বিশ্বে প্রতি বছর আত্মহত্যা করে দশ লাখ মানুষ। ঠিক কী কারণে বা কোন্ অবস্থায় মানুষ আত্মহত্যা দিকে ঝোঁকে সেটা গবেষকদের কাছে এখনো পরিষ্কার নয়। আত্মহত্যা হারের দিক থেকে এগিয়ে আছে এশীয়রা। আর এর পরেই আছে পূর্ব ইউরোপ ও বাল্টিক সাগরের তীরবর্তী দেশগুলো। বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। আর জাপানে এ হার সবচে বেশি। উদ্বেগের কথা হলো এই যে বিশ্বে আত্মহত্যা প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। বিশ্ব আত্মহত্যা পরিস্থিতি নিয়ে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (হু) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিঙ্গভেদে পুরুষরা বেশি আত্মহত্যা প্রবণ। ১০-২৪ বয়স সীমায় নারী-পুরুষের আত্মহত্যা অনুপাত ১:৩। আবার ২৪-৮৫ বয়স সীমায় এই অনুপাত ১:১০। ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে নারীর আত্মহত্যার হার খুবই কম যেখানে পুরুষের হার ভয়াবহ রকম বেশি। আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন আমেরিকার মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ডি ক্যাটানজারো । তার ভাষ্য মতে পুরুষরা মানসিকভাবে সববয়সেই নারীর চেয়ে বেশি ঝুঁকি গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকে তাছাড়া জীবনের দাম নারীর কাছে যতোটা পুরুষের কাছে ততোটা নয়। সে কারণেই পুরুষের আত্মহত্যা হার বেশি। ক্যাটানজারো তাঁর গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেছেন সামাজিক ব্যর্থতা, বিষাদময় ব্যক্তিজীবন, অর্থনৈতিক টানাপড়েন, মানসিক পীড়া, ধর্মীয় অনুভতি ইত্যাদি কারণে মানুষ আত্মহত্যা করে অথবা করার জন্য উদ্যোগী হয়।
আত্মহত্যায় উদ্যত মানুষ অনিবার্য পরিস্থিতি এড়াতে, অথবা তার সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান বলে একে মনে করে । বর্তমান বিশ্বে আত্মহত্যার সংখ্যাবৃদ্ধির একটা বড় কারণ আত্মঘাতী হামলা। ধর্মীয় কারণে এবং রাজনৈতিক দাবি আদায়ের জন্য ব্যাপকভাবে বাড়ছে আত্মঘাতী প্রবণতা। ১১শতকে পার্সিয়ান সম্রাট আলামুত তার শত্রুপক্ষের সেনাপতিকে হত্যা করতে নিজের লোকদের দ্বারা আত্মঘাতী হামলা চালান। সেখানে থেকে সূত্রপাত হলেও আত্মঘাতী হামলার প্রথম বহুল ব্যবহার শুরু হয় লেবাননে। ১৯৮৩ সালে বৈরুতে প্রথম আত্মঘাতী হামলা করা হয় আমেরিকার একটি প্যারাট্র-পার সৈন্য দলের উপর। এরপর এ ধরনের আত্মঘাতী আক্রমণ পছন্দনীয় হতে থাকে ফিলিস্তিন, শ্রীলংকা, চেচনিয়াসহ বিশ্বের আরো অনেক দেশের বিদ্রোহী ও স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে। বিচ্ছিন্নতাবাদী, স্বাধীনতাকামীসহ অনেকেই দাবি আদায়ের জন্য আত্মঘাতী হামলাকারীদের ব্যাবহার করছে। ১৯৮৭ সালে ফিলিস্তিনে ইন্তিফাদার কার্যক্রম শুরু হবার পর এ পর্যন্ত ২১৬৬ জন আত্মঘাতী হয়েছে। বিভিন্ন মার্কেট, নাইটক্লাব, স্টেশনসহ ঘনবসতি পূর্ণ অঞ্চলগুলোতে এসব হামলা চালানো হয়েছে। আর এসব আত্মঘাতীর শতকরা ৯০ জনেরই বয়স ছিল ১৭-২৩ বছরের মধ্যে। বিবিসি,
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০০৮ দুপুর ২:৩৯