আর চিকিৎসকদের পরীক্ষায় ঐশীদের বাসার গৃহকর্মী খাদিজা খাতুন সুমীর বয়স পাওয়া গেছে ১১ এর মতো।
চিকিৎসকদের এই প্রতিবেদন মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পৌঁছেছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকতা উপপরিদর্শক গাফ্ফারুল আলম।
বাবা-মায়ের হত্যাকারী সন্দেহে ঐশীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় পুলিশের পক্ষ থেকে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
গত ১৬ অগাস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের ফ্ল্যাটে এসবি পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ পায় পুলিশ।
তার আগের দিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া ঐশী ১৭ অগাস্ট পুলিশের কাছে ধরা দেন। এরপর তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে ঐশী। আর তার চাপে বাধ্য হয়ে সুমী এ কাজে সহযোগিতা দিয়েছে।
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী ঐশীর বয়স বিদ্যালয়ের নথি অনুযায়ী ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেয়ার মাধ্যমে শিশু আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ ঐশীকে রিমান্ডে নেয়ার সমালোচনা করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানও।
এই সমালোচনার মধ্যে গত ২০ অগাস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের কাছে ঐশীর বয়স পরীক্ষার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। হাকিম তানবীর আহমেদ ওই আবেদন মঞ্জুর করায় পরদিন ঐশীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা ঐশী ও সুমির বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। সমালোচনার কারণে রিমান্ড শেষে তাদের পাঠানো হয় গাজীপুরের কোনাবাড়ি কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু আল খায়ের গত ২৯ অগাস্ট ঐশীর জন্মসনদ আদালতে দাখিল করেন, যাতে বলা হয় ‘ও’ লেভেলের এই ছাত্রীর বয়স ১৮ বছরের বেশি।
খুলনার একটি ক্লিনিকের জন্মসনদ সম্বলিত ওই আবেদন যাচাই করে ঢাকা মহানগর হাকিম আনোয়ার ছাদাত গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওই আদেশের ভিত্তিতে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে ঐশীকে প্রথমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং সেখান থেকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়। সুমীকেও সেখানেই রাখা হয়েছে।