ঝুমকোলতা ফুল দেখতে ভারি সুন্দর। লতানো গাছ চিরসবুজ। ঘন সবুজ পাতায় ভরা এই ঝুমকোলতা। ঝুমকোলতার বৈজ্ঞানিক নাম: Passiflora Incarnata।
প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এ গাছেরপাতা দেখতে হাতের তালুর মতো। পাতায় তিনটি খাঁজ আছে এবং প্রতিটি অংশ দেখতে আঙ্গুলের মতো। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। পাতার কক্ষ থেকে লতা বের হয়। ফুল একক, সুগন্ধযুক্ত। হালকা বেগুনি রঙের পাপড়ি বাইরের দিকে সজ্জিত থাকে। এ গাছের ঔষধিগুণ আছে যা বিভিন্ন প্রকার রোগ-প্রতিরোধ ও নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে থাকে।
দেখতে কানের ঝুমকার মতো বলেই হয়তো এ ফুলের পরিচিতি ঝুমকোলতা। আবার স্থানীয়ভাবে এর পরিচিতি রাধিকা নাচোন নামেও। অসম্ভব দৃষ্টিনন্দন এই ঝুমকোলতা ফুল। হালকা বেগুনি রঙের আভায় ফোটা ঝুমকোলতা সত্যি বাহারী এক ফুল। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ঝুমকোলতা ফুল ফোটে। এখন বিভিন্ন রঙের ঝুমকোলতা দেখা যায়। আমার দুই রঙের ঝুমকোলতা আছে।
ঝুমকোলতা বা প্যাশন ফ্লাওয়ার ফুলটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা, মেক্সিকো, ক্যারাবিয়ান, সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায় জন্মে। দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া এবং হাওয়াইয়ের মতো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলেও জন্মে ঝুমকোলতা। তবে আমাদের দেশে এর বিস্তার লাভের সঠিক তথ্য জানা নেই।
ফুল ফোটে গ্রীষ্মের শেষভাগে, থাকে বর্ষাকালজুড়ে। এ জন্য বর্ষার ফুল হিসেবেই এর পরিচিত। ঝুমকোলতা ফুলটি একক। লতানো গাছে, প্রতিটি পাতার সংযোগস্থলে একটি একটি করে ফুল ফোটে। শুকনো জায়গায় টিকে থাকতে পারলেও ভেজা জায়গা মূলত ঝুমকো লতার জন্য উপযোগী। মিষ্টি ফুল ঝুমকোলতা। তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন প্রকৃতি প্রেমী কবিরাও। তাই সাহিত্যেও ঝুমকোলতা ফুলের মোহন রূপের কথা উঠে এসেছে।
রবীন্দ্রনাথের কবিতায়ঃ----
"হঠাৎ কিসের মন্ত্র এসে
ভুলিয়ে দিলে এক নিমেষে
বাদল বেলার কথা,
হারিয়ে পাওয়া আলোটিরে
নাচায় ডালে ফিরে ফিরে
ঝুমকো ফুলের লতা।"
ফররুখ আহমদের ছড়ায়ঃ ----
"ঝুমকো লতা কানের দুল,
উঠল ফুটে বনের ফুল।
সবুজ পাতার ঘোমটা খুলে,
ঝুমকো লতা হাওয়ায় দোলে।"
***তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ