নিজেকে সব সময়ই নারী ভাবতে ভাল লাগে। কেন পুরুষ হলাম না , এমন কোন হায়-আফেসোস কখনও আসেনা মনে। পুরুষ হয়ে রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে চায়ের দোকানে দাড়িয়ে কেন রাজনীতির বিতর্ক জুড়লাম না, সিগারেট একটা টান দিতে পারলাম না, মেয়েদের দেখে কোন মন্তব্য ছুড়তে পারলাম না। না এমন কোন ইচ্ছে তো হয় নাই কখনও। তবে পরিবার, সমাজ পুরুষকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্রমে স্বার্থ পর করে তোলে। এতে আমার বরাবরই আপত্তি। আমি আমার জগতে স্বাধীন মানুষ। তবে আমাকে এ স্বাধীনতা অনেক মূল্য দিয়ে কিনতে হয়েছে। তারপরও শাহবাগের মোড়ে দাড়িয়ে ছেলে সাদৃশ মেয়েটির মত বিড়ি টানতে থাকার মত স্বাধীন আমি হতে চাইনি কোন দিনই। আমি নারী,আমি সুন্দর এর প্রতীকি মান রাখব। আমার পোষাক বলবে আমি একজন সুন্দর মনের নারী, আমার ভাষা বলবে আমি নারী, যাকে ঘিরে প্রতি যুগে কবি আর সাহিত্যিক ছন্দ আর আবৃতিতে মূর্ছিত হয়। পুরুষের বেশ ধরে গলাবাজি আমাকে নিষ্প্রাণ আর রুক্ষ করে তুলবে এটা স্বাভাবিক। আমার মুখের ভাষা ও হাসি আমার পরিবারের ক্লান্তি আর কষ্টকে দূরীভুত করবে তবে আমি নারী। আমি অসুন্দরকে জয় করব আমার মনের এবং আচার আচরণের সৌন্দর্য দিয়ে। মনকে আরো বেশি সুন্দর করতে আমাকে পুরুষের পরিপূরক অবস্থান চিন্তা করতে হবে শত্রুতা নয়। তবে যখন কোন নারীর ধর্ষিত হওয়ার খবর চোখে পরে বা কানে আসে। চোখ ফেটে জল পরে। রাগে শরীর কেঁপে ওঠে। পুরুষ নামক জানোয়ারের প্রতিবিম্ব ভাসে চোখে। প্রতিশোধের আগুন জ্বলে ওঠে কোন এক অচেনা ধর্ষিতা বোনের কষ্ট অনুভব করে। ঘৃণা হয় মনে। তবে আমরা যত অযুহাতই ধরি না কেন ওরা এমনি এমনি তো আর পশু হতে পারেনা, একটা মানুষ তার কতটা মনুষ্যত্ব বিসর্জন না দিলে নারীকে ধর্ষন করে মেরে ফেলে। পাশাপাশি তুলনা মূলক কম হলেও কিছু নারীও তার মানষীর রুপ ছেড়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে পুরুষের জন্য বুঝে অথবা না বুঝে। ধর্ষন হলো সামাজিক ঘৃন্য অপরাধ। এর সাথে নারী বা পুরুষ অধিকারের কোন সংঘাত নেই বলে আমি মনে করি। কোন ভাবেই এই সামাজিক অপরাধ ক্ষমার যোগ্য নয়। সমাজের কথা ছাড়ি পশুর লোলুপ দৃষ্টির তোপের মুখে কয়জন নারী তার পরিবারে নিরাপদ? পশুর লোলুপ দৃষ্টি একটি সুন্দর মনের নারীর মানসিক ও ব্যাক্তিত্ব গঠনে কতটা বাধা সৃষ্টি করে জানা কি আছে? একজন নারী অনলাইনে আছে! যাবেন কোথায় সেখানেও নানান আপত্তিকর ম্যাসেজ আসতে থাকে। যার অধিকাংশই ইভটিজিং পর্যায়ের বা তার থেকেও ভয়াবহ অপরাধ বলে আমি মনে করি।
নারী দিবসের আজকে সবাই নারীকে সম্মান জানায়, একটি নারীর শৈশব ও কৈশর থেকে বৃদ্ধকাল অবধি তাকে নিরাপদ রাখা হোক তার আপন পৃথিবীতে। তবে নারী সম্মান পাবে। এটা হোক নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য। সকল নারীকে বিশ্ব নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
আজকে আমার ইনবক্সে অনেক ভাই, বোন বন্ধুরা নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ইনবক্স খুলেই তারাবতীর সারা মুখে হাসি প্রসারিত হয়েছে। নিজেকে তারাবতী আজ পৃথিবীর সব থেকে নিরাপদ নারী মনে করে যার সমম্ত কৃতজ্ঞতা শুধু মহান আল্লাহর দরবারে।
তানিয়া হাসান খান
৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ২০১৪ইং