আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দপ্তরবিহীনমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘গত ৩০ বছরের ইতিহাসে রানা প্লাজার ঘটনা তেমন কিছু নয়। এমন ঘটনা ঘটতেই পারে।’
আজ রোববার সকালে জাতীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুরঞ্জিত এসব কথা বলেন। জাতীয় নেতা এ এইচ এম কামরুজ্জামানের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা পরিষদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রসঙ্গত ১৯৮৪ সালে ভূপালের দুর্ঘটনার পর সাভারের রানা প্লাজা ধস শিল্প ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়, এখনো নিখোঁজ আছেন তিন শর মতো শ্রমিক। সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের জন্য দেশটির বাজারে অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকারের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে।
সুরঞ্জিত রানা প্লাজা ধসের ইস্যুটিকে ‘তেমন কিছুই নয়’ বলে মন্তব্য করে বলেছেন, রানা প্লাজায় সরকার সর্বাত্মক উদ্ধার তত্পরতা চালিয়েছে। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীকে দিয়ে সরকার উদ্ধার তত্পরতা চালিয়েছে। এ ভবনের মালিক রানাকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালতে এর বিচার চলছে। তাই জিএসপি-সুবিধা বাতিলে রানা প্লাজার ঘটনা তেমন প্রভাব পড়েনি। তিনি জিএসপি-সুবিধা বাতিলের জন্য খালেদা জিয়াকে দুষেছেন।
সুরঞ্জিত বলেন, খালেদা জিয়া ‘ওয়াশিংটন টাইমস’-এ যে নিবন্ধ লিখেছে সে কারণেই এটা বাতিল হয়েছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ‘ওয়াশিংটন টাইমস’-এ নিবন্ধ লেখার জন্য খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে বলতে হবে, “আমি (খালেদা) সম্পূর্ণ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে নিবন্ধ লিখেছি। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়, সংক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করেছি। আমাকে ক্ষমা করুন”।’
জিএসপি বাতিল হওয়ায় বিএনপিসহ ১৮ দল উত্সব করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁরা গোড়া কেটে আগায় পানি দিয়ে মায়াকান্না করছেন। ক্ষমতার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড ইতিহাসের পাতায় কালো অক্ষরে লেখা থাকবে।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে দপ্তরবিহীন এই মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি (ইউনূস) দেশের স্বার্থে সঠিক কাজ করবেন। দয়া করে গ্রামীণ ব্যাংককে বিএনপির ব্যাংক বানাবেন না। কারও পক্ষ হয়ে যাবেন না।’
সংগঠনের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ওলামা লীগের সভাপতি ইলিয়াস হুসাইন বিন হেলালী, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম এস চৌধুরী সুজন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার প্রমুখ।