আজকে ইন্টারনেট ও সাইবার ক্রাইম নিয়ে একটু আলোচনা করবো। ইন্টারনেট আজকে আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। সারা পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে এই ইন্টারনেট। কিন্তু এর আড়ালের কথা গুলো জেনে নেয়া দরকার। কথা না বাড়িয়ে কাজের কথায় আসি।
প্রথমেই জেনে নিই ইন্টারনেটের উৎপত্তি: ১৯৬২ সালে প্রথম MIT এর জেসিআর লাইক লিডার তার গ্যালাকটিক নেটওয়ার্ক কনসেপ্ট বর্ননা করেন। তাতে বিভিন্ন কম্পিউটারের মধ্যে প্রোগাম এবং ডেটার আদান-প্রদান পদ্ধতির কথা বলেন। তার ধারনাই অনেকটা আজকে ইন্টারনেটের রুপ লাভ করেছে।একই বছর MIT-এর লিওনার্দো ক্লায়েনরক নামক একজন কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ তার প্রথম গবেষনা পত্রে এবং ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত packet swiching theory নামক বইয়ে circut এর পরিবর্তে packets ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন যা,কম্পিউটার নেটওয়ার্কিংয়ের দিক নির্দেশনা প্রদান করে। ১৯৬৫ সালে থমাস মেরিল রবার্ট Tx-2 কম্পিউটারের সাথে কার্লিফোনিয়ার Q-32 কম্পিউটারের সাথে লো স্পীড ডায়াল আপ টেলিফোনের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করে পরীক্ষামূলকভাবে ডেটার আদান-প্রদান করতে সক্ষম হন। ইহাই Wide area নেটওয়ার্কের প্রথম সূত্রপাত বলে বিবেচনা করা হয়। রবার্ট ১৯৬৭ সালে “ARFAnet” নামক গবেষনা পত্রে তার নেটওয়ার্কিং ধারনা ব্যাখা করেন। যে সম্মেলনে তিনি তার গবেষনা পত্র পাঠ করেন একই সম্মেলনে ডোনাল্ড ডেভিড এবং রঞ্জার স্কেলটাবেরি নামে ইংল্যান্ডর দুজন গবেষক packet network নামে একটি গবেষনা পত্র উপস্থাপন করেন। ARFANET ১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্ভর ইন্টারনেটের আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়।আর ১৯৭০
সালে বব কান ইন্টারনেটের জন্য TCP/IP পদ্ধতির প্রস্তাব করেন যা ইন্টারনেটকে পূর্নতা দান করতে সহায়ক হয়। মাত্র ২০ বছরের মাঝেই এই ইন্টারনেট পৃথিবীতে সূচনা করে নতুন বিপ্লবের।
এইবার দেখে নিন সাইবার ক্রাইমের আদ্যোপান্ত: ২০১১ সালে ড.দিবারাতি হালদার এবং জয়শংকর সাইবার ক্রাইমের সঙ্গা দেন। এখানে তারা বলেন:
"Offences that are committed against individuals or groups of individuals with a criminal motive to intentionally harm the reputation of the victim or cause physical or mental harm to the victim directly or indirectly, using modern telecommunication networks such as Internet (Chat rooms, emails, notice boards and groups) and mobile phones (SMS/ MMS)".
অস্টেট্রেলিয়ার একটি জাতীয় দৈনিকের সমীক্ষা মতে দেখা যায় পৃথিবীর সাইবার ক্রিমিনালদের তিন ভাগের দুই ভাগই হচ্ছে ১৫ হতে ২৬ বছর বয়সী। ২০০৬ সালের আন্তর্জাতিক তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৬ ধারায় সাইবার ক্রিমিনালের সঙ্গায় বলা হয়,
"when people use the internet to damage or destroy computer system for political or other reasons unidentified cyber terrorists gained access to e-mails and finamial details of customers."
পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল জানিয়েছে, সাইবার অপরাধের কারণে শুধু ইউরোপেই বছরে ক্ষতি হয় ৯২৯ বিলিয়ন ডলার৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, প্রতিদিন গড়ে অন্তত এক মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ১০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় সাইবার অপরাধীদের দ্বারা। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, সাইবার অপরাধ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ইউরোপে।সাইবার অপরাধ বেড়ে চলার এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার সেসিলিয়া মালমস্ট্রোম নিজেই।
সাইবার ক্রাইমের চূড়ান্ত নমুনা পর্ণোগ্রাফি: বাংলাদেশ পুলিশের অনুসন্ধানে পর্নোসাইটে এ রকম ৮৪টি ওয়েবসাইট ও ওয়েবপেজ খুঁজে পাওয়া গেছে (২০১০) । নারী-পুরুষের ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিডিও, স্থিরচিত্র, পতিতাবৃত্তির জন্য বিজ্ঞাপন বা অশ্লীল কাহিনী প্রচার-প্রকাশ দণ্ডবিধি আইনের ২৯২, ২৯৩ ধারা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র সেন্সরশিপ আইন ২০০৬-এর পরিপন্থী।এক প্রতিবেদনে দেখা যায়,বর্তমান ইন্টারনেটের তথ্য ভান্ডারের প্রায় ২৫ ভাগই পর্ণোগ্রাফী। বর্তমানে ইন্টারনেটে মোট ২০,৫২,০৩,২০০ টি ওয়েবসাইটের মধ্যে ৫১,০০০০০০ টি পর্ণোগ্রাফী ওয়েবসাইট রয়েছে। শিশুদের নিয়ে তৈরি অশীল ছবির ওয়েবসাইট রয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি। ১০ লাখের বেশি শিশুর ছবি রয়েছে এসব সাইটে। ১০ লাখের মতো অপরাধী এ সব অবৈধ ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষনায় দেখা গেছে, হ্যাকররা প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে একবার কম্পিউটারকে আত্রমন করছে। আর এর অধিকাংশই ঘটছে ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড ভাঙ্গার মাধ্যমে। অ্যান্টিভাইরাস নিমার্তা প্রতিষ্ঠানগুলো হ্যাকারদের প্রধান পৃষ্টপোষক। তারা হ্যাকারদের মোটা অংকের বেতনে চাকরি দেয়। হ্যকারদের কাজই হলো মাঝে মাঝে তিকর প্রেগ্রাম লিখে অর্থ্যাৎ ভাইরাস তৈরি করে ব্যপক আকারে কম্পিউটার অচল করে দেয়া। ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার এক বা দু‘দিন পর ওই ভাইরাসের এ্যান্টিভাইরাস বাজারে ছাড়ে হ্যকারদের পৃষ্টপোষক কোম্পানীগুলো, ওই এ্যান্টিভাইরাস আগেই তৈরি করা থাকে।
ফেসবুকে পর্ণোগ্রাফি :
১) সিলেট আম্বরখানা স্কুল এ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র অতনু। ফেসবুকে সে তার এক শিক্ষিকার নামে ভুয়া একাউন্ট খুলে শিক্ষিকার বানানো পর্ণো ছবি আপলোড করে দেয়। ফেসবুকে অতনু তার শিক্ষিকার মোবাইল ফোন নম্বরও দিয়ে দেয়। সেখানে স্ট্যাটাস দেয়া হয়, ‘প্লিজ কল মি’। এরপর থেকে ঐ শিক্ষিকার মোবাইল ফোনে ফোন আসতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষিকা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগটি ঢাকাস্থ সিআইডি’র সাইবার ক্রাইম শাখার তদন্ত করার পর ফেসবুক থেকে ঐ ছবি সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিসিএলের মাধ্যমে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করে।
২) সিলেটের এক গৃহিণীর ডিভোর্স স্বামী স্পেন প্রবাসী। মাস তিনেক আগে গৃহিণীর নামে ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে কয়েকটি পর্ণো ছবি আপলোড করে দেয় তার আগের স্বামী। বিষয়টি নিয়ে সিআইডিতে গৃহিণী অভিযোগ করেন। সিআইডি’র সাইবার ক্রাইম শাখা তদন্ত করে দেখতে পায়, ফেসবুকে ঐ ভুয়া একাউন্ট খোলা হয়েছে স্পেন থেকে। এ ক্ষেত্রে সিআইডি’র করার কিছু নেই। সাইবার ক্রাইম শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, এ ব্যাপারে বিটিসিএলের মাধ্যমে সিআইডি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠাতে পারে। তবে স্পেনে একাউন্ট খুলায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।
৩)২৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণ প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন সহকারী সচিবের নামে ভুয়া একাউন্ট খুলে পর্ণো ছবি ফেসবুক আপলোড করে মোবাইল নম্বর দেয়া হয়। এরপর থেকে সহকারী সচিবের মোবাইল ফোনে বহু লোক ফোন দেয়। এ বিষয়ে তিনি র্যাব সদর দফতরে অভিযোগ করেন। র্যাবের কমিউনিকেশন শাখা তদন্ত করে ফেসবুকের ভুয়া একাউন্ট থেকে ছবি মুছে দেয়। কয়েকদিন পর আবার ভুয়া একাউন্ট খুলে ঐ সহকারী সচিবের পর্ণো ছবি আপলোড করে দেয়। এ দফায় র্যাব তদন্ত করে যে ভুয়া একাউন্ট খুলেছিল তাকে আটক করে।
এমন আরো ঘটনা আছে যা লিখতে গেলে পোস্ট বড় হয়ে যাবে।
ডার্ক নেট বা ডীপ ওয়েব একটি আতঙ্কের নাম: কোনো কিছু প্রয়োজন হলেই আমরা গুগলে সার্চ দিই। কিন্তু প্রশ্ন হল গুগল আসলে কতটুকু জানে? সার্চ ইঞ্জিনের কাজ হল ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটগুলোর পেইজগুলো ইনডেক্স করে রাখা যাতে পরবর্তীতে সেই পেইজগুলো খুঁজে বের করা সহজ হয়। আর এর জন্য যে প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয় সেটাকে বলে ক্রাউলার। ক্রাউলার ওয়েবসাইটের HTML ট্যাগ দেখে ওয়েবসাইট গুলোকে লিপবদ্ধ করে। আর এই জন্যই গুগল এতো দ্রুত আমাদেরকে রেজাল্ট দিতে পারে। আর ইনডেক্স
করে রাখার জন্য সেই ওয়েবসাইটের এডমিনের অনুমতি দরকার হয়। কিন্তু সাইটের এডমিন পেইজ ইনডেক্স করার অনুমতি না দিলে গুগল সেটা খুঁজে বের করতে পারবে না। এটিই ডীপ ওয়েবের মুল ধারণা। ডার্ক ওয়েবের মুল লক্ষই হল অপরাধের একটি অভয়ারণ্য গড়ে তোলা। সেখানে এমন কিছু
ওয়েবসাইট আছে যেখানে হেরোইন, মার্জুয়ানা থেকে শুরু করে নানা ধরণের মাদক হোম ডেলিভারী দেওয়া হয়। আরও কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে জঙ্গী গ্রুপগুলো তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পালন করে। কিভাবে বোমা বানাতে হয়, নিক্ষেপ করতে হয়, বারুদ বানাতে হয়, বারুদ লোড করতে হয় ইত্যাদি সেখানো হয়ে থাকে সেসব ওয়েবসাইটে। কিছু সাইটে রেডিমেইড অস্ত্রও পাওয়া যায়, রকেট লাঞ্চার, একে ৪৭, মর্টার ইত্যাদি। ডার্ক ওয়েবে এমন অনেক সাইট আছে যেখানে ভারাটে খুনীও পাওয়া যায়। টাকার বিনিময়ে খুন করবে কিন্তু কেও কারো পরিচয় জানবে না। ডার্ক ওয়েবে নানা ধরণের মেইল ও চ্যাট সার্ভিস আছে যেগুলো দিয়ে পরিচয় গোপন করে অনেক কিছুই করা সম্ভব। এখানে কেনাবেচার জন্য কোন ক্রেডিট বা ডেভিড কার্ড ব্যাবহার করা হয় না। এখানে ব্যাবহার করা হয় বিটকয়েন। ১বিটকয়েনের মুল্য প্রায় সাড়ে ১০ ইউরো। বিটকয়েনের ব্যাবহার এই ডার্ক ওয়েবকে করেছে আরও নিরাপদ। এর ফলে সহজেই কেও কাওকে ধরতে পারবে না।
ফেইসবুকের মতন কিছু যোগাযোগের ওয়েবসাইটও আছে সেখানে, সেগুলোর মধ্যে একটি হল http://ay5kwknh6znfmcbb.onion/torbook (টরবুক)। ই-মেইল সেবার জন্য রয়েছে http://jhiwjjlqpyawmpjx.onion/squirrelmail (টরমেইল)। সার্চ ইঞ্জিনের জন্য রয়েছে http://hpuuigeld2cz2fd3.onion (ডীপ সার্চ)। Wikileaks এর শুরুই হয়েছিল এই ডীপ ওয়েবে।
কিছু আলোচিত সাইবার ক্রাইম:
১) ও’নেল ডি গুজম্যান। তিনি একজন ফিলিপিনের যুবক। লাভবাগ নামের একটি ভাইরাস তৈরি করে সমগ্র দুনিয়ার কম্পিউটার শিল্পে আতংক হিসাবে আবিভূর্ত হয়েছিল । তার তৈরি এই ভাইরাস বিশ্বের লাখো কম্পিউটার অচল করে দিয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল কোটি ডলারের।বড় বড় অ্যান্টিভাইরাস নিমার্তা প্রতিষ্ঠান গুলোর লাইন পড়ে গিয়েছিল গুজম্যানের বাসার সামনে। গুজম্যান দেখে শুনে সবচেয়ে বেশি দাম হাঁকানো কোম্পানীতে যোগ দেন ।
২)গ্যারি ম্যাকিনোন নামের এক হ্যাকার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিরাপত্তা সিষ্টেমে আক্রমন করেন । এই নিরাপত্তা সিষ্টেমের মধ্যে আর্মি এয়ার ফোর্স, নেভি এবং নাসা ছিল । ডেভিড স্মিথ । তার তৈরি ভাইরাস মেলিসার আক্রমণে ক্ষতি হয়েছিল ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ভাইরাসের একটি বিশেষত্ব ছিল যে ব্যক্তি এই ভাইরাসটি ই-মেইলের মাধ্যমে পায় , তাকে আরো ব্যক্তিকে পাঠাতে প্ররোচিত করে। এই রকম হ্যাকারদেরকে নিয়ে অ্যান্টিভাইরাস নিমার্তা প্রতিষ্ঠান যেন টানাটানি না করতে পারে সে ব্যাপারে কোঠর আইন করতে হবে।
৩) ২০০৯ সালে দেশে র্যাবের ওয়েবসাইট
হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে । হ্যাকাররা র্যাবকে জানিয়েছে তারা সব মিলিয়ে ২১ টা হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে।
৪) বিদেশী হ্যাকার দ্বারা নোয়াখালী ওয়েব নামের একটি সাইট হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। এছাড়া ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে মালেশিয়ান দুই নাগরিক গ্রেফতার হয়েছে ।
৫) সম্প্রতি সীমান্তে বিএসএফের নিরিহ
বাংলাদেশী হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও ভারতের হ্যাকারদের দ্বারা দু দেশের সাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা দেশে বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
৬)কয়েক বছর আগে আমেরিকার এক স্কুলে তেরো বছরের ৩ জন ছাত্র কাস রুমে বোমা পেতে রেখে বাসা থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বোমা ফাটায়। এভাবে বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বড় বড় বোমা ফাটানো সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। এ্যাকশান গেম বর্তমানে আরেক ভয়ংকর সাইবার অপরাধে পরিনত হয়েছে। এ্যাকশান গেমের মাধ্যমে বর্তমানে ব্যাপকভাবে হত্যাযজ্ঞ সংঘঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রনে আইন: সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্নোগ্রাফি অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদন্ডের বিধান রেখে ‘পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ বিল, ২০১২’ সংসদে পাস হয়েছে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ এ আইন অনুযায়ী -কোন ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি উৎপাদনের উদ্দেশে কোন নারী, পুরুষ বা শিশুকে প্রলোভন দিয়ে জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে স্থির, ভিডিও বা চলচ্চিত্র ধারণ করলে বিচার প্রক্রিযার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদন্ড ও ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড আরোপ করা যাবে। যদি কোন ব্যক্তি পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে কারও সম্মানহানি করে বা কাউকে ব্ল্যাকমেইল করে বা করার চেষ্টা চালায় তবে বিচারক ২ থেকে ৫ বছর মেয়াদি কারাদ- আরোপ করতে পারবেন এবং তদুপরি, ১ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড আরোপ করতে পারবে নিজেদেশিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণকারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদন্ড এবং অধিকন্তু ৫ লাখ টাকা জরিমানা আরোপের বিধান রাখা হয়েছে।
ইজ প্রিভেনশান রিয়েলি ব্যাটার দ্যান কিউর: ইউরোপের সাইবার অপরাধকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার গঠন করা হচ্ছে ‘ইউরোপীয়ান সাইবার ক্রাইম সেন্টার’ এটা হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’ ইউরোপোলের একটি অংশ। আর এর দফতর বসবে দ্য হেগ শহরে। শোনা যাচ্ছে, এ কমিশনের বার্ষিক বাজেট ধরা হয়েছে ৩.৬ বিলিয়ন ইউরো। সাইবার অপরাধকে নিয়ন্ত্রনের লক্ষে এই কমিশনে যোগ দেবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫৫ জন তদন্তকারী। আশা করা যাচ্ছে ২০১৩ সালের শুরুর দিকে মাঠে সামবে এই ইউরোপীয়ান সাইবার ক্রাইম সেন্টার। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক রস অ্যান্ডারসন বলেন-গত ছয় বছরে সাইবার অপরাধ বেড়ে গেছে আশংকাজনক হারে। তার মতে বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশের
বেশি পিসি ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত এবং ২০ টির ভেতরে একটি কম্পিউটার না জেনেই স্প্যাম ছাড়াচ্ছে অন্যদের মাঝে। এক গবেষনায় দেখা যায়-ইন্টারনেটে প্রতিদিন প্রায় ২৪৭ বিলিয়ন মেইল আদান প্রদান করা হয়। এর মাঝে ৮১% অর্থ্যাৎ ২০০ বিলিয়নই হলো স্প্যাম। তারা যেন সাইবার অপরাধ নামক দানবের হাতে বন্দী হয়ে কেঁদেও মুক্তি পাচ্ছে না। সাইবার অপরাধের সাথে কেউ ইচ্ছা করলেই যুক্ত হতে পারেন না। তাকে হতে হবে অত্যন্ত মেধাবী। তাই আজ অপার সম্ভবনাময়ী এ মেধা গুলো সুন্দর পৃথিবী গড়ার পরিবর্তে আজ পৃথিবী ধ্বংসে ব্যস্ত। তাই সাইবার ক্রাইমের কারণে ধ্বংসের কবলে প্রযুক্তি জগৎ।
এইবার আমার কথা বলি: ইন্টারনেট একটি অভিশাপ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আমরা যে ইন্টারনেট দেখি তা পুরো ইন্টারনেটের মাত্র ১০%। বাকি ৯০% ঈ ডার্ক নেট।তাছাড়া আইপি প্রটোকল দিয়ে অনেকেই ব্যবহারকারীর সব তথ্য পেয়ে যেতে পারে। তারউপর বিভিন্ন পিশিং সাইট আছে। পর্ণ ইন্ডাস্ট্রি এত সহজে বন্ধ করা যাবেনা। আমি মনে করি বন্ধ করার মোটেও দরকার নাই। কিন্তু একটু লাগাম টেনে ধরতে হবে। এইসব সাইবার আসামীদের জন্য দ্রুত আইনের বিচার প্রনয়ণ করতে হবে। সাইবার ক্রাইমের পথ আরো সোজা হয়ে গেছে ফেসবুক, টুইটারের মাধ্যমে। এত হ-য-ব-র-ল অবস্থা কিভাবে সামলানো যায়, আই ডোন্ট নো। বাট, উই হ্যাভ টু বি কেয়ারফুল ইনডিভিজ্যুয়ালি। উই হ্যাভ টু প্রটেস্ট সাইবার ক্রাইম। উই হ্যাভ টু ফাস্যেন আওয়ার সিটবেল্ট টাইটলি অ্যান্ড শ্যুড বি রেডি টু হ্যাভ এ ক্রেজি রাইড। নট অ্যা রাইড অব থ্রিলিং, বাট অ্যা রাইড ফর কিলিং দ্য ডেমনস।
তথ্যসূত্র:
♣ http://techzoomtips.blogspot.com/
♣দৈনিক যায়যায়দিন বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারি ২০১২
♣ blog.priyo.com লিয়া সরকার ১৫ই নভেম্বর ২০১২ (প্রথম আলোতে প্রকাশিত)
♣ জিরো টু ইনফিনিটি বিজ্ঞান সাময়িকি ২৯ আগস্ট ২০১৩, কেএম মোস্তফা, মডারেটর অব বাংলাদেশ সাইবার আর্মি
♣ http://en.m.wikipedia.org/wiki/Dark_Internet
♣ http://somewhereinblog.net
♣ Click This Link.
♣ http://itlaw.wikia.com/wiki/Cybercrime
♣ Click This Link
♣ Click This Link