জীবনের প্রথম আঠারো বছরে একজন মানুষ শিশু-বালক-কিশোর ইত্যাদি ধাপগুলো পেরিয়ে টগবগে যুবক/যুবতী হয়ে উঠে। যৌবনের সাথে মানুষের ভাবনা আর দৃষ্টিভঙ্গিতে একটা মৌলিক পরিবর্তন আসে এই বয়সে। তবে মানসিক পরিপক্বতা না আসলেও তিনি যৌবনপ্রাপ্ত, এতে কারো আপত্তি নেই। একবিংশ শতাব্দীতে আজকের আঠারো, শত বছর আগের চল্লিশের চেয়েও অনেক পরিপক্ব। একটা সময় তো দশ বছর বয়সে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হওয়া খুব কমন ছিল এ বঙ্গে। তখন বাইশে মেট্রিকুলেশন পাশ করলেও কেউ রাও-কাও করতো না। তবে মেয়েদের বিয়ের বয়স হিসাবে বাইশ কিন্তু বড্ড বেশীই ছিল। শ্বাশুড়িদের কাছ বারো যেখানে ছেলের বউয়ের সবচেয়ে উপযুক্ত বয়স সেখানে আরো দশ বছর বাড়তি মানে কুড়িতে বুড়ি হওয়ারও দুই বছর বেশি। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তি, বিশ্বায়ন আর শিক্ষার অগ্রসরতায় কত পাল্টে গেছে আগের ভাবনাগুলো।
এখন বাইশে গ্রেজুয়েট হওয়া খুবই সম্ভব। আমি মাস্টার্স ডিগ্রির খুব একটা ভক্ত নই। যদি গবেষণা কিংবা দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ থাকে তাহলে বাড়তি ডিগ্রি অর্জন অবশ্যই ইতিবচক। শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের বাসনা কিংবা চাকরিতে বাড়তি সুবিধা পাওয়া চিন্তা থাকলে গ্রেজুয়েশন করার পর একাডেমিক শিক্ষা অর্জনে দক্ষতা বাড়ে না, জীবন থেকে কেবল হারিয়ে যায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ এক-দুটি বছর। বাইশ বছরের একজন স্কলার ব্যবসা কিংবা চাকিরতে অভিষেক হলে চল্লিশে সে এ বিষয়ে পুরোপুরি দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হওয়ার কথা। বাইশ থেকে চল্লিশ হলো দক্ষতা অর্জনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এই আঠারোটি অগ্রহায়ণ জীবনের প্রথম আঠারো বছর থেকে অনেক পরিপক্ব হয়। নিজের অর্জিত জ্ঞান আর কাজের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে চল্লিশ হয়ে উঠে একটি দেশ, একটি বিশ্বকে উজাড় করে দেওয়ার অবারিত সুযোগ। আজকের চল্লিশ বিংশ শতাব্দীর ষাটের চেয়েও পরিপক্ব।
কিন্তু বিসিএস গাইড মুখস্থ করতে যে জাতির জীবনের ত্রিশটি বসন্ত পার হয়ে যায় তাদের ষাট বছর বয়সেও দক্ষতা অর্জন করে আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান টগবগে রেসের ঘোড়া হওয়ার কথা না। চাকরি পাওয়ার শিক্ষা এবং চাকরি দেওয়ার শিক্ষা দু'টি একসাথে অর্জন করা যায় না। একটি রাষ্ট্র তার নাগরিককে সুযোগ করে দিতে হয় বাইশে দক্ষতা অর্জনের। না হলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সরকার। যে ক্ষতি খালি চোখে দেখা যায় না, তবে চোখে আঙুল দিয়ে দেখা সম্ভব।
তথ্য-প্রযুক্তিতে সফল উদ্যোক্তা মার্ক জাকারবার্গ কিন্তু বাইশে নয় কুড়িতেই বিশ্বকে চমকে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, অনেক বাধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত সফলতা আসে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ফেইসবুক মাত্র পনেরো বছরে শত বিলিয়নে ডলার মূল্যমানের কোম্পানি। মানুষ মাত্রই স্বপ্নবাজ। তবে তৃতীয় বিশ্বের মানুষজন সম্ভবত সবচেয়ে বেশি কল্পনা বিলাসী হয়। এই স্বপ্নের একটি বড় অংশজুড়ই থাকে বেকারত্ব আর দারিদ্রকে জয় করা। যাদের বেশিরভাগেরই একটি সরকারি চাকরির প্রত্যাশায় কেটে যায় জীবনকে ভিন্নভাবে যাচাই করার সময়টুকু। হ্যা, মানতে হবে উন্নত বিশ্বের তরুণেরা স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে যে সুযোগ-সুবিধা পায় তা তৃতীয় বিশ্বে কল্পনাতীত। একটি ভালো বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর যেখানে নিজের ও পরিবারে দু'বেলা ডালভাতের নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না সেখানে উদ্ভাবনী শক্তি অর্জন করা অলীক কল্পনা বটে।
স্কুলে থাকতে আমরা গৎবাঁধা যে 'এইম ইন লাইফ' মুখস্থ করি সেগুলো স্রেফ চাপিয়ে দেওয়া অন্যের বানানো বুলি ছাড়া কিছুই না। এগুলো যিনি মুখস্থ করছেন তার কল্পিত নয় মোটেও। জীবনকে জানার আগে জীবনের উদ্দেশ্য জানতে গেলে তা অজানাই থেকে যাওয়ার শংকাই বেশি। এসব রচনা মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লেটার মার্ক পাওয়া গেলেও জীবনের খাতায় গোল্লা পাওয়ার আশংকা প্রকট।
সেদিন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে করোনা মহামারির ত্রিশ বিলিয়ন পাউন্ড বেইল আউটের বক্তৃতা শুনছিলাম। যিনি বৃটেনের ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় সময়ে জাতীয় অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে বৃটিশ জনগনের উদ্দেশ্যে বলছিলেন তিনি মাত্র চল্লিশ বছরের একজন অর্থমন্ত্রী। এই বয়সে একজন তরুণ রাজনীতিবিদ কিভাবে এই আত্মবিশ্বাস অর্জন করলেন এবং সুযোগ পেলেন? বলছি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কিছুদিন আগে নিয়োগ পাওয়া ভারতীয় বংশদ্ভূত অর্থমন্ত্রী (ট্রেজারী সেক্রেটারি) ঋষি সোনাক (Rishi Sunak) এর কথা।
আরেক পাকিস্তানি বংশদ্ভূত সাজিদ জাবেদ অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছেড়ে দিলে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঋষি সোনাককে এই দায়িত্ব দেন। এর আগে তিনি সাজিদ জাবেদের অধীনে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রধান সচিব ছিলেন। কল্পনা করা যায়, একজন ভারতীয় একজন পাকিস্তানী বংশদ্ভূতের সাথে মিলে ব্রিটিশ অর্থনীতি চালাচ্ছেন!
ভারত-পাকিস্তান দু'টি দেশ একে অন্যকে এটমিক বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার বাসনা নিয়ে ফন্দী আঁটে প্রতিদিন। যেন অন্যকে উড়িয়ে দিলেই নিজেরা বেঁচে যায়! এই অবিশ্বাস কিংবা আত্মবিশ্বাসকে বলবান করতে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা সামরিক খাতে ব্যয় করে। একদিকে সীমাহীন দারিদ্র্য, অন্যদিকে সামরিক উচ্চবিলাস। মাঝখানে বলি হচ্ছে তাদের কয়েক কোটি অসহায় মানুষ। এসব টাকা দেশের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অবকাঠামো এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যয় করলে এটমিক বোমা নয়, সুযোগ পাওয়া জনশক্তি তাদের উন্নয়নকে বেগবান করতো। তাদের মেধাবীরা দেশে থাকতো কিংবা প্রবাস থেকে ফিরে আসতো।
শুধু ঋষি সোনাক কেন? প্রধানমন্ত্রীর পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মন্ত্রণালয়ের (অর্থ, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র) দু'টিতেই ভারতীয় বংশদ্ভূত মিনিস্টার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলও ভারতীয়। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেই ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় আই কর্মকর্তা (এটর্নি জেনারেলে) ভারতীয় বংশদ্ভূত। তিনি সুয়েলা বারবারম্যান (Suella Braverman)। বয়স শুনলে অবাক হবেন- মোটে চল্লিশ! কল্পনা করা যায়?
একটু খেয়াল করলে দেখবেন পার্লামেন্টে এরা গাদাগাদি করে বসেন। প্রধানমন্ত্রী গায়ের সাথে গা ঘেসে বাকি মিনিস্টাররা বসে আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এইভাবে কখনো বসবেন? আমাদের পার্লামেন্টে চল্লিশ বছর বয়সী একজন অর্থমন্ত্রী কল্পনা করা যায়? আর চল্লিশ বছর বয়সী এটর্নি জেনারেল? যাদের বাপ-মা ইমিগ্রেন্ট ছিলেন। আরেকটি তথ্য দেই; সাজিদ জাবেদের বাবা লন্ডনে বাস ড্রাইভার ছিলেন।
আর আমাদের দেশে সরকারি চাকরি থেকে রিটায়ার্ড করার পর একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আমলা রাজনীতিবিদ হওয়ার দৌড়ে শামিল হন। সারাজীবন সরকারের অধীকে প্রজাতন্ত্রের কর্মী হিসাবে কাজ করেও দেশ সেবার আগ্রহ তাদের রয়ে যায়! অবশ্য আমাদের দেশে সরকারি চাকরিজীবীদের বিষয়ে একটি কৌতুক প্রচলিত আছে; চাকরিতে থাকা অবস্থায় তাদের ক্রিয়েটিভ আইডিয়াগুলো শতভাগ অব্যবহৃত রয়ে যায়, এমনকি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মও নাকি কমে যায়। যখন রিটায়ার্ড করেন তখন পাকা মস্তিষ্ক বিদ্রোহ করে বসে। তাই ক্রিয়েটিভ আইডিয়াকে কাজে লাগাতে অনেকে সংসদে যেতে চান। অবশ্য গ্রামে ফিরে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হতে আগ্রহী নয় এরা। মানুষ ফিসফিসিয়ে বলে, সারা জীবনের অর্জিত দুই নাম্বারী টাকা দিয়ে পার্লামেন্ট ইলেকশনে নমিনেশন বাগিয়ে নেয় তারা।
রাজনৈতিক দলগুলো এদের জামাই আদর করে। এর অন্যতম কারণ হলো দলগুলোর রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা। তরুণ নেতৃত্ব রাজনৈতিক দলগুলো কখনো তৈরী করে না। যারা দলগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা হন তাদের বেশিরভাগই শুধু গলাবাজি, দলবাজি, ইতরামি আর চাঁদাবাজিতে হাত পাকাতে ব্যস্ত থাকেন। আর যাই হোক এদের দিয়ে তো সরকার চলে না। তাই অঢেল টাকাওয়ালা ব্যবসায়ী, রিটায়ার্ড আমলা আর বস্তাপঁচা রাজনৈতিক নেতাদের আমরা সংসদে দেখি।
আমাদের দেশে যেসব তরুণ সত্যিকারে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন এদের বেশিরভাগই চল্লিশ বছর বয়সে এসেও বেকার। কেউ কেউ টাকার অভাবে সোনার হরিণ কিনতে পারেনি, কেউবা অফিস পলিটিক্সের শিকার হয়ে চাকরিহীন, আবার কেউ কেউ মামলা-হামলার শিকার হয়ে দেশছাড়া। এরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অপদার্থ।
তরুণ বয়সের অনেকে উদ্যোক্তা হিসাবে ভালো করলেও বেশিরভাগ সম্ভাবনাময় তরুণ ঝরে পড়ছে। এদের একটি বড় অংশ রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার দরকার ছিলো। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো হয় সংসদে। সেখানে তরুণদের অংশগ্রহণ না থাকলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশংকা থাকে। দেশ পরিচালনার সিদ্ধান্ত রাজনীতিবিদরা নেন। গোড়ায় গলদ থাকলে মেধাবীরা কাজ করার সুযোগ পাবে না। রাজনীতি থেকে নেতা তোষণ, চাটুকারিতা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং টাকার খেলা বন্ধ না হলে তরুণদের সুযোগ কখনো সৃষ্টি হবে না।
যারা বিদেশে গিয়ে সুযোগ পেয়েছেন নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করার তারা ভূলেও এদেশে আসার কথা চিন্তা করে না। অনেক মেধাবী বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে সরকারি চাকরিতে যোগদান করতে আগ্রহী হলেও সরকারি চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে যাওয়ায় আর সরকারি চাকুরে হওয়ার সুযোগ হয় না। জ্ঞান অর্জনের যেহেতু কোন বয়সসীমা নেই সেহেতু অর্জিত জ্ঞান আর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর বয়সসীমা থাকবে কেন? এদেশের চল্লিশের বিদেশ ফেরৎ মেধাবীরা সরকারের খাতায় অতীব বয়স্ক নাগরিক হলেও সত্তর বছরের রিটায়ার্ড আমলা টগবগে তরুণ। ফলাফলস্বরূপ বছরে কত হাজার মেধা পাচার হয় আমরা খবর রাখি না। অথচ দেশে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে, অর্জিত দক্ষতা কাজে লাগানোর সুযোগ থাকলে এদের বেশিরভাগই ফিরে আসতো। এতে দেশটা সমৃদ্ধ হতো। ব্রিটিশ-আমেরিকানরা আমাদের রিজেক্ট করা মাথাগুলোকে ঘষেমেজে জামাই আদর করে কাজে লাগায়। তারা জানে চাটুকারি আর মাননীয় বলে মুখে ফেনা তুলে, পার্লামেন্টে গান গেয়ে, বিরোধী দলকে দেশছাড়া করে, ইলেকশনের নামে প্রহসন করে আর যাই হোক দেশের উন্নতি হয় না।
এদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো কথায় কথায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টারী গণতন্ত্রের বুলি আওড়ায় অথচ তাদের দলীয় প্রধানরা একেকজন ডিক্টেটর হয়ে জনগণের মাথায় বসে আছেন। তাদের চোখে যারা 'জি-হুজুর জাহাপনা' তারাই তার আশপাশে বৃত্ত বানিয়ে রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার 'কিম জং উন' নিশ্চয় এর চেয়ে বেশি তৈলপ্রিয় নয়।
থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের দরবার হলে প্রতি বছর যখন গুরুত্বপূর্ণ সভা বসে তখন অতিথি হিসাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সামরিক উচ্চপদস্থ অফিসার এবং দেশের সম্মানিত মেহমানগণ উপস্থিত থাকেন। আর 'রাজ্যাভিষেক' হলে ঘরে-বাইরে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। এসব দিনগুলোতে রাজা-রানীর পাশাপাশি রাজপরিবারের সদস্যদের বাধ্যতামূলক উপস্থিত থাকতে হয়। হলভর্তি অতিথিদের সামনে রাজ পরিবারের সবাই এমনকি রাজার ভাই-বোন-সন্তান-রানীসহ রাজাকে কুর্নিশ করতে হয়। এটাই নিয়ম। যুগ যুগ ধরে বংশপরম্পরায় এমনটি চলে আসছে। রাজার আসনের অনেক দূর থেকে মসৃণ কার্পেটের উপর হাঁটু গেড়ে কনুইয়ের উপর ভর করে সবাই রাজার পায়ের কাছে এসে মাথানত করেন। এসময় রাজ পরিবারের কর্মীরাও এভাবে যার যার অবস্থানে হাঁটু গেড়ে আধশোয়া হয়ে রাজাকে সম্মান প্রদর্শন করেন। আর দেশের গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা তখন মাথা হেঁট করে করজোড়ে রাজার সামনে দাঁড়িয়ে প্রচলিত রেওয়াজটির সাক্ষী হন। রাজা সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হন তিনি মহা পরাক্রমশালী। রাজপরিবারের সবাই যেখানে তার পায়ে মাথা রেখে আশীর্বাদ নিচ্ছেন সেখানে বাকিরা তো অতি নগন্যই।
চিরায়ত এই প্রথা ঝিকে মেরে বৌকে শেখানো নয়, ইহা বৌকে মেরে শ্বাশুড়িকে শাসানো।
গণতন্ত্রে এভাবে বৌ-শ্বাশুড়ি খেলার কোন সুযোগ নেই। এতে হাজার হাজার মেরুদণ্ডহীন জোক পয়দা হয়। যাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই জীবনের তিন-চতুর্থাংশ সময় পেরিয়ে এসে সারাজীবনে অর্জিত চাটুকারী বিদ্যায় বলিয়ান হয়ে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে ভুল পথে পরিচালিত করেন। এরা তরুণ নেতৃত্বকে খুব ভয় পায়, তাই প্রয়োজনে ইয়াবাখোর হয়ে স্যুট-টাইয়ে আশি বছরেও চল্লিশের চেয়ে চনমনে ভাব আনতে সচেষ্ট হয়। এদের ধাপটে চল্লিশের চল্লিশা হয়, দেশের বারোটা বাজে ভোরের সূর্য উদিত হওয়ার আগেই।
চল্লিশে চুলে পাক ধরা মানে বুদ্ধিটা পরিপক্ব হওয়া; আর চল্লিশে টাক পড়া মানে অতীব জ্ঞানী হওয়া। এটা আমাদের প্রচলিত ধারণা। কারো কারো মতে, পাকা চুলের চেয়ে টাক মাথার পুরুষেরা নাকি বেশি জ্ঞানী হয়। তবে চল্লিশের নারীদের কিন্তু মাথায় টাক নেই!
ছবি- ঋষি সোনাক পার্লামেন্টে করোনা ভাইরাসের অর্থনৈতিক বেইলআউট বক্তৃতা দিচ্ছেন।
ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১