থিম্পু ভুটানের পশ্চিম অংশে অবস্থিত দেশটির রাজধানী শহর। শহরটি হিমালয় পর্বতমালার একটি উঁচু উপত্যকায় অবস্থিত। অতীতে এই শহর দেশটির শীতকালীন রাজধানী ছিল। ১৯৬২ সালে শহরটিকে দেশের স্থায়ী রাজধানী করা হয়।
চারপাশটা এতটাই শান্ত, ঢাকার কোলাহল থেকে গিয়ে হঠাৎ অদ্ভুত লাগছিল। নদী, বন, পাহাড় আর পর্বত এর এই দেশে শহুরে কাঠখোট্টা ভাবটা নেই বললেই চলে। তাছাড়াও রয়েছে নয়নাভিরাম নৈসর্গিক সৌন্দর্য৷ সারা দেশটি পাহাড়ে ঘেরা৷ পাহাড়ি চু নদী যেন কটিবন্ধের মতো বেষ্টন করে রেখেছে এই সুন্দরী দেশকে৷ ভ্রমণের ফাঁকে ফাঁকে কখনও দূরে বা কখনও কাছে এসে ধরা দেবে চু নদী৷ মাত্র আট/নয় লাখ মানুষের দেশ ভূটান। তাই পুরা দেশ টাই নিরিবিলি, এক শহর থেকে আরেক শহরে যাবার পথে রাস্তা থেকে দুরের গ্রামগুলকে দেখে ঠিক যেন “ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়” বলে মনে হয়েছিল।
-------------------------------------থিম্পু শহরে ঢুকলাম আমরা।
-------------------চারিপাশে পাহাড়ে ঘেরা আমাদের হোটেলটি।
দুপুরের খাবার সেরে, কিছুক্ষণের বিশ্রাম শেষেই বেরোলাম ভূটান শহর ঘুরে দেখতে। আমাদের হোটেলের নাম সাংগ্রীলা , শহরতলীতে অবস্থিত। সাংগ্রীলা শব্দের অর্থ নাকি ড্রাগন। অনেক হোটেল বাড়ীঘর চারপাশে, একটা বাড়ী থেকে আরেকটা বাড়ী উঁচু অথবা নিচুতে। চারপাশে উঁচু পাহাড়ে ঘেরা। সকাল সাতটার আগে সূর্য্য দেখবার উপায় নেই। সুর্যোদয় দেখতে হলে পাহাড়ের মাথায় উঠতে হবে। হোটেল থেকে বেরিয়ে সারা শহরটা ঘুরে আমরা এসে থামলাম ক্লক টাওয়ার পয়েন্টে।
বেশ সুন্দর আবহাওয়া , হালকা ঠান্ডা। হেঁটে হেঁটে ঘুরে দেখলাম সে দেশের ঐতিহ্যমন্ডিত ঘরবাড়ী। কাঠের কারুকার্যে ভরা প্রতিটি বাড়ী। মানুষ গুলো দেখতে অনেক টাই তিব্বতি বা চিনাদের মত, স্বভাব অনে্ক বেশি বিনয়ী এরা। ভুটানের আরেকটা মজার ব্যপার হচ্ছে স্কুল, অফিস, মন্দিরে ট্র্যাডিশনাল পোশাক বাধ্যতামুলক। এই ব্যপারটা দেশটাকে অনেক বেশি রঙিন করেছে। স্কুল কলেজ ছুটির পরে ছাত্রছাত্রীরা ফিরছিল, দেখতে বেশ লাগছিলো। ওদের দেখেই মাথায় গেঁথে নিলাম, মেয়েদের এই পোশাক একটা কিনতেই হবে আমার!
সন্ধ্যের অনেক আগেই সূর্য্য চলে গেল পাহাড়ের আড়ালে। চায়ের তেষ্টা পেতেই চারজন গিয়ে ঢুকলাম একটা ছোট দোকানে। দোকানী তিনজনই মেয়ে। সবাই হিন্দিতেই কথা বলছে। ইন্ডিয়ান পর্যটকও আছেন অনেক। বেশীরভাগ ছেলেমেয়েরাই খাচ্ছে পানিপুরী। আমি লাল চা খেয়ে বেরিয়ে এলাম। আরো কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে ফিরে এলাম হোটেলে।----------
আশেপাশে অনেক বাড়িতেই এভাবে মরিচ রোদে দেয়া আছে। আমাদের হোস্ট উগানের কাছে জানলাম 'এমাদাতশা' এদের জাতিয় খাবার। আর এর প্রধান উপকরণই হলো লাল মরিচ। সাথে পনির দিয়ে রান্না করা হয়।
--------- শহরের দিকে যেতেই চোখে পড়বে Tashichho Dzong । এটি একটি দুর্গ ও মনাস্ট্রি!
-------------------------------------------চলে এলাম থিম্পু শহরে।
------------------------------------------------এটাই ক্লক টাওয়ার।
নির্দিষ্ট পার্কিং-এ গাড়ী রেখে ঘুরতে বেরোলাম আমরা। আমাদের চার জনের জন্য এই ছোট গাড়ীটা।
-------------------------ক্লক টাওয়ারে এক সময় সাঁঝবাতি জ্বলে উঠলো।
নির্মল বাতাসে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিয়ে আরো কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে হোটেলে ফিরে এলাম আমরা।
আমার ভুটান বেড়ানোর আরো পোষ্টের লিংক এখানেঃ
পাইন বনের দেশে ---------------!!
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে--------- ভুটান ভ্রমণ - (১)
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ