দু'দিন আগে দেশটিভিতে একটি টকশো দেখছিলাম। মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত রেলের মহাপরিচালক ও বুয়েটের যানজট বিশেষজ্ঞ ড. সারওয়ার জাহান।
মনোযোগ দিয়ে শুনছি এই বিশেষজ্ঞরা কী কী পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেন। রেলের মহাপরিচালক সাহেব তাঁর চাকুরী রক্ষার ধারাবাহিকতায় স্বভাবিক ভাবেই এই পরিকল্পনাকে সরকারের এক মহৎ উদ্দেশ্য বলে অবিহিত করলেন। রেল বিভাগে যদি কোন কিছু যোগ হয় এটা তাঁরই সাফল্য.....
কিন্তু ড. সারওয়ার জাহান মূল পয়েন্টেই পৌছাতেই পারলেন না। জাহাঙ্গীর সাহেব সরাসরি প্রশ্ন করলেন ড. জাহানকে..... আপনি বলুন, ২০টি কমিউটার ট্রেন চালু করলে যানজট কমবে কিনা ঢাকায়? .... ড. জাহান আমতা আমতা করে বললেন, না মানে হ্যা মানে.... ইত্যাদি..... যানজট কমবে কিনা তা বলা খুবই মুশকিল। আরও অন্যান্য বিষয় দেখতে হবে.... ইত্যাদি। আসল কথাটা একবারও মুখে আনলেন না।
যিনি যানজটের মূল ব্যাপারগুলোই বুঝেন না তিনি কী করে যানজট বিশেষজ্ঞ হন? তাও আবার বুয়েটের অধ্যাপক পদে থেকে?
মূল ব্যাপারটি হচ্ছে, ঢাকা শহরের উপর দিয়ে যত বেশী ট্রেন চলাচল করবে তত বেশী যানজট বাড়বে। কারণ হচ্ছে লেভেল ক্রসিং। একটি ট্রেন চলাচল করলে ১০ মিনিট বা তারও বেশী যান চলাচল বন্ধ থাকে ঐ ক্র্রসিং-এ। এতে লম্বা লাইন সৃষ্টি হয় যানবাহনের। ট্র্যাফিক মুভমেন্ট স্বাবাবিক হতে সময় নেয়। এরই মধ্যে যদি আরেকটি ট্রেন চলে আসে তাহলে ক্রসিং আবারও বন্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং এর সলিউশন হচ্ছে ক্রসিং এর উপর ওভারপাস তৈরী করতে হবে ।
ঢাকা শহরে ১০/১২টি রেল ওভারপাস করা অত্যন্ত জরুরী। এতে হয়তো বড়জোর ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এগুলো ২০ বছর আগেই করা দরকার ছিল, যখন গাড়ির সংখ্যা কম ছিল। এখন করতে গেলে ঐস্থানে জ্যাম অনেক বাড়বে। কিন্তু এর কোন বিকণ্প নেই।
ট্রেন যেন অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন না সৃষ্টি করে সে ব্যবস্থা করেই কেবল নতুন নতুন ট্রেন চালু করা যাবে। তাহলে ট্র্যাফিক জ্যাম থেকে সবাই স্বস্তি পেতে পারেন......