ঈদের আর মাত্র ১০ দিন বাকি। এর মধ্যেই বাজিয়ে বসেছেন জ্বর। মার্কেট শপিং কোথাও যেতে পারছেন না। থার্মোমিটারের পারদ উপরে উঠছে আর নামছে। আমি নিজেও এখন এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় সময় কাটাচ্ছি। হুম ভাইরাল ফিভারের কথা বলছি।
কি এই ভাইরাল ফিভার?
সাধারনত জ্বর কোনো অসুখ নয়। অসুখের উপসর্গ মাত্র। নানা কারণে আমাদের শরীরে জ্বর আসতে পারে। তবে অধিকাংশ জ্বরই হয় কোনো না কোনো জীবাণু সংক্রমণের কারণে। এসব জীবাণুর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস উল্লেখযোগ্য। যদি আপনার শরীরে ভাইরাস সংক্রমণের ফলে যে জ্বর আসে তাকে ভাইরাল ফিভার বলে। ভাইরাল ফিভার বছরের যে কোনো সময় হলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গরমের সময় কিংবা ঋতু পরিবর্তনের সময়কালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
কিভাবে বুঝবেন আপনি ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত?
সাধারনত জ্বরের শুরুতে এর প্রকৃতি বোঝা না গেলেও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাল ফিভার চিহ্নিত করা সম্ভব।(টাকা গাছে ধরে না যে ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হইছি কিনা এইটা বুঝার জন্যে প্রথমেই যেয়ে রক্ত পরীক্ষা করাইতে হবে। যদি রক্তে কোন ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ধরা না পড়ে তখন তাকে ভাইরাল ফিভার বলে চালায় দেওয়া হয়। এরপর বের করতে হয় কোন ভাইরাসের কারনে শরীরে জ্বর আসছে।নিচের লেখা পড়লেই বুঝবেন আপনি সাধারন কোন ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত কিনা?
কিভাবে ছড়ায় এই ভাইরাল ফিভার??
সাধারনত আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে মোট কথা হল আক্রান্ত ব্যাক্তির আশেপাশে থাকলে তার মাধ্যমে আপনি নিজেও আক্রান্ত হবেন।
ভাইরাল ফিভারের সাধারন লক্ষণ??
জ্বরের সাথে আরও যেসব উপসর্গ থাকতে পারে_____
হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া।
সারা শরীরে ও হাতে পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করা
চোখ লাল হয়ে যাওয়া।
মাথা ব্যথা করা
বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া।
খাবার খেতে অরুচি কিংবা মুখে বিস্বাদ লাগা।
হঠাৎ শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।
অনেকের ত্বকে র্যাপশ দেখা দিতে পারে।
অনেক সময় অতিরিক্ত জ্বরের কারণে খিঁচুনি হতে পারে।
এসময় যা করণীয়ঃ
মাথায় পানি দেওয়া ও সারা শরীর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছতে থাকুন। আবার অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গা স্পঞ্জ করবেন না।
জ্বর কিংবা শরীরে ব্যাথা থাকলে প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট যেমন Napa extra বা Reset plus খাবেন।
প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট খাবার আগে ট্যাবলেট Neutack কিংবা আপনি যে গ্যাসের ওষুধ খান সেটা খেয়ে নিবেন।
সবসময় ফ্যানের বাতাসে কিংবা শুষ্ক ও খোলামেলা জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন।
স্বাভাবিক সব খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবেন। তবে টক জাতীয় ফল বেশী করে খাবেন।
এসময় অবশ্যই তরল জাতীয় খাবার বেশি করে খাবেন।
ইফতার ও সাহরি খাবার পর খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। এটা আপনার শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ব্যালেন্স ঠিক রাখবে।
সর্দি কিংবা গলা ব্যাথার জন্যে Tablet Fexo plus বা Loratin Plus ১টা করে মোট ৩দিন খেতে পারেন। সাথে সকালে ও রাতে ২ বার লবন গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করবেন। এটা আপনার গলাব্যাথা কমানোর জন্যে খুবই উপকারি।
কফ ও কাশি থাকলে Syrup Ambrox কিংবা Sudokof খেতে পারেন।
শুকনো কাশি হলে সেটা ভালো হতে অবশ্য একটু সময় লাগে। সেক্ষেত্রে আদা চা কিংবা তুলসী চা বা তুলসী পাতার রস খেতে পারেন। ভালোই উপকারী।
সাহরি খাবার পর ১টা কম্বাইন্ড মাল্টিভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সসিডেন্ট জাতীয় Tablet Filwel Gold খেতে পারেন মোট ৭দিন। কারন জ্বর চলে গেলেও তা আপনার শরীরকে অনেক দুর্বল করে ফেলে।
তবে যদি শরীরে র্যাাশ কিংবা খিঁচুনি থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
যদি উচ্চ রক্তচাপ, কিংবা লিভার কিডনি তে সমস্যা বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা বাঞ্ছনীয়।
সাধারনত ভাইরাল ফিভার ৩-৫ দিন স্থায়ী হয়। এরচেয়ে বেশীদিন যদি জ্বর থাকে আপনার শরীরে তাহলে বিলম্ব না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।