somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রখ্যাত স্কটল্যান্ডীয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক স্যার থমাস শন কনারির ৮৩তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্যার থমাস শন কনারি যিনি শন কনারি নামেই সমধিক পরিচিত। শন কনারি একজন একাডেমি পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা পুরস্কার বিজয়ী স্কটল্যান্ডীয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত লাভ করেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় বন্ড চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয়ের জন্য। আমাদের মধ্যে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কস্টসাধ্য যে কিনা এখনো বন্ড সিরিজেরে কোন চলচিত্র দেখে নাই ।


জেমস বন্ড ০০৭ নামটি শুনলেই আমাদের সামনেই চলে আসে এমন এক মানুষের নাম যে কিনা অসাধারণ গতিময়তা এবং উপস্থিত বুদ্ধি দ্বারা অসম্ভবকে সম্ভব করতে সমর্থ । ১৯৬২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি মোট ৭টি বন্ড ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৮ সালে তিনি দ্য আনটাচেবল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও মেরিন, ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড, দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর, ড্রাগনহার্ট, দ্য রক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আজ এই অভিনেতার জন্মদিন। ১৯৩০সালের আজকের দিনে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তাঁর ৮৩তম জন্মদিন। জন্মদিনে জেমস বণ্ডখ্যাত অভিনেতা শন কনারির জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা।


(শিশুকালে শন কনারি)
বন্ড নায়ক শন কনারি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩০ সালের ২৫ আগস্ট। তার বাবা ছিলেন একজন কারখানা শ্রমিক। পরে সে কাজ ছেড়ে তিনি লরি চালানো শুরু করেন। আর তার মা ছিলেন ধোপা। শন নিজেও তার কর্মজীবন শুরু করেন দুধওয়ালা হিসেবে। এরপর তিনি নেভিতে যোগ দিলেও আলসারের কারণে তাকে নেভি থেকে চাকরিচু্যত করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে তিনি লরি চালক, শ্রমিক, এডিনবার্গ আর্ট কলেজের এক শিল্পীর মডেল ও কফিন বিক্রির কাজ করেছেন। তিনি যে অভিনেতা হবেন, তাই বা কে জানতো? একদিন বন্ড হয়ে তিনি দুনিয়া মাতাবেন, তা ছিলো সবারই ধারণার বাইরে। ১৯৫১ সালে টাকার খোঁজে তিনি কিং'স থিয়েটারে যোগ দেন। এখানে তিনি ব্যাকস্টেজে অভিনেতাদের সাহায্য করতেন। এখানে কাজ করতে গিয়েই তিনি অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন। শুরু হয় তার অভিনয় জীবন।


(যৌবনে শন কনারি)
শন কনারি সবচেয়ে বেশি পরিচিত লাভ করেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় বন্ড চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয়ের জন্য। ব্রিটিশ লেখক ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সাড়া জাগানো গোয়েন্দা চরিত্র এই জেমস বন্ড। উপন্যাসে বন্ডকে দেখানো হয় রয়্যাল নেভির একজন কমান্ডার হিসেবে, পরে যাকে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের নাম পরিবর্তন করে এমআই৬ রাখা হয়, যার মানে অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস। জেমস বন্ডের কোড হচ্ছে ০০৭। ০০ কোড শুধু তাদেরই দেওয়া হয় যারা প্রয়োজনে হত্যা করার লাইসেন্সপ্রাপ্ত। ফ্লেমিং জেমস বন্ডকে নিয়ে ফেঁদেছেন ১২টি উপন্যাস আর দুটি ছোটগল্পের সংকলন।


ফ্লেমিংয়ের মৃত্যুর পর জেমস বন্ড চরিত্রটিকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য বই, চলচ্চিত্র, কমিকস, ভিডিও গেমস ইত্যাদি । ১৯৫৪ সালে ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট থ্রিলার চরিত্র জেমস বন্ডকে নিয়ে প্রথম টিভি সিরিয়াল তৈরি করা হয়। তখন থেকেই ফ্লেমিং চিন্তা করছিলেন বন্ডকে নিয়ে ছবি বানানোর। কিন্তু কোনো প্রযোজকই রাজি হচ্ছিলেন না। অবশেষে ১৯৫৯ সালে অ্যালবার্ট ব্রোক্কোলি রাজি হলেন বটে, কিন্তু তার পার্টনার বেঁকে বসলেন। ১৯৬১ সালে ব্রোক্কোলির সঙ্গে বন্ডের প্রযোজক হিসেবে গাঁটছড়া বাঁধলেন হ্যারি শার্ল্টজম্যান। তারা কাহিনী হিসেবে প্রথম ছবির জন্য পছন্দ করলেন 'ডক্টর নো'। আর বন্ড খুঁজে বের করার জন্য 'ফাইন্ড জেমস বন্ড' শিরোনামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বসলেন। সেই প্রতিযোগিতায় ২৮ বছর বয়সী পিটার অ্যান্থনি নামে এক মডেল জয়ী হলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো, তাকে বন্ড চরিত্রের সঙ্গে ঠিক মানাচ্ছে না। সুতরাং, তাকেও বাদ দেয়া হলো। শেষমেশ প্রথম বন্ড হিসেবে শন কনারিকেই বেছে নেয়া হলো।


১৯৬২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি মোট ৭টি বন্ড ছবিতে অভিনয় করেছেন। বণ্ড চলচ্চিত্রের প্রথম পাঁচটি ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিগুলো হলো - ড. নো (১৯৬২), ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিঙ্গার (১৯৬৪), থাণ্ডারবল (১৯৬৫) এবং ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস (১৯৬৭)। তারপর পুণরায় তিনি ডায়মণ্ডস আর ফরএভার (১৯৭১) এবং নেভার সে নেভার এগেইন (১৯৮৩) ছবিতে বণ্ড হিসেবে পুণরায় অংশগ্রহণ করেন। বণ্ড সিরিজের সাতটি চলচ্চিত্রই বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি দ্য আনটাচেবল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও মেরিন, ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড, দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর, ড্রাগনহার্ট, দ্য রক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।


১৯৬২ সালে শুরু হয়েছিল জেমস বন্ডের সেলুলয়েড-কাল। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত চলমান এই জনপ্রিয় সিরিজে জেমস বন্ড হিসেবে দেখা গেছে হলিউডের নিজ নিজ সময়ের সেরা ছয় হার্টথ্রবকে। সবাই পেয়েছেন সাফল্য। তবে সেই সাফল্য কি জেমস বন্ডের খ্যাতিতেই এসেছে, নাকি তারকাদের যোগ্যতায়? যদি তারকাদের যোগ্যতার বিচার করা হয়, তাহলে ছয় বন্ডের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাবেন যে কেউ। কারণ কাকে রেখে কার কথা বলবেন? ড্যানিয়েল ক্রেইগ অবশ্য বিব্রত হলেন না মোটেও। উল্টো আরো ঘোষণা দিয়েই বলে দিলেন, 'শন কনারিই সেরা বন্ড।' জেমস বন্ড সিরিজের প্রথম ছবিতেই শন কনারি অভিনয় করেছিলেন বন্ড হিসেবে। আর তখন থেকেই নাকি তিনি অনবদ্য। এমনটাই দাবি ক্রেইগের, 'তিনি নিজস্ব একটা ভাবমূর্তি তৈরি করতে পেরেছিলেন।


শন কনারির সময়কার জেমস বন্ডের ছবিগুলো এখনো মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। রজার মুর আর শন কনারির মধ্যে থেকে সেরা একজনকে বেছে নিতে বললে আমি অবশ্যই শনকে বেছে নেব।' আর শন কনারির ছবিগুলো যেকোনো সময়ের জন্যই অনবদ্য বলে দাবি করলেন সাম্প্রতিক সময়ের 'বন্ড' ক্রেইগ। আজ এই অভিনেতার ৮৩তম জন্মদিন। জেমস বণ্ডখ্যাত অভিনেতা শন কনারির জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে মুসলিম চরিত্রের অনুপস্থিতি: এক অনালোচিত প্রশ্ন?

লিখেছেন মুনতাসির, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:০৫

সত্যজিৎ রায়, যিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পরিচিত, তাঁর চলচ্চিত্র, গল্প এবং গোয়েন্দা সিরিজ ফেলুদা বাস্তববাদী চরিত্র, সমাজচিত্র, এবং গভীর দার্শনিকতা নিয়ে আলোচিত। তবে তাঁর কাজের মধ্যে একটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুরের জাদু: গিটার বাজালে কি ঘটবে?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪১



গাজীপুরের পুবাইলের পুরনো গির্জাটি রাতের আঁধারে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই গির্জার নির্মাণকালে কিছু না জানা কুসংস্কারের অনুসরণ করা হয়েছিল। গাজীপুরের লোককথায় বলা হয়, এই গির্জার নিচে আটটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা, লোভী এবং সাম্রাজ্যবাদীও বটে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা এবং লোভীও....

জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের হিংস্র ও আগ্রাসী। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চাওয়া এবং স্বাধীন থাকতে চাওয়া কিছু অঞ্চল যেমন হায়দ্রাবাদ, ত্রিবাংকুর, ভূপাল, যোধপুর, জুম্ম-কাশ্মীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১০

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

এআই দ্বারা তৈরিকৃত রাজনৈতিক কার্টুন—যেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অসাম্যতা ও রাজনৈতিক নির্ভরতার প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষকদের দ্বৈত চরিত্র এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৬


বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিয়ে সবার মুখে নানা রকম কথা শোনা যায় । কেউ কেউ বলছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি হচ্ছে , কেউ বলে দিন দিন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×