(০৮ মার্চ, ২০১৪) মা হতে চান সানি লিওন।
(০৮ মার্চ, ২০১৪) বলিউডে আমার বেশি বন্ধু নেই : সানি লিওন।
(০৭ মার্চ, ২০১৪) সানি লিওনকে শপিং মলে ঢুকতে দেওয়া হলো না।
(০৭ মার্চ, ২০১৪) সালমান বা সানি লিওন, বলিউড তারকারা নামছেন অনলাইন ব্যবসায়।
(০৬ মার্চ, ২০১৪) আমি জানি আমার চেহারা সুন্দর নয়, শরীরটাই সুন্দর: সানি লিওন।
(০৪ মার্চ, ২০১৪) অবশেষে কাপিলের কমেডি নাইটে সানি লিওন।
(০১ মার্চ, ২০১৪) সিনেমার প্রচারণায় গিয়ে লাঞ্ছিত হলেন সানি লিওন।
(২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) চাকরি দেবেন সালমান খান, পাশে থাকবেন সানি লিওন।
(২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) সানি লিওনকে চান নি অরিজিৎ সিং।
(২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) রাতে বিপজ্জনক লেকে নামলেন নগ্ন সানি লিওন।
(১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) সানি লিওনের চাহিদা!!!
(১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) সানি লিওনের 'রাগিনি এমএমএস টু' মুক্তি পিছিয়েছে।
(১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) তাহলে সানির এমএমএস 'প্রাপ্ত বয়স্কদের' ছবি!
(১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) সানি লিওনের বিপরীতে ভূতের গ্যাং।
(১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) রাগিনি এমএমএস-টু পোস্টারে বিবসনা সানি লিওন।
(০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) 'রাগিনি এমএমএস টু' ট্রেইলারে যৌনতায় বিব্রত সানি লিওন।
(০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) সানি লিওনের 'রাগিনি এমএমএস টু' ট্রেইলারে ব্যাপক সাড়া।
(০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) ভয়ের সিনেমার ট্রেলারে সানি লিওন আরো উত্তেজক।
......
ভাবতাছেন কি?
মহাত্মা সানী লিয়নের জীবনের উপরে এসাইন্টমেন্ট করছি! এসাইনমেন্টের অংশ বিশেষ এটা...!!
না...।। এটা মহাত্না সানী লিওনের জীবনের উপর করা কোনও এসাইনমেন্ট না, এসাইন্মেন্টের অংশ বিশেষও না। গেল ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ থেকে আজ মার্চের ৮ তারিখ পর্যন্ত, মাত্র ৩৩ দিনে কালের কণ্ঠের বিনোদন পাতায় মহাত্মা সানী লিয়নকে নিয়ে এতগুলো রিপোর্ট ছাপানো হয়।। এখানে আমি মাত্র এই ৩৩ দিনের লিস্ট দিলাম, কিন্তু 'সানী লিয়ন' লিখে তাদের পত্রিকায় সার্চ দিলে সেখানে ১০ পেজ ভর্তি সানী লিয়নের নিউজ শো করে, যেগুলো কেবলমাত্র কালের কণ্ঠের বিনোদন পাতা থেকেই শেয়ার করা হয়েছিলো গত কয়েক মাসে।
ব্যাপারটা একটু খেয়াল করলে যে কাউরই এমনটা মনে হবে, হয়তো বাংলাদেশ এবং ভারতে সানী লিয়ন থেকে সেরা আর কোনও নায়িকা/সেলিব্রিটি এখন আর বাইচা নাই। কিংবা বাংলাদেশের মানুষের চোখে বর্তমানের লিজেন্ড সেলিব্রিটি সম্ভবত একমাত্র সানী লিয়নই। যার কারনে এই মহাত্মা সানীকে নিয়ে কালের কন্ঠের সাংবাদিকদের(!) এতোটা কৌতূহল!! এতোটা ভক্তি!! প্রতিনিয়ত বাংলার সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে এই মহাত্মা লেডির পবিত্র বার্তা পৌঁছানোর জন্য এতোটা আগ্রহ তাদের...!!
আগে এক ধরনের মুরুব্বীরা বাচ্চাদের পত্রপত্রিকা পড়াটাকে ট্যারা চোখে দেখে থাকলেও, "পত্র পত্রিকা পড়লে আউট নলেজ বারে, মেধার বিকাশ ঘটে" সচেতন মুরুব্বীদের কাছ থেকে এসব কথা শুনতে শুনতে বড় হওয়ায়, বাচ্চাদেরকে এখন আর পত্রিকা পড়তে বাঁধা দেয় না কেউ সচরাচর।
যার ফলে দেখা যায়, কোনরকমে বাংলা শিখেছে এমন বাচ্চারাও দিব্যি পত্রিকা পড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পত্রিকা খুলে তারা আর কোনও পাতায় চোখ না বুলাক, বিনোদনের পাতাটাতে চোখ বুলাতে ভুলে না কেউ। আর যেখানে চোখ বুলিয়ে প্রতিদিন তারা অর্জন করছে উপরে চটি শিরোনামগুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জ্ঞান।।
কি অদ্ভুত না ব্যাপারটা!
নিজেদের সভ্য দাবী করে নিজের অজান্তে কতোটা স্বাভাবিক ভাবে নিজের ছোট ভাই/বোন, সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছি আমরা অসভ্য হবার হবার অস্ত্র...!! আসলেই অদ্ভুত!!
সবকিছুরই একটা লিমিট আছে, অতিরিক্ত কোনও কিছুই ভালো না। একটা রিপোর্ট তৈরি করার আগে প্রত্যেকটা সাংবাদিকের এই কথাটা মাথায় রাখা উচিৎ যে, তারা জাঁতির বিবেক, জাঁতির এক প্রকার পথ প্রদর্শক। জাতিকে যৌন সুড়সুড়ি দিয়ে যাবার জন্য জাতি তাঁদেরকে গণমাধ্যম বলে ডাকে না। ঘরে ঘরে পত্রিকা রাখার কারন যদি সেটাই হতো, তাইলে আর ঘরে ঘরে পত্রিকা রাখার অর্ডার দিত না কেউ। হকারের কাছে চটি বইয়ের সন্ধান করতো সবাই। তাতে অন্তত এটুকু লাভ হইত যে, চটি বইটা বাচ্চাদের থেকে লুকাইয়া রাখতে পারতো সবাই। নিজে খারাপ হলেও বাচ্চাদের উপর সেটার প্রভাব পড়তে দিত না কেউই।
সবশেষে, Kalerkantho পত্রিকার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলি, আপনারা যদি মনে করে থাকেন প্রায় প্রতিদিনই 'সানী লিয়ন', 'পুনম পান্ডেদের' নিয়ে উপরের শিরোনামগুলোর মতো রিপোর্ট প্রকাশ না করে সাধারণ জনগণকে বিনোদন দেয়া আপনাদের পক্ষে সম্ভব না। তাইলে আগামীকাল থেকে পত্রিকা ছাপানোর সময় পত্রিকার ফ্রন্ট পেজে বড় বড় করে লিখে দিবেন,
"এই পত্রিকার বিনোদনের পাতা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য, ১৭/১৮ বছরের নিচের বাচ্চাদের বিনোদনের পাতা থেকে দূরে রাখুন।।