এবার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াতের সুরে কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া।
একাত্তরে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, "মুক্তিযুদ্ধের 'সারেন্ডার ডকুমেন্টস'-এ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধের কথা লেখা আছে। ভারতীয় বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে_এমন কথা সেখানে লেখা নেই। ১৬ ডিসেম্বরের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের স্মারকে কোথাও এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছিল এ ছিল যেন পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ।"
গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সচেতন নাগরিকসমাজ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত 'পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন' শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার রফিকুল বলেন, ১৯৯৭ সালে ভারতের জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ঢাকা এসেছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে এ যুদ্ধে আত্মসমর্পণ কার কার মধ্যে হয়েছিল। তিনি জবাব দিতে পারেননি। কেবল বলেছিলেন, 'আমি জবাব দিতে পারব না। আমি দিলি্ল থেকে যেভাবে নির্দেশনা পেয়েছি, সেভাবে কাজ করেছি। পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সেনাপতি আতাউল গণি ওসমানী অনুপস্থিত ছিলেন বলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।'
মুক্তিযুদ্ধে ইপিআর সেনাদের অবদান মুছে ফেলতে সরকার বিডিআরের নাম পরিবর্তন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইপিআর তথা বর্তমান বিডিআরের সেনারা প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করে জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অথচ সরকার বিডিআরের নাম ও আইন পরিবর্তন করে তাদের এ অবদান মুছে ফেলার চক্রান্ত করছে। বিডিআরের নাম ও আইন পরিবর্তন করে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত রুখে দাঁড়াতে জনমত সৃষ্টির পাশাপাশি সবাইকে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনাসভায় বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনে বিডিআর বাহিনীর যে প্রধান তাঁকে কোনো ধরনের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বরং তাঁর বিকল্প হিসেবে অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদ সৃষ্টি করে বেসামরিক অদক্ষ ব্যক্তিকে প্রেষণে নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। তাঁকে ডিজির চেয়েও বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি মেজর (অব.) মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত পিলখানা বিদ্রোহ ঘটনাবলির ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আইনউদ্দিন, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির সংসদ সদস্য নীলুফার ইয়াসমীন মনি প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দুই সপ্তাহ আগে একই বক্তব্য দিয়ে সমালোচনায় পড়েন যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
এ সংবাদটি নিয়ে একটি জরিপের আয়োজন করে কালের কন্ঠ। জরিপটির এ পর্যন্ত ফলাফল নিচে দেওয়া হলো।
একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার এমন মন্তব্যকে যৌক্তিক মনে করেন কি?
জরিপের তারিখ : ২০১০-১০-০২
ফলাফল
মোট ভোট - ১৯৭
হ্যাঁ - ১০১
হ্যাঁ - ৫১.২৭ %
না - ৯৬
না - ৪৮.৭৩ %