কর্নেল ফারুক অক্টোবরের শেষ দিকে (পচাঁত্তুর) এতোটাই আতংকে অস্হির যে, বঙ্গভবনে আরো আটটা ট্যাংক মোতায়েন করলেন। এই নিয়ে ষোলটা ট্যাংক এখন বঙ্গভবন ঘিরে। তবে আতংক কমছে না কিছুতেই।
আতংকগ্রস্থ হবার মূল কারণ ঘাড় ত্যারা ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ। অনেকেই বঙ্গভবনে এসেছে, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের দেখা মেলেনি। সে যা করছে তা ভয়ার্ত হবার জন্য যথেষ্ট।
তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কর্নেল হুদা তার সাথেই আছেন। রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে, দশ ও পনেরো ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ধেয়ে আসছে। শুধু ট্যাংক দিয়ে এই বিশাল রেজিমেন্টগুলো কিভাবে ঠেকানো সম্ভব।
উপায়ান্তর না দেখে, ফারুক টেলিফোন করলেন জেনারেল ওসমানীকে। একমাত্র তিনিই সিনিয়রমোস্ট হিসাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয়। ওসমানী গম্ভীর ভাবে বললেন, দেখা যাক, আমি অনুরোধ করতে পারি অর্ডার করতে পারি না।
নভেম্বরের তিন তারিখ, রাত আনুমানিক আট টা :
ওসমানী : খালেদ, কি হচ্ছে এসব।
খালেদ : এখনো তেমন কিছু হয়নি স্যার। আপনি ওদের বলুন, ট্যাংকগুলো ঘরে ফিরে যাক।
ওসমানী : আমি কাল বঙ্গভবনে যাচ্ছি, তুমিও আসো। আমরা কথা বলি। মেজর রশীদ তোমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে।
খালেদ : আমি কোন খুনি দেশ পরিচালক মেজরদের সাথে কথা বলবো না, যদি না তারা চেইন অব কমান্ডে আসে। এরা ব্যারাকে না ফেরা পর্যন্ত আমার চোখে খুনী এবং রাষ্ট্রদ্রোহী।
ওসমানী : থতমত খেয়ে বললেন, বঙ্গভবনে জোর গুজব, তুমি জিয়াকে হত্যা করেছ? সত্যিই নাকি?
খালেদ : আমি রক্তপাতে বিশ্বাসী নই। জিয়াকে আটক করা হয়েছে, হত্যা নয়। তবে বঙ্গভবনে ঢুকে আমি একজনকেই খুন করবো। নাম জানতে চান? খন্দকার মোস্তাক নামের শ্বেতসর্পকে।
ওসমানী : কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবে না খালেদ।
খালেদ : যেসব মেজর হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা জাতীকে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে, দয়া করে সেই মেজরদের বোঝাবেন স্যার।
ওপাশ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস আর তার পরপরই কুট করে লাইন কেটে যাবার শব্দ।
কৃতজ্ঞতাঃ সাইফ রাজু
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮