখ রেড ইন্ডিয়ানদের গণহত্যার মাধ্যমে যে যাত্রার সূচনা করছে তা ভূগোলের আর আর অংশে জারি তো আছেই অ-খ্রিস্টান (শুধু ইহুদিরা বাদে) ও অপরাপর জাতি-গোষ্ঠীর লোকরা এখনো সেইখানে তৃতীয় চথুর্ত শ্রেণীর। আর একদা যারা গোলাম-দাস ছিলো সেই কালা আদমির বংশধররা-- মার্কিন মোট জন সংখ্যার ১২% কিন্তু মোট কয়েদির অর্ধেক--কয়েধখানায় পচতাছে। প্রতি তিজনের মইধ্যে অন্তত একজন কালা আদমিরে জীবনে একবার হইলেও কাঠগড়ায় খারাইতে হয়। আফ্রো-আমেরিকান লোকদের দারিদ্রাবস্থা মহামারির লাহান। তারা বহুত গবেষণা কইরাও তাল পাইতাছেনা যে চাকুরি, আবাসন, স্বাস্থ্য ... ইত্যকার নাগরিক সেবা পাইতে গেলে কালাদের কেন বর্ণবাদের শীকার হইতে হয়, বঞ্চনার শূলে চড়া থামে না। এত উন্নত গণতন্ত্রের মড়োলদের মুল্লুকে ইহা তো সত্যিই আজিব। কি করিয়া তাহারা প্রমাণ করিবে যে কালাদের ছাড়া মার্কিন মুলকিয়াত অচল, তাহারা কি কলিন পাওয়েল ও কন্ডলিজা রাইসকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় শীর্ষ ক্ষমতাধর পোস্টে বসায় নাই। তার পর ও এইবার ওবামারে খালি ভোট না রিতিমত প্রেসিডেন্ট বানাইয়া প্রমাণ করতে হইলো তাহারা আর বর্ণবাদী না। কি মুশকিল ওবামার রাজনীতি পচন্দ না হইলেও বর্ণবাদীর খেতাব পাইতে হইবো। এ এক জটিল সমস্যা। যারা ওবামারে ভোট দিছেন তারা সবাই বর্ণবাদ ছারায়া গেছেন আর যারা ভোট দেন নাই তারা হগ্গলে রেসিস্ট?

এই সওয়াল ধইরা পরের কিস্তিতে আগানোর ইরাদা রাখি...
১৯৮ বার পঠিত
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এনসিপিকে আমাদের দেশের তরুণ-যুবা'রা ক্ষমতায় দেখতে চায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ১২:৪৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে পাড়া-মহল্লায় জনতার আদালত গঠনের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি তথা এনসিপি। দেশের বৃহত্তম ইসলামী দল 'ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ' তথা চর মোনাইয়ের পীর সাহেবের দল এনসিপিকে আগে থেকেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাতৃ ভাণ্ডার

লিখেছেন ঠাকুরমাহমুদ, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ৩:২৬



আমাদের দেশে মিষ্টি পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া বিরল ব্যাপার। ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে যারা যাতায়াত করেন মাতৃ ভাণ্ডারের সাথে পরিচিত নন এমন মানুষও মনে হয় খুব বেশি নেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

এনসিপি জামায়াতের শাখা, এই ভুল ধারণা ত্যাগ করতে হবে

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

প্রিয় রাজীব ভাই,
আপনি আমার আগের পোস্টে কমেন্ট করেছেন যে, এনসিপি জামায়াতের শাখা। আপনার এনালাইসিস ভুল! ওরা জামায়াতের শাখা নয়। এনসিপি-কে বুঝতে হলে, আপনাকে জামায়াতকে জানতে হবে। আমি একটু বিস্তারিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

ছবি কৃতজ্ঞতা এআই।

ভূমিকা

নারীর অধিকার নিয়ে আলোচনা ইতিহাসের এক দীর্ঘ অধ্যায়। পাশ্চাত্যে নারী আন্দোলন শুরু হয় ১৮শ শতকের শেষভাগে, যার ফলশ্রুতিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি স্মার্ট জাতির অন্তঃসারশূন্য আত্মজৈবনিক !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪


একটা সময় ছিল, যখন জাতির ভবিষ্যৎ বলতে বোঝানো হতো এমন এক শ্রেণিকে, যারা বই পড়ে, প্রশ্ন তোলে, বিতর্কে অংশ নেয়, আর চিন্তা করে। এখন জাতির ভবিষ্যৎ মানে—ইনফ্লুয়েন্সার। তারা সকাল ১০টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×