somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাপের কামড়ে কেন মানুষ মারা যায়?

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সরিসৃপ এই প্রাণীটিকে দেখলে আমাদের সবারই ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে। এই প্রাণীকে পছন্দ করে এমন মানুষ তাই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু ৭০ শতাংশ সাপের বিষ নেই (Ripley’s believe it or not-2010) আবার বিষধর সাপেরা যে সব সময় বিষ ঢালে তাও কিন্তু না। বিষ সাপের এক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিজেকে নিরাপদ রাখার এক প্রাকৃতিক সুরক্ষা। ইনল্যন্ড, তাইপান সহ আরো কিছু প্রজাতর সাপের বিষ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া সারা জীবন ধরে চলে তাই এরা কামড়ে বিষ ঢালতে কোনো কার্পণ্য দেখায় না কিন্তু যাদের এই সুবিধা নেই তারা কিন্তু যথেষ্ট হিসাব করেই বিষ ঢালে আবার অনেক সময় শুধু ভয় দেখানোর জন্যই কামড় দেয়।

তবে দুঃখের বিষয় হলো আমি সাপকে যতই ভালো প্রাণী হিসাবে উপস্থাপনের চেষ্ট করি না কেন এদের বিষ আসলেই মারাত্মক। দেখা গেছে র‍্যার্টেলস্নেক মাত্র ৫০% বিষ ঢালে এক কামড়ে, এই ৫০% বিষই মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট যদি না কয়েক মিনিটের (৩ মিনিট) ভিতর সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হয়। এদিক থেকে অবশ্য আমাদের দেশের (কোবরা ছাড়া) যথেষ্ট ভালো। তারা আপনাকে বাঁচার ভাল সুযোগ দেয় (৮-১০ মিনিট) . রেপটাইল গণের এই প্রাণীদের জ্বিহ্বার নিজে কিংবা চোয়ালের দুই পাশে একজোড়া রূপান্তরিত প্যারোটিড গ্রন্থি থাকে যাদের কাজ হলো বিষ উৎপন্ন ও সংরক্ষণ করা। এই বিষ মূলত একধরনের রূপান্তরিত লালা। এই গ্রন্থি থেকে অতি সূহ্ম নালী তাদের বিষ দাঁতে প্রবেশ করে। বিষধর সাপের দাঁত অনেকটা ইনজেকসন সিরিঞ্জ এর মত যা দিয়ে তারা বিষ ঢেলে দেয়। পুরো প্রক্রিয়াটা বলতে বা পড়তে যত সময় লাগলে তার হাজার ভাগ কম সময়ে সাপ বিষ ঢালে। প্রায় ২০ মিলি সেকেন্ডে এই প্রক্রিয়াটি হয়ে থাকে।

কিন্তু কেন সাপের বিষে মানুষ মারা যায়? প্রথমেই আসা যাক সাপের বিষ কী? প্রোটিন এনজাইম আর কিছু রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা তৈরী এক জটিল যৌগ যার ৯৫ শতাংশই প্রোটিন (ম্যান ভার্সেস ওয়াইন্ডের মত প্রোটিন পাইলেই খুশি হওয়ার কিছু নাই!). এই প্রোটিন আমাদের দেহে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করলেও একে সাহায্য করে বিভিন্ন এনজাইম যে যৌগ প্রকৃতি ও মাত্রা অনুসারে আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

কাজের ধরন অনুসারে সাপের বিষ ৩ ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরী করে -
১) হিমোটক্সিন- এই ধরনের বিষধারী সাপেরা তাদের বিষের সব ঝড় ঝাপটা রক্তের উপর দিয়ে পাঠায়। এই ধরনের বিষধারী সাপের বিষ শরীলে প্রবেশ করার পর এরা লোহিত রক্ত কণিনাকে ভেঙ্গে (হিমোলাইসিস) ফেলে এতে রক্তের অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। আবার কিছু সাপের বিষ হিমোলাইসিসের যন্ত্রণায় না তারা রক্ত জমাট বাধিয়ে ফেলে। অনেক সাপের বিষে phosphodiesterase নামক এনজাইম থাকে যা রক্ত চাপ কমিয়ে দেয়।
২) নিউরোটক্সিন- এই বিষ মানবদেহে খুব দ্রুত কাজ করে। এরা মূহুর্তের ভিতর রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে স্নায়ুকলা আক্রমণ করে। এতে কিছু সময়ের ভিতর মানুষ পেশী, শ্বসন তন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
৩) কার্ডিওটক্সিন- এই বিষ মানুষের হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। রক্ত পরিবহন ব্যবস্থাকে বাঁধা দেয়।
যেভাবেই কাজ করুক না কেন সাথে সাথে সঠিক প্রাথমিক ব্যবস্থা না নিলে যমকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।


সূত্র: জিরো টু ইনফিনিটি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯
৪১০ বার পঠিত
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঘ আর কুকুরের গল্প......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩২

বাঘ আর কুকুর দুটোই হিংস্র এবং সাহসী প্রাণী। বাঘ, কুকুর যতই হিস্র হোক মানুষের কাছে ওরা নেহায়েতই পোষ মেনে যায়। আমাদের সমাজে, রাজনীতিতে অনেক নেতাদের 'বাঘের বাচ্চা' বলে বিরাটত্ব জাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমরা উকিলরা কেউ চিন্ময়ের পক্ষে দাঁড়াবো না , না এবং না

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২




সাবাস বাংলাদেশের উকিল । ...বাকিটুকু পড়ুন

আগরতলায় হাইকমিশনে হামলা কাকতালীয় না কি পরিকল্পিত?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২

গতকাল (২ ডিসেম্বর) ভোরে আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভের পর ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করে। বিভিন্ন তথ্যে চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত যে বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের সাথে যুদ্ধ করে ভারত লাভবান হবে বলে মনে করি না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০



আমাদের দেশে অনেক মুসলিম থাকে আর ভারতে থাকে অনেক হিন্দু। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলিম যুদ্ধে মুসলিমদের সাফল্য হতাশা জনক নয়। সেজন্য মুসলিমরা ভারতীয় উপমহাদেশ সাড়ে সাতশত বছর শাসন করেছে।মুসলিমরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূস গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড - শেখ হাসিনা।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৬


৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পলায়নের পর বাংলাদেশের ক্ষমতা গ্রহণ করা নতুন সরকার কে বিপদে ফেলতে একের পর এক রেকর্ড ফোন কল ফাঁস করতে থাকেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×