somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি কবিতা ও একটি দেশের জন্ম।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আহমেদ তাকদীর: স্বাধীনতার কাঙাল ছিলেন গিন্সবার্গ। ছুটে বেড়িয়েছেন বিশ্বের অসংখ্য দেশে। ঝোলায় এলএসডির রঙিন মাদকতা নিয়ে সন্ত সেজেছেন। তার চোখে অবাধ স্বাধীনতা। আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ছিলো প্রতিনিয়ত। বিক্ষত হয়েছেন বাংলাদেশের জন্মš§দেখে। গুমড়ে উঠেছে তার অন্তস্বর আমিত্ব। তিব্বতের সরু রাস্তায় হেঁটে হেঁটে চলে আসলেন বঙ্গভূমে। কবিতা আর মানুষের খোঁজে চষে বেড়াচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ। সঙ্গী সাথী সাহিত্য সংঘ কৃত্তিবাসের চ্যালারা। বাঙালী তখন গৃহহারা। জন্মের কষ্টে আড়ষ্ট বাঙালির দুখে আঁতকে উঠেছিলেন সেদিনের গিন্সবার্গ। তুচ্ছ জ্ঞান করেছিলেন হাঁটার কষ্টকে। যশোরের প্রান্তে সরু পিচের রাস্তায় সারি সারি হাড্ডিসার মানুষ দেখে গিন্সবার্গ নিজের অজান্তেই অশ্রুসজল হলেন লিখলেন একটি কবিতার চার লাইন
Millions of babies watching the skies
Bellies swollen, with big round eyes
On Jessore Road-long bamboo huts
No place to shit but sand channel ruts

আদ্যপান্ত উল্টোপাল্টা গিন্সবার্গ লিখলেন দুর্দশার বিশ্বস্ত শোকগীতি। বিশ্ব টের পেলো বাঙালির দুর্দশা। ত্যাগ আর বেদনা। যশোর সীমান্তে তখন তিনি বেআইনি পরিদর্শক। অবশ্য আইনের প্রসঙ্গ অমূলক। মাতৃভূমি ছেড়ে জীবনের মায়ায় বাঙালি তখন পরজীবী। সেই সব মানুষের জন্য লিখলেন গিন্সবার্গ তার কবিতার দ্বিতীয় স্তবক
Millions of fathers in rain
Millions of mothers in pain
Millions of brothers in woe
Millions of sisters nowhere to go

সত্যিই তখন বাঙালির যাওয়ার কোন জায়গা নেই। মৃত্যুই শুধু নিশ্চিত ঠিকানা। ব্যক্তিগতভাবে গিন্সবার্গের উপলব্ধি বাঙালি তখন বেদনাকাতর দুর্ভাগা ও রিফিউজি। শিশুদের মুখগুলো তাকে বেশি ভাবিয়ে তোলে। অনেক ক্ষেত্রে কেঁদেও ফেলেন। সঙ্গী সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সেদিনের স্মৃতি চারণেও এ কথাগুলো স্বীকার করেছেন। কবিতা লিখতেন গিন্সবার্গ। ভুল হলো, কবিতা নয় স্বাধীনতাকে ধরে নিয়ে আসতেন অক্ষরের ভেতরে। সব কিছু সম্ভব তার কাছে। তাই বাংলাদেশের জন্মলগ্নে গিন্সবার্গ বিশ্বকে শুনিয়েছিলেন একটি শিশু জন্মের কথা। জন্ম বেদনায় আড়ষ্ট দেশের মানুষের কথা। আত্তত্যাগে বলিয়ান মানুষের কথা। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাদের মরে যাওয়ার আর বেঁচে থাকার কথা। বিখ্যাত সেই কবিতার একস্থানে তিনি কাতর কণ্ঠে বলেন-
How many souls walk through Maya in pain
How many babes in illusory pain?
How many families hollow eyed lost?
How many grandmothers turning to ghost?


বাংলাদেশ বান্ধব বিখ্যাত এ মার্কিন কবি শুধু কবিতা লিখেই থামেননি। নিজ কণ্ঠে কবিতার রেকর্ড বের করেছেন। বিক্রি করেছেন বাঙালির স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করার জন্য। গিন্সবার্গকে নিয়ে একটা কথা বলা হয়, আদমের পর গিন্সবার্গই পোশাক নিয়ে সবচে অকপট। নিজেকে উজাড় করতে, উদার করতে, নাঙ্গা করতে দ্বিধা ছিলো না বিন্দুমাত্র। সত্যিই তিনি বাঙালির সেদিনের অদম্য ইচ্ছা ধরতে পেরেছিলেন। জন্মের তাণ্ডবলীলাকে সৃষ্টির বেদনা হিসেবে ভেবে ছিলেন তিনি।
Finish the war in your breast with a sigh
Come tast the tears in your own Human eye
Pity us millions of phantoms you see
Starved in Samsara on planet TV


যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই তিনি জন্ম দিয়েছেন প্রতিবাদী ও স্বাধীন সব পঙক্তিমালা। বাংলাদেশবান্ধব এ কবি বিশ্বকে যে শিশুর আগমনী শুনিয়েছিলেন। যে শিশু আজ ৩৫ বছরের যুবা। তবে জাতি আজও মাঠে ঘাটে ময়দানে, উত্তাল জনসভায়, মিছিলে মিছিলে স্বাধীনতা খুঁজে বেড়াচ্ছে।

১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×